হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ে অলৌকিক আগুন লাগার ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই আরেকটি ঘটনার জন্ম নিয়েছে। এবার স্কুল পড়ুয়া তানিয়া আক্তার নামের এক ছাত্রীর চোখ দিয়ে পাথর, ধান ও বিভিন্ন ধরণের পাতা বের হচ্ছে!
ঘটনাটি ঘটেছে বানিয়াচং ৩নং দক্ষিণ-পূর্ব ইউনিয়ন পরিষদের জাতুকর্ণপাড়ায়। তানিয়া আক্তার স্থানীয় চৌধুরীপাড়া সরকাারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪র্থ শ্রেণির ছাত্রী। সে ওই মহল্লার নুর আলী মিয়ার কন্যা।
ঘটনাটি এলাকায় জানাজানি হলে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। বিষয়টিকে বিভিন্ন চক্ষু বিশেষজ্ঞরা চিকিৎসা বিজ্ঞানে একটি বিরল ঘটনা বলে আখ্যায়িত করেছেন।
তানিয়া আক্তারের মা সুহেনা বেগম জানান, মাস চারেক আগে তানিয়া এক শিক্ষকের কাছে প্রাইভেট পড়তে যাওয়ার সময় অন্য এক ছাত্রী তার বাম চোখে মাটি দিয়ে ঢিল মারে। তাৎক্ষণিকভাবে তানিয়া আক্তার ঢিল মারা চোখে পানি দিয়ে পরিষ্কার করে নেয়। কয়েকদিন যেতে না যেতেই তার চোখে যন্ত্রণা হচ্ছে বলে তার মাকে জানায় তানিয়া। বিষয়টি তার মা প্রথমদিকে কোন পাত্তা দেননি। কিছুদিন পর তানিয়া তার চোখে ব্যথা হচ্ছে বলে তার মাকে জানায়। তখন তার মা এলাকার কয়েক হুজুররের কাছে নিয়ে যান। তারা তাকে জানিয়ে দেন যে তার উফরি ধরা আছে। এই বলে তাকে কয়েকটি তাবিজ-কবজ দেন।
এতেও তার কোনো উন্নতি না হওয়ায় তানিয়াকে নিয়ে হবিগঞ্জের চক্ষু বিশেষজ্ঞ ডা: নজরুল ইসলামের কাছে নিয়ে যান তার পরিবার। সেখানে তার চক্ষু পরীক্ষা করে কোনো ধরণের সমস্যা নাই বলে জানিয়ে দেওয়া হয়।
এরই মধ্যে তানিয়া স্কুলে আসা বন্ধ করে দেয়। দীর্ঘ দুই মাস সে স্কুলে যায়নি। কবিরাজ ও ডাক্তারের কাছে আসা-যাওয়া করতে তাদের পনের থেকে বিশ হাজার টাকা খরচ ও হয়েছে বলে জানান তার মা সুহেনা বেগম।
কয়েকদিন পরপরই তার চোখ থেকে এরকমের পাথর, ধান ও গাছের পাতা বের হচ্ছে বলে জানান তিনি।
বুধবার (২৪ এপ্রিল) শিক্ষকরা তাকে খবর দিয়ে বিদ্যালয়ে নিয়ে আসেন। যথারীতি সে ক্লাসও করে। ক্লাস চলাকালীন সময়েই তার বাম চোখ থেকে কি যেন বের হচ্ছে বলে সে ক্লাস শিক্ষককে জানায়। একপর্যায়ে শিক্ষক তার কাছে গিয়ে দেখেন পান চোখ থেকে ছোট্ট একটি পাথর বের হয়েছে। ঘটনাটি ওই শিক্ষক দেখে হঠাৎ করে মাথা ঘুরিয়ে পড়ে যান। পরে তানিয়াসহ পাথরটি বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষে নিয়ে আসেন ওপর শিক্ষক ফজল উল্লাহ খান।
ঘটনাটি শুনে তাৎক্ষণিক বিদ্যালয়ে ছুটে আসেন বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি কাজল চ্যাটার্জিসহ গণমাধ্যমকর্মীরা। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মামুন খন্দকারের সাথে কথা তিনি জানান, ঘটনাটি শুনে ওই ছাত্রী ও তার পরিবারের সাথে কথা বলেছি। তবে কি কারণে এটি হচ্ছে একমাত্র চিকিৎসকরাই ভালো বলতে পারবেন।