শ্রীলঙ্কায় ইস্টার সানডের দিনে ভয়াবহ সিরিজ বোমা হামলার কয়েক ঘণ্টা আগেই শ্রীলঙ্কাকে সতর্ক করেছিল ভারতীয় গোয়েন্দা বাহিনী। গতকাল (২৩ এপ্রিল) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক খবরে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
শ্রীলংকার গোয়েন্দা বাহিনীর বরাত দিয়ে এনডিটিভি জানিয়েছে, প্রথম আত্মঘাতী হামলার দুই ঘণ্টা আগেই তাদের সতর্ক করে দেয়া হয়েছিল।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ভারত সরকার সূত্র জানিয়েছে, গত ৪ এবং ২০ এপ্রিল একই ধরনের বার্তা শ্রীলংকা সরকারকে দেয়া হয়েছিল ভারতীয় গোয়েন্দা বাহিনীর পক্ষ থেকে। কিন্তু তাতে সাড়া প্রদান করেনি শ্রীলংকার সরকার।
শ্রীলঙ্কায় সিরিজ বোমা হামলার ৩ দিন পর এর দায় স্বীকার করে আন্তর্জাতিক জঙ্গিগোষ্ঠী আইএস। যদিও সোমবার (২২ এপ্রিল) স্থানীয় জঙ্গিগোষ্ঠী তৌহিদ আল জামাতও এর দায় স্বীকার করে। এর মধ্যেই হামলায় জড়িত এক সন্দেহভাজনের সিসিটিভি ভিডিও প্রকাশ করেছে গণমাধ্যম। এদিকে, শ্রীলঙ্কায় জরুরি অবস্থার মধ্যেই হামলায় নিহতদের শেষযাত্রায় অংশ নেন শত শত মানুষ।
ভয়াবহ সিরিজ হামলায় ৪৫ বিদেশিসহ তিনশোরও বেশি নিরীহ মানুষ প্রাণ হারায়। আতঙ্ক আর নৃশংসতার চিহ্ন এখন কলম্বোর বিভিন্ন স্থানে। তার মাঝেই চলছে নিরাপত্তা বাহিনীর সশস্ত্র টহল। সিরিজ বোমা হামলার পর পেরিয়ে গেছে দুদিন। তবে এখনও মিলছে পরিত্যক্ত বিস্ফোরক।
কলম্বোর সেন্ট আন্তোনি গির্জায় একটি ভ্যানে থাকা বোমা নিষ্ক্রিয় করার সময়ের ছবি প্রকাশ করেছে গণমাধ্যম।
পরিস্থিতি মোকাবিলায় সামরিক বাহিনীকে বিশেষ ক্ষমতা দিয়ে মধ্যরাত থেকে জারি করা হয়েছে জরুরি অবস্থা। এতে করে আদালতের সিদ্ধান্ত ছাড়াই সন্দেহভাজন যে কোন ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ ও আটক করতে পারবে সেনাবাহিনী।
জরুরি অবস্থায় নিরুপায় হয়ে ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে সময় কাটাচ্ছে শ্রীলঙ্কাবাসী।
প্রত্যক্ষদর্শী একজন বলেন, আমার চোখের সামনে কতগুলো মানুষকে মৃত্যুবরণ করতে দেখেছি। চারিদিকে রক্তমাখা ছিন্ন বিচ্ছিন্ন মরদেহ। মারাত্মক মর্মাহত আমি।
আগাম সতর্কবার্তার পরও সন্ত্রাসী হামলা ঠেকাতে না পারায় তোপের মুখে দেশটির সরকার। তবে আরো হামলার আশঙ্কা প্রকাশ করে সম্ভাব্য যে কোন সন্ত্রাসী হামলা মোকাবিলায় বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে নিরাপত্তা বাহিনী। ধর্মীয় উপাসনালয়ের পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলোয় বাড়ানো হয়েছে নজরদারিও।
রোববারের শক্তিশালী বোমার আঘাতে অধিকাংশ মরদেহই ছিন্ন বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। মরদেহ শনাক্তে বেশ হিমশিম খেতে হচ্ছে লঙ্কান কর্তৃপক্ষকে।