শ্রীলঙ্কার রাজধানী কলম্বোসহ দেশটির অন্তত ছয়টি স্থানে তিনটি গির্জা ও তিনটি হোটেলে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় অন্তত ১৩৮ জন নিহত ও ৫০০ শ’র অধিক মানুষ আহত হয়েছেন। খ্রীস্টান ধর্মালম্বীদের ইস্টার সানডে চলাকালে এ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।
শ্রীলঙ্কার জাতীয় হাসপাতালের পরিচালক অনিল জয়সিংহে জানান, ছয়টি বিস্ফোরণের ঘটনায় ১৩৮ জন নিহত হয়েছেন। রাজধানী কলম্বোতে ৪৯, রাজধানীর অদূরে অবস্থিত নিগোম্বোতে ৬২ এবং পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ বাট্টিকোলাতে ২৭ জন নিহত হয়েছেন।
বিবিসি, রয়টার্স, সিএনএন ও এএফপির প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, রোববার সাকল পৌনে নয়টার দিকে হওয়া এই বিস্ফোরণের ঘটনায় আহত তিন শতাধিক মানুষকে কলম্বোসহ বেশ কিছু হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়বে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি সূত্রের বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, স্থানীয় সময় সকাল পৌনে নয়টার এই ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৩৮ জন নিহত ও আরও ৫০০ শ’র অধিক আহত হয়েছেন।
বিবিসির প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, শ্রীলঙ্কার ওই বিস্ফোরণের ঘটনায় অন্তত ১০০ জন নিহত ও আরও চার শতাধিক আহত হয়েছে। বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, হোটেল ও গির্জাসহ ছয়টি বিস্ফোরণের ঘটনায় তিন শতাধিক মানুষ আহত মানুষকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স কলম্বোর ন্যাশনাল হাসপাতালের পরিচালকের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, রোববার সকালের এ বিস্ফোরণের ঘটনায় অন্তত অর্ধশতাধিক নিহত এবং ৪০০ শ’র অধিক আহত হয়েছেন।
যে তিনটি গির্জায় বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে সেগুলো কোচকিকাদে, কাতুয়াপিটিয়া ও বাট্টিকালোয়া নামক স্থানে অবস্থিত। এসব গির্জায় ইস্টার সানডে উপলক্ষে অনুষ্ঠান চলছিল।
তাছাড়া রাজধানীর সাংগ্রি লা, দ্য কিন্নামোন এবং কিংসবারি নামক আরও তিনটি হোটেলে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। হোটেল তিনটি রাজধানী কলম্বোর কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত ছবি থেকে দেখা যাচ্ছে, কাতুয়াপিটিয়াতে অবস্থিত সেন্ট সেবাস্তিয়ান নামক গির্জার ছাদ ধসে পড়েছে এবং গির্জার মূল স্থানে ছোপ ছোপ রক্তের দাগ লেগে আছে। স্থানীয় গণমাধ্যম বলছে, নিহতদের মধ্যে বিদেশী পর্যটকও আছেন।
পুলিশ বলছে, যে তিনটি গির্জায় বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে তার একটি কলম্বোতে অপর আরেকটি রাজধানীর অদূরের নিগোম্বোতে। তবে তৃতীয় যে গির্জায় বিস্ফোরণ হয়েছে সেটি শ্রীলঙ্কার পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশে বাটিকোলোতে। বিস্ফোরণের প্রকৃতি সম্পর্কে এখনো নিশ্চিত করে কিছু বলা যাচ্ছে না।
হার্শা ডি সিলভা নামের শ্রীলঙ্কার এক সংসদ সদস্য (এমপি) জানান, তিনি একটি হোটেল গিয়ে মর্মান্তিক দৃশ্য দেখেছেন। তিনি বলেন, ‘আমি দেখেছি শরীরের বিচ্ছিন্ন অংশ চারপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। জরুররি সেবাদানকারী বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌছেছেন।’
শ্রীলঙ্কা মূলত বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদেরই দেশ। দেশটিতে খ্রিস্টান ধর্মালম্বীদের সংখ্যা মাত্র ছয় শতাংশ। ইস্টার সানডের প্রার্থনার কারণে গির্জাগুলোতে বেশ ভিড় ছিল। পুলিশ বলছে, হামলার জন্য এমন সময়কেই বেছে নিয়েছেন জঙ্গিরা।