শ্রীলঙ্কার রাজধানী কলম্বোর তিনটি গির্জা এবং হোটেলে ভয়াবহ সিরিজ বোমা হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২৯০তে গিয়ে দাঁড়িয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছে আরো ৫ শতাধিক মানুষ। হতাহতদের মধ্যে বেশ কিছু সংখ্যক বিদেশি রয়েছে বলেও জানা গেছে। শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট মাইত্রিপালা সিরিসেনা এ ঘটনায় শোক জানিয়েছেন। একই সঙ্গে এ বিষয়ে সবাইকে ধৈর্য্য ধরার আহ্বান জানিয়েছেন।
ওই সিরিজ হামলার পর দেশ জুড়ে কারফিউ জারি করা হয়েছে। এছাড়া হামলা সংক্রান্ত ‘মিথ্যা তথ্য’ ছড়ানো রুখতে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে সামাজিক মাধ্যমগুলোও।
তাৎক্ষণিকভাবে কোনো গোষ্ঠী এ হামলার দায় স্বীকার করেনি। তবে এসব হামলার সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার সন্দেহে ২৪ জনকে আটক করেছে পুলিশ। হামলার সঙ্গে বিদেশি কোনো সূত্রের যোগাযোগ আছে কিনা সেটিও খতিয়ে দেখছে তদন্তকারী দলগুলো।
শ্রীলঙ্কায় দীর্ঘ এক দশক ধরে চলা ভয়াবহ গৃহযুদ্ধের পর এটাই সবচেয়ে বড় হামলার ঘটনা। ওই গৃহযুদ্ধে দেশটিতে এক লাখের বেশি মানুষ মারা গিয়েছিলো। একই সঙ্গে শ্রীলঙ্কার খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের বিরুদ্ধেও এটিই সবচেয়ে বড় হামলা। দেশটির খ্রিস্টান সম্প্রদায় এর আগেও বেশ কিছু হামলার শিকার হয়েছে। তবে সেসব হামলায় এত বেশি হতাহতের ঘটন ঘটেনি।
খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম বড় ধর্মীয় উৎসব ইস্টার সানডের দিনে স্থানীয় সময় সকাল পৌনে ৯টা নাগাদ বিস্ফোরণ শুরু হয়। প্রায় দু ঘণ্টা ধরে একে এক আটটি বোমা বিস্ফোরিত হয়। এদের মধ্যে কমপক্ষে দুটি ছিলো আত্মঘাতী বোমা হামলা।
রাজধানীর কলম্বোর তিনটি জনপ্রিয় হোটেলে হামলা হয়। এছাড়া রাজধানীর বাইরে তিনটি শহরের তিনটি প্রধান গির্জায় বোমা হামলার ঘটনা ঘটেছে। যে তিনটি গির্জায় বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে সেগুলো কোচকিকাদে, কাতুয়াপিটিয়া ও বাট্টিকালোয়া নামক স্থানে অবস্থিত। এসব গির্জায় ইস্টার সানডে উপলক্ষে অনুষ্ঠান চলছিল।
তাছাড়া রাজধানীর সাংগ্রি লা, দ্য কিন্নামোন এবং কিংসবারি নামক আরও তিনটি হোটেলে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। হোটেল তিনটি রাজধানী কলম্বোর কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত। এরপর আরো দুটি স্থানে বোমা হামলার ঘটনা ঘটে। হামলাগুলোর অধিকাংশই ছিল আত্মঘাতী।
কলম্বোর কোচিচিকাদের সেন্ট অ্যান্থনি চার্চে প্রথম বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। দ্বিতীয় হামলাটি ঘটে কুতুয়াপিটায়ে-এর সেন্ট সিবাস্তিয়ান চার্চে। সেন্ট সেবাস্টিয়ান চার্চ কর্তৃপক্ষ হামলার পরের কয়েকটি ছবি প্রকাশ করেছে। তাতে দেখা যায়, চার্চের ভেতর বোমা বিস্ফোরণে বিধ্বস্ত হয়ে গেছে ও মেঝেতে রক্তের দাগ লেগে আছে।
আর তৃতীয় বিস্ফোরণটি ঘটে নেগোম্বো শহরের বাত্তিকালোয়া চার্চে। এছাড়া কলম্বোর তিনটি পাঁচ তারকা হোটেলেও বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। সূত্র: এনডিটিভি