উত্তর আটলান্টিক ও আর্কটিক মহাসাগরের মধ্যে অবস্থিত একটি সুবৃহৎ দ্বীপ গ্রিনল্যান্ড। বরফের চাদরে ঢাকা এই গ্রিনল্যান্ডে রয়েছে পৃথিবীর অন্যতম সুন্দর একটি গেস্ট হাউজ, ইত্তোকোরতোরমিত। মূল ভূখণ্ড থেকে এই হোটেলের দূরত্ব এতোটাই বেশি যে এটি পৃথিবীর দূরবর্তী হোটেলের স্বীকৃতি লাভ করেছে। ভৌগোলিক অবস্থান মেরু অঞ্চলে হওয়ায় সেখানে সূর্যের দেখা পাওয়া যায় মাত্র তিন ঘণ্টা। সেখানকার শীতকাল বেশি দীর্ঘ হয়। খবর-সিএনএন'র।
মানব সভ্যতা থেকে অনেক দূরের এই হোটেলে গেলে মিলবে না গাড়ির সুবিধা। এমনকি মোবাইল ফোনও ব্যবহার করার কোনো সুযোগ নেই।
আইসল্যান্ডের আকুরেইরি থেকে ৯০ মিনিটের বিমানযাত্রায় গ্রিনল্যান্ডের কনস্টেবল পয়েন্টে যেতে হবে। সপ্তাহে এয়ার আইসল্যান্ডের দুটি বিমান যায় আকুরেইরি থেকে গ্রিনল্যান্ড। বিমানে করে কনস্টেবল পয়েন্টে গিয়ে সেখান থেকে এয়ার গ্রিনল্যান্ডের হেলিকপ্টারে করে যেতে হবে ইত্তোকোরতোরমিতে। এর জন্য লাগবে আরও ১৫ মিনিট। হোটেলের রুমের ভাড়া শুরু হয় ৯০ ডলার থেকে। যদিও এখানে রুমে রুমে বাথরুমের সুবিধা নেই। অতিথিদের বিনোদন রুমে রয়েছে একটি টেলিভিশন এবং কিছু ডিভিডি।
গ্রিনল্যান্ডের হিমায়িত সাগরের একেবারে প্রান্তে অবস্থিত ইত্তোকোরতোরমিত শহরটিই একমাত্র জায়গা যেখানে সামান্য কিছু সংখ্যক মানুষের বাস রয়েছে। ছোট্ট শহরটিতে রয়েছে উজ্জ্বল কমলা রঙের অনন্য সুন্দর এক গেস্ট হাউজ। এখানকার বাসিন্দাদের প্রত্যাশা একদিন আকর্ষণীয় পর্যটন কেন্দ্র হয়ে উঠবে ইত্তোকোরতোরমিত। প্রায় জনশূন্য এই এলাকার রঙিন বাড়িগুলো দেখে যে কারো মন খুশিতে ভরে উঠবে।
বরফের সমুদ্রের মাঝখানে প্রচণ্ড ঠান্ডা হলেও অতিথিদের জন্য গেস্ট হাউজে রয়েছে গরমের সুব্যবস্থা। যদিও হোটেলে বিদ্যুৎ সংযোগ রয়েছে। হোটেলের বিনোদন কেন্দ্রে রয়েছে কেন্দ্রীয় গরম ব্যবস্থা, ওয়াইফাই। অতিথিরা চাইলে অ্যামাজনের মাধ্যমে অর্ডার করে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিংবা খাবারও আনিয়ে নিতে পারবেন। তবে অর্ডার করার পর অপেক্ষা করতে হবে দুই মাসের মতো। কারণ প্রতি দুই মাস অন্তর বিশেষ বিমানে করে আইসল্যান্ড থেকে বিভিন্ন জিনিসপত্র নিয়ে হাজির হয় ইত্তোকোরতোরমিতে। অতিথিদের খাবারের বেশিরভাগই আসে স্থানীয় উত্স থেকে। স্থানীয়রা খাবারের জন্য সামুদ্রিক শামুক জাতীয় খাবার এবং রেনডিয়ারের ওপর নির্ভর করে। অনেক সময় অতিথিদের চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ করা হয় এসব খাবার। অবসরে পর্যটকরা কুকুরে টানা স্লেডিংয়েও বেড়াতে পারেন আশপাশে।