পৃথিবীর বহু মানুষের স্বপ্নের দেশ আমেরিকা। কিন্তু ডোনাল্ড ট্রাম্প দেশটির প্রেসিডেন্ট হবার পর সেই স্বপ্ন পূরণ কঠিন হয়ে পড়েছে।
তবে এ পরিস্থিতির মধ্যেও আমেরিকায় যাওয়ার কয়েকটি সহজ উপায় রয়েছে। ট্রাম্প প্রশাসন অভিবাসন নীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন আনলেও এখনো চাকুরি, পরিবার ও শিক্ষা ক্ষেত্রে ভিসা পাওয়ার সহজ উপায় রয়েছে।
আমেরিকায় ভিসা পাওয়ার বেশ কয়েকটি ক্যাটাগরি রয়েছে। যার মধ্যে অন্যতম সহজ উপায় হচ্ছে ‘ইমপ্লয়মেন্ট-বেজড' (ইবি) সিরিজ। যারা আমেরিকায় স্থায়ীভাবে চাকুরির ভিসা পেতে আগ্রহী তারা ইবি সিরিজের ১ থেকে ৫ পর্যন্ত ক্যাটাগরিগুলোতে আবেদন করতে পারবেন।
ইবি-১: ইবি-১ এর মধ্যে কয়েকটি বিষয়কে প্রাধান্য দেয়া হয়। যেমন, কোনো বিষয়ে অসাধারণ দক্ষতা ও বিশেষ কোনো ক্ষেত্রে দক্ষতা। এছাড়া গবেষণাক্ষেত্রে ভাল দক্ষতা থাকলে গবেষণা প্রতিষ্ঠানের চাকুরির জন্য ভিসা পাওয়া যায়। তবে এসব ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট প্রমাণপত্র প্রয়োজন হয়।
ইবি-২: কোনো ব্যক্তির যদি কোনো ব্যতিক্রমী দক্ষতা বা উচ্চতর শিক্ষা থাকে তাহলে তিনি স্থায়ী চাকুরির জন্য আবেদন করতে পারেন। তবে এক্ষেত্রে তাকে আমেরিকার কোনো প্রতিষ্ঠান থেকে দক্ষতার ভিত্তিতে চাকুরির অফার লেটার থাকতে হবে।
ইবি-৩: এই ক্যাটাগরিতে দক্ষ কর্মী বা দক্ষ প্রফেশনাল ব্যক্তিরা আমেরিকায় ভিসা পেতে পারে। তবে দক্ষতার বিষয়ে আমেরিকার কোনো প্রতিষ্ঠান থেকে চাকুরির অফার লেটার থাকতে হবে। এক্ষেত্রে ওই বিষয়ে আমেরিকায় কর্মী পাওয়া সহজ কিনা বিষয়টি যাচাই করা হবে। আমেরিকায় ওই বিষয়ে দক্ষ জনবল থাকলে আপনি ভিসা পাবেন না।
ইবি-৪: বিশেষ অভিবাসীদের ভিসা দেয় আমিরকা। দেশটির ‘ইমিগ্রেশন এন্ড ন্যাশনালিটি অ্যাক্ট (আইএনএ) উল্লেখিত বিষয়গুলোতেই অভিবাসীরা স্থায়ীভাবে চাকুরির ভিসা পেয়ে থাকে। এর মধ্যে রয়েছে ন্যাটোর সাবেক কর্মী বা ন্যাটোর সাবেক কর্মীর স্পাউস, ডাক্তার, স্বশস্ত্র বাহিনীর সদস্য, ইরাক ও আফগানিস্তানের ভাষা জানেন এবং ইংরেজি অনুবাদ করতে পারেন এমন ব্যক্তি, ধর্মী ব্যক্তিত্ব বা কর্মী অন্যতম। এক্ষেত্রে কোনো চাকুরির অফার লেটার দরকার হয় না।
ইবি-৫: আপনার যদি আমেরিকা গিয়ে উদ্যোক্তা হবার মতো অর্থ থাকে তাহলে ভিসা পেতে পারেন। তবে এই ক্যাটাগিরতে আপনি ভিসা পেতে হলে আপনাকে আমেরিকা গিয়ে ব্যবসা শুরু করতে হবে এবং কমপক্ষে ১০জন আমেরিকানকে চাকুরি দেয়ার সামার্থ্য থাকতে হবে। ইবি-৫ ক্যাটাগরিতে ভিসা পেতে কমপক্ষে ৫ লাখ ডলার বা বাংলাদেশি টাকায় ৪ কোটি টাকার বেশি বিনিয়োগ করতে হবে।
তবে উপরের ৫টি ক্যাটাগরিতে আপনার ভিসা পাওয়ার সুযোগ না থাকলেও আরো কয়েকটি সুযোগ আপনার জন্য রয়েছে। সেগুলো হচ্ছে;
কর্মসংস্থানভিত্তিক কাজের প্রস্তাব: আমেরিকার কোনো প্রতিষ্ঠান আপনাকে সেখানে কাজের সুযোগ দিয়ে যদি অফার লেটার পাঠান তাহলে আপনি ভিসা পেতে পারেন।
এক্ষেত্রে ওই প্রতিষ্ঠানকে অফার লেটার দেয়ার আগে দেশটির ‘ডিপার্টমেন্ট অব লেবার’ (ডিওএল) থেকে সার্টিফিকেট নিতে হবে এবং অভিবাসী শ্রমিক নিয়োগের অনুমতি চেয়ে আবেদন করতে হবে। এই ক্যাটাগরিতে আমেরিকা প্রতি বছর ১ লাখ ৪০ হাজার ভিসা দিয়ে থাকে।
পরিবার বা স্পাউস: আমেরিকায় যদি আপনার পরিবার বা আইনগতভাবে বৈধ সঙ্গীর নাগরিকত্ব থাকে তাহলে আপনি সহজেই ভিসা পেতে পারেন। আমেরিকার যেকোনো নাগরিক তার সঙ্গী বা পরিবারের সদস্যকে সেখানে নেয়ার জন্য সরকারের কাছে আবেদন করতে পারেন।
আমেরিকান কোনো নাগরিকের সঙ্গে আপনার বাগদান হলেও আপনি সেখানে যাওয়ার অনুমতি পেতে পারেন। তবে বাগদান বৈধভাবে হতে হবে এবং বাগদানের পর অন্তত দুই বছর পার হতে হবে। এরপর আপনার যার সঙ্গে বাগদান হয়েছে তিনি আপনাকে আমেরিকা নেয়ার জন্য আবেদন করতে পারবেন। এক্ষেত্রে প্রথমবার আপনি কমপক্ষে ৯০ দিনের ভিসা পাবেন।
পড়াশোনা: পড়াশোনার জন্য আপনি আমেরিকার ভিসা পেতে পারেন। এই প্রক্রিয়ায় আপনি আমেরিকার থাকার স্থায়ী অনুমিত পাবেন না। তবে পড়াশোনার সময়ে আপনি আপনার সঙ্গে সম্পর্কিত কোনো প্রতিষ্ঠানের চাকুরির প্রস্তাব পেলে ফিরে এসে আবার যেতে পারেন।