টিউবওয়েলের পানি নেওয়ায় প্রকাশ্যে এক নারীকে পিটিয়েছেন বান্দরবানের আলীকদম উপজেলা মাদ্রাসা শিক্ষক শামসুল হুদা (৪৩)। গতকাল মঙ্গলবার ঘটনাটি ঘটে আলীকদম ফয়জুল উলম মাদ্রাসা প্রাঙ্গনে।
ভুক্তভোগী ওই নারী উপজেলার দানু সর্দার পাড়া গ্রামের বাসিন্দা। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকালে মাদ্রাসার টিউবওয়েল থেকে খাবারের জন্য পানি নেয় ওই নারীর ছেলে। এ সময় তাকে মারধর করেন আলীকদম ফয়জুল উলম মাদ্রাসার শিক্ষক শামসুল হুদা। সে প্রতিবাদ করলে আবারও তাকে মারধর করেন ওই শিক্ষক।
ওই নারীর ছেলে ঘরে গিয়ে তাকে ঘটনাটি জানায়। পরে তিনি মাদ্রাসায় গিয়ে ছেলেকে মারার কারণ জানতে চান। এতে শামসুল হুদা আরও ক্ষিপ্ত হয়ে যান এবং তাকেও মারধর করেন। প্রকাশ্য রাস্তায় ওই নারীকে পিটিয়ে তার মাথায় ইট দিয়ে আঘাত করেন শামসুল হুদা।
ঘটনার পর শামসুল হুদা ওই নারী ও তার ছেলেকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন। এমনকি তাদের গ্রাম ছাড়া করারও হুমকি দেন। ওই নারীর ছেলে অভিযোগ করে জানান, ঘটনার পর থানায় গিয়ে মৌখিক অভিযোগ দিলে পুলিশ বিচারের আশ্বাস দেয়। পরে তিনি তার মাকে হাসপাতালে ভর্তি করেন।
এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়। পরে ভিডিওটি দেখে পুলিশ ঘটনার তদন্তে নামে। এ ঘটনায় মাদ্রাসার পরিচালকসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করা হয়। এতে আসামি করা হয়- মাদ্রাসার শিক্ষক মাওলানা শামসুল হুদা, মাওলানা মোহাম্মদ মাহমুদুল, মাওলানা মোহাম্মদ আলমগীর, হাফেজ মোহাম্মদ সিদ্দীক ও হাফেজ মোহাম্মদ আজিজকে। এদের মধ্যে দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তবে শামসুল হুদা পলাতক রয়েছেন।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ওই নারীর সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, ছেলে পানি নিতে গেলে তাকে মারধর করা হয়। কেন তাকে মারা হলো জানতে গেলে তাকেও মারধর করেন শামসুল হুদা। তিনি ও তার কয়েকজন সহযোগী তাকে লাথি, ঘুষি ও ইট দিয়ে আঘাত করে। এখন তিনি হুমকি দিচ্ছেন তাদের গ্রামছাড়া করা হবে। তিনি এর বিচার চান।
এ বিষয়ে বান্দরবান পুলিশ সুপার (এসপি) জাকির হোসেন মজুমদার জানান, এ ঘটনায় ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা করা হচ্ছে।