আগামী শুক্রবার পদ্মা সেতুর ১২তম স্প্যান বসানোর কথা থাকলেও তা স্থগিত করা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’ আঘাত হানতে পারে এমন আশঙ্কা থেকেই কার্যক্রম স্থগিত করা হয়।
শুক্রবার সকালে সেতুর ২০ ও ২১ নম্বর পিলারের ওপর ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের ও তিন হাজার ১৪০ টন ওজনের স্প্যান বসানোর পরিকল্পনা ছিল। তবে বুধবার বিকালে পদ্মা সেতু প্রকল্পের উপসহকারী প্রকৌশলী হুমায়ুন কবির গণমাধ্যমকে জানান, ঘূর্ণিঝড় ফণীর কারণে এই কার্যক্রম আপাতত স্থগিত করা হয়েছে।
১২তম স্প্যানটি বসানো হলে পদ্মা সেতুর এক হাজার ৮০০ মিটার অংশ দৃশ্যমান হবে।
২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ৩৭ ও ৩৮ নম্বর পিয়ারে প্রথম স্প্যান বসানোর মধ্য দিয়ে প্রথমবারের মতো দৃশ্যমান হয় পদ্মা সেতু। এর চার মাস পর ২০১৮ সালের ২৮ জানুয়ারি ৩৮ ও ৩৯ নম্বর পিয়ারের ওপর দ্বিতীয় স্প্যানটি বসানো হয়। পরে ২০১৮ সালের ১১ মার্চ ৩৯ ও ৪০ নম্বর পিয়ারে তৃতীয়, ১৩ মে ৪০ ও ৪১ নম্বর পিয়ারে চতুর্থ, ২৯ জুন ৪১ ও ৪২ নম্বর পিয়ারে পঞ্চম স্প্যান বসানো হয়। এরপর গত নভেম্বর মাসের দিকে মাওয়া প্রান্তে ৪ ও ৫ নম্বর পিয়ারে ষষ্ঠ স্প্যান বসায় পদ্মা সেতু কর্তৃপক্ষ।
চলতি বছরের প্রথম চার মাসে পাঁচটি স্প্যান বসানোর কাজ শেষ করা হয়েছে। এ বছর ২৩ জানুয়ারি ৩৬ ও ৩৭ নম্বর পিয়ারে বসে অষ্টম স্প্যান। ২৮ দিন পর ২০ ফেব্রুয়ারি ৩৫ ও ৩৬ নম্বর পিয়ারে অষ্টম স্প্যান, ২২ মার্চ ৩৪ ও ৩৫ নম্বর পিয়ারে নবম, ১০ এপ্রিল মাওয়ায় ১৩ ও ১৪ নম্বর পিয়ারে দশম এবং সবশেষ ১১তম স্প্যানটি বসে ২৩ এপ্রিল।
পদ্মা সেতু প্রকল্পটির যাত্রা শুরু হয় ২০০৭ সালে। সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকার ওই বছরের ২৮ আগস্ট ১০ হাজার ১৬১ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন করেছিল। পরে আওয়ামী লীগ সরকার এসে রেলপথ সংযুক্ত করে ২০১১ সালের ১১ জানুয়ারি প্রথম দফায় সেতুর ব্যয় সংশোধন করে। বর্তমান ব্যয় ৩০ হাজার কোটি টাকার বেশি। মূল সেতু নির্মাণে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন কোম্পানি। আর নদীশাসনের কাজ করছে চীনের আরেক প্রতিষ্ঠান সিনোহাইড্রো করপোরেশন। দুই প্রান্তে টোল প্লাজা, সংযোগ সড়ক, অবকাঠামো নির্মাণ করছে দেশীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।