জায়ান চৌধুরী। মাত্র আট বছর বয়স। মা-বাবার আদরের সন্তান। সে আর খেলবে না তার প্রিয় ক্রিকেট। যাবে না উত্তরার সানবিম স্কুলে। শ্রীলঙ্কায় ভ্রমণে গিয়ে নিথর হয়েছে তার দেহ।
জায়ানকে হারিয়ে কাঁদছে তার মা-বাবা, আত্মীয়-স্বজনসহ পুরো বাংলাদেশ। কি দোষ ছিল জায়ানসহ ওই হামলায় নিহত তিনশরও বেশি মানুষের? এ প্রশ্ন এখন ঘুরপাক খাচ্ছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ সর্বত্র।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম এমপির নাতি এই জায়ান চৌধুরী। তার নিথর দেহ দেশে আসবে আগামীকাল বুধবার। তাকে ঘুম পাড়ানো হবে অনন্তকালের জন্য কালই। এ জন্য সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।
জায়ানের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, বুধবার বেলা ১টা ১০ মিনিটে শ্রীলঙ্কা থেকে বিমানযোগে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছবে তার মরদেহ। সেখান থেকে বনানীতে নানার তথা শেখ সেলিমের বাসভবনে নিয়ে যাওয়া হবে তাকে। বাদ আসর বনানীর চেয়ারম্যানবাড়ি মাঠে তার নামাজে জানাজা হবে। দাফন করা হবে বনানী কবরস্থানে।
জায়ানকে চিরঘুম পাড়ানোর প্রস্তুতি
জায়ান চৌধুরীর জানাজা উপলক্ষে বনানীর চেয়ারম্যানবাড়ি মাঠে বিশাল সামিয়ানা টানানো হয়েছে। জোরদার করা হয়েছে নিরাপত্তা ব্যবস্থাও। মাঠের আশপাশে পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। কারণ, জানাজায় অংশগ্রহণের জন্য অনেক মন্ত্রী, এমপি, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা ছাড়াও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, সমাজসেবক ও বিভিন্ন পেশাজীবী নেতা এবং সাধারণ মানুষ আসবেন।
বনানীর ২/এ’র ৯ নম্বর বাসা এবং এর আশপাশের রাস্তায় লোকজনের ভিড়ও বেড়ে যাবে। তাই মানুষ বসার জন্য পর্যাপ্ত চেয়ারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বনানীর কবরস্থানে কবরের জায়গাও নির্ধারণ করা হয়েছে।
অপরদিকে দুদিন ধরে অনেক মন্ত্রী, এমপি ও দলীয় নেতা বনানীর বাসায় যাচ্ছেন এবং শেখ সেলিমসহ তার পরিবার-পরিজনের সদস্যদের সান্ত্বনা দিচ্ছেন।
উল্লেখ্য, রোববার (২১ এপ্রিল) শ্রীলঙ্কায় ভয়াবহ বোমা হামলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ফুফাতো ভাই শেখ সেলিমের মেয়ে জামাই মশিউল হক চৌধুরী গুরুতর আহত হন। নিহত হয় তার নাতি জায়ান চৌধুরী। উত্তরায় সানবিম স্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র ছিল জায়ান। শ্রীলঙ্কার ওইদিনের সিরিজ বোমা হামলায় এখন পর্যন্ত ৩২১ জন নিহত হয়েছেন। এর দায় স্বীকার করেছে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট (আইএস)। ওই হামলায় আহত হন অন্তত পাঁচ শতাধিক মানুষ। সেদিনের সকালে শ্রীলঙ্কার তিনটি গির্জা, তিনটি বিলাসবহুল হোটেল ও দুটি স্থাপনায় সংঘবদ্ধ বোমা হামলা চালানো হয়। নিহতদের মধ্যে অন্তত ৩৮ জন বিদেশি নাগরিক।