পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় স্বামীকে বেঁধে মারধর করে এক গৃহবধুকে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। সোমবার রাত উপজেলার ধলাসার ইউনিয়নের পশ্চিম চাপলী গ্রামে ঘটনাটি ঘটেছে।
জানা যায়, স্বামী মো. সিদ্দিককে মারধরের পর বখাটে চক্র ওই গৃহবধুকে (৩০) রাত নয়টা থেকে প্রায় দুই ঘন্টা আটকে গণধর্ষণ শেষে অন্য এলাকার মেম্বার আনোয়ার ফকিরের বাড়িতে রেখে যায়। ওই রাতেই মো. সিদ্দিককে এবং মঙ্গলবার সকালে স্ত্রীকে কলাপাড়া হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
মঙ্গলবার দুপুরে মনো কাউন্সিল শেষে গৃহবধুকে ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেল এর প্রোগ্রাম অফিসার মো. ইদ্রিস আলম মহিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কাছে আইনি সহায়তার জন্য পাঠিয়েছেন। আর স্বামী সিদ্দিক কলাপাড়া হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
নির্যাতনের শিকার গৃহবধু জানায়, রাত সাড়ে সাতটা থেকে সাড়ে আটটার পর তার খালা শাশুড়ির বাসায় অতর্কিত ভাবে একদল যুবক প্রবেশ করে। এ সময় সে এ বাসায় কেন এসেছে জানতে চায়। গৃহবধু তার স্বামীর সাথে এসেছে জানালে যুবকরা তার বিয়ের কাবিন দেখতে চায়। খবর পেয়ে তার স্বামী কাবিনের কাগজ নিয়ে আসলেও এ বিয়ে মিথ্যা দাবি করে তাকে হাত-পা বেঁধে বেধড়ক মারধর শুরু করে।
এ সময় পরিবারের লোকজন বাঁচাতে এলে তাদেরও মারধর করে। স্বামীকে মারধর শেষে যুবকরা পালাক্রমে প্রথমে ঘরের মধ্যে পরে পাশ্ববর্তী মাছের ঘেরে নিয়ে তাকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। পরে সে অসুস্থ্য হয়ে পড়লে রাত ১২টার দিকে পাশ্ববর্তী গ্রামের ইউপি সদস্য আনোয়ার ফকিরের বাসায় গৃহবধুকে রেখে আসে।
ইউপি সদস্য আনোয়ার ফকির জানান, সোমবার রাতে জনৈক মামুন তাকে ফোন করে জানান যে এক মহিলাকে তার বাসায় পাঠানো হচ্ছে। রাত সাড়ে ১১টার পর ওই মহিলা তার বাসায় আসেন। তার কাছে তখন ধর্ষণের কথা বলেন নি বলে জানান। কে তার বাসায় তাকে দিয়ে গেছে তা জানেন না।
কলাপাড়া হাসপাতালের ওসিসির প্রোগ্রাম অফিসার মো. ইদ্রিস আলম জানান, ভিকটিম নির্যাতনের স্বীকার হয়ে তাদের কাছে আইনী সহায়তার জন্য এসেছেন। প্রাথমিকভাবে চিকিৎসা ও মনো কাউন্সিলিং করে ভিকটিমকে আইনী সহায়তা প্রদানের জন্য মহিপুর থানায় লিখিতভাবে জানানো হয়েছে।
কলাপাড়া হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. রেফায়েত হোসাইন জানান, কলাপাড়া হাসপাতালে গাইনী চিকিৎসক না থাকায় হাসপাতালে ভিকটিমের পরীক্ষা সম্ভব না। বিষয়টি মহিপুর থানার ওসিকে জানানো হয়েছে এবং পটুয়াখালী সদর হাসপাতালে ডাক্তারী পরীক্ষার জন্য বলা হয়েছে।
মহিপুর থানার ওসি মো. সাইদুল ইসলাম জানান, থানায় আইনী সহায়তা চাইলে ভিকটিমের ডাক্তারী পরীক্ষা শেষে এ ব্যাপারে তাকে সহায়তা প্রদান করা হবে।