ভারতের ওড়িশায় আঘাত হানা ঘূর্ণিঝড় ফণী বাংলাদেশের রংপুরে আঘাত হানার আগেই দুর্বল হয়ে পড়বে বলে ধারণা করছেন আবহাওয়াবিদরা। তাই বড় ধরনের ধ্বংসযজ্ঞের আশঙ্কা নেই।
রংপুর আবহাওয়া অফিস জানান, রংপুর বিভাগে দুর্বল হয়ে আঘাত হানবে ফণী। আজ শুক্রবার মধ্যরাত থেকে শনিবার ভোর রাতে আঘাত হানতে পারে।
রংপুর আবহাওয়াবিদ মোস্তাফিজুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
শুক্রবার (৩ মে) বিকেলে ঘূর্ণিঝড় ফণীর প্রভাব নিয়ে বলেন, রংপুর আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ মোস্তাফিজার রহমান।
তিনি জানান, ঘূর্ণিঝড় ফণী দুর্বল হয়ে পড়ায় রংপুরের নদী বেষ্টিত চরাঞ্চলসহ এই জেলাতে আঘাত হানতে পারবে। তবে ঝড়ের গতিবেগ বাড়লে বৈদ্যুতিক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়াসহ গাছ-গাছালি উপড়ে পড়তে পারে।
মোস্তাফিজার রহমান জানান, শুক্রবার সন্ধ্যার পর যেকোনো সময় খুলনা ও তৎসংলগ্ন জেলাগুলোতে প্রথমে আঘাত হেনে ঘূর্ণিঝড়টি সারারাত অবস্থান করার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে মধ্যরাতের যেকোনো সময় রংপুর অঞ্চলে আঘাত হানতে পারে। ক্রমশ দুর্বল হওয়া ফণীর আঘাতে প্রাণহানি বা বড় ধরনের ক্ষয়-ক্ষতির সম্ভাবনা নেই। ফণী নিয়ে আতঙ্কিত বা শঙ্কিত না হয়ে এখন নিরাপদে থাকাই শ্রেয়।
এই আবহাওয়াবিদ জানান, ফণীর প্রভাবে অন্ধ্রপ্রদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের উপকূলবর্তী বহু এলাকায় ঝোড়ো হাওয়া প্রবাহিত হচ্ছে। ঝড়ের গতিবেগ ঘণ্টায় প্রায় ২০০ কিলোমিটার। দুপুর পর্যন্ত ওড়িশায় তাণ্ডব চালানো ফণী এখন পশ্চিমবঙ্গের দিকে এগোচ্ছে। ঘূর্ণিঝড়টি এখন পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর থেকে আরও উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে একই এলাকায় অবস্থান করছে। সমুদ্র উপকূলীয় অঞ্চল হয়ে রাতের যেকোনো সময় রংপুর-রাজশাহী অঞ্চলে এই ঘূর্ণিঝড়ের আঘাত হানার সম্ভাবনা রয়েছে।
তিনি জানান, শুরুতে ঝড়ের গতিবেগ ঘণ্টায় প্রায় ২০০ কিলোমিটার হলেও এখন তা কমে এসেছে। ভারত থেকে বাংলাদেশে আঘাত হানার সময় বিশেষ করে রংপুর অঞ্চলে বাতাসের গতিবেগ থাকবে ঘণ্টায় ৮০ থেকে ১০০ কিলোমিটার।
তিনি আরও জানান, শুক্রবার ভোররাতে রংপুরে হালকা ঝোড়ো হাওয়ার সঙ্গে থেমে থেমে বৃষ্টি হয়েছে। তবে বেলা ১১টার পর থেকে মেঘলা আকাশের বুকে আলোর লুকোচুরি থাকলেও দুপুরের পর তা হারিয়ে যায়। বিকেল থেকে জেলার বিভিন্ন স্থানে ফণীর প্রভাবে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছে।
এদিকে ঘূর্ণিঝড় ফণীর মোকাবিলায় রংপুর জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নদী বেষ্টিত এলাকাগুলোতে সতর্কতা মূলক প্রচারণা চালানো হয়েছে। শেল্টার সেন্টার হিসেবে ব্যবহারে প্রস্তুত রাখা হয়েছে বিভিন্ন উপজেলার স্কুল-কলেজ ও আশ্রয়কেন্দ্রগুলো।
রংপুরের জেলা প্রশাসক এনামুল হাবীব জানান, জেলার নদী কেন্দ্রিক এলাকা ও চরাঞ্চলবাসীকে সাবধান করা হয়েছে। ফণী মোকাবিলায় সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়ার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেয়া রয়েছে।