জুলে রিমে
একেবারে শুরুতে কাপের নাম রাখা হয় ‘ভিক্টোরি’। পরে জুলে রিমের নামে ফিফার সাবেক প্রেসিডেন্ট নামকরণ করা হয়। প্রথম ট্রফিটির নকশা করেন ফরাসি ভাস্কর আবেল লেফলয়োর । ওটা গ্রিক পুরাণের বিজয়ের দেবী নাইকির আদলে বানানো হয় । ট্রফিতে দেবীকে একটি দশ কোনাবিশিষ্ট কাপ হাতে দেখা যায়। কাপটির ওজন ছিল ৩.৮ কেজি সোনায় মোড়ানো রুপা দিয়ে তৈরি । ট্রফিটি লাপিস লাযুলির নামের একটি মূল্যবান নীল পাথরের ভিতের ওপর দাঁড় করানো ছিল। তাই এটিকে ‘সোনালি দেবী’ নামেও ডাকা হতো।
১৯৩৮ সালে প্রথম উরুগুয়ে জুলে রিমে জেতে । কাপটির নিচের দিকের সোনালি ফলকের চারপাশে ১৯৩০ থেকে ১৯৭০ পর্যন্ত বিশ্বকাপজয়ী দেশগুলোর নাম খোদাই করা আছে। দেশগুলো হলো—উরুগুয়ে (১৯৩০, ১৯৫০), ইতালি (১৯৩৪, ১৯৩৮), জার্মানি (১৯৫৪), ইংল্যান্ড (১৯৬৬) ও ব্রাজিল (১৯৫৮, ১৯৬২, ১৯৭০)। তৃতীয় বিশ্বকাপ মেক্সিকোতে জেতে ব্রাজিল ১৯৭০ সালের জুনে । ওই সময় ফিফার নিয়মানুসারে জুলে রিমে ট্রফিটা আজীবনের জন্য নিজেদের করে নেয় তারা। এরপর ব্রাজিলের সংগ্রহশালা থেকে ১৯৮৩ সালে কাপটি চুরি হয় ।
নতুন ট্রফি
১৯৭০ সালে ফিফা নতুন ট্রফি বানানোর উদ্যোগ নেয় । ১৯৭১ সালে ৫৩টি নকশা জমা দেন সাত দেশের ভাস্কররা । ট্রফির বর্তমান নকশাকার কারিগর সিলিভও গাজ্জানিগা জমা দিয়েছিলেন দুটি ডিজাইন। প্রথম ডিজাইনটিই মনঃপূত হয় ফিফার। ট্রফির নাম দেওয়া হয় ফিফা বিশ্বকাপ ট্রফি। ইতালির স্টাবেলিমেন্টো আর্টিসটিকো বেরতনি কম্পানি এটি তৈরি করে। ১৯৭৪ সালে উন্মুক্ত করা হয় ট্রফিটি। নতুন ট্রফিটি ছিল তুলনামূলকভাবে ভারী। ওতে পাঁচ কেজি ওজনের ১৮ ক্যারেট স্বর্ণ আছে । ওজন ৬.১ কেজি এবং উচ্চতা ৩৬.৮ সেন্টিমিটার। ট্রফির বেইসমেন্টের ব্যাস ১৩ সেন্টিমিটার। যা দুই স্তরের ম্যালাসাইট (অলংকারে ব্যবহৃত সবুজ পাথর) দ্বারা আবৃত। এটি দুই স্তর সবুজ ফুটবল মাঠের প্রতীক। ওপরের দিকে দুটি মানুষের অবয়ব দেখা যায়। যারা গোলাকার পৃথিবীকে ধরে রেখেছে। বর্তমান ট্রফির মেয়াদ ২০৩৮ বিশ্বকাপ পর্যন্ত। কারণ বেদিতে ১৭ চ্যাম্পিয়নের নাম লেখার জায়গা রয়েছে। নতুন কাপ নেওয়া দলগুলো হলো—জার্মানি (১৯৭৪, ১৯৯০, ২০১৪), আর্জেন্টিনা (১৯৭৮, ১৯৮৬), ইতালি (১৯৮২, ২০০৬), ব্রাজিল (১৯৯৪, ২০০২), ফ্রান্স ১৯৯৮, স্পেন ২০১০।