বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ উৎক্ষেপণের একবছর পূর্তি আজ (১২ মে)। কক্ষপথে যাওয়ার বর্ষপূর্তিতে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ এর মাধ্যমে সম্প্রচার শুরু করতে যাচ্ছে দেশের সব টেলিভিশন চ্যানেল। এর মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু হচ্ছে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের বাণিজ্যিক কার্যক্রম। তবে এই মুহূর্তে টেলিভিশন চ্যানেলগুলো বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট থেকে সেবা নিলেও কারিগরি সমস্যার কারণে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট থেকে সম্পূর্ণ সম্প্রচার কার্যক্রম পরিচালনা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্টরা।
ঠিক এক বছর আগে এই দিনে যুক্তরাষ্ট্রের কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে মহাকাশে উৎক্ষেপণ করা হয় বাংলাদেশের টেলিযোগাযোগ খাতের স্বপ্ন বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১। এরপর বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষা শেষে গেল বছরের নভেম্বরে বাংলাদেশের কাছে হস্তান্তর করে স্যাটেলাইট নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ফ্রান্সের থ্যালাস অ্যালেনিয়া স্পেস। এরপরই মূলত বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ এর বাণিজ্যিক ব্যবহারে কাজ শুরু করে বাংলাদেশ কমিউনিকেশন স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেড। তবে উৎক্ষেপণের এক বছর পেরিয়ে গেলেও সম্পূর্ণ পরিচালনায় আসতে পারছে না বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১।
সময় টেলিভিশনের তথ্য প্রযুক্তি ও সম্প্রচার প্রধান সালাউদ্দীন সেলিম বলেন, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের যে ফ্রিকোয়েন্সি, এটাকে বলা হয় ইনসেট সি ব্যান্ড। এই ইনসেট সি ব্যান্ডের ফ্রিকোয়েন্সিগত আপলিংক সেটআপ আমাদের দেশের কোনো টিভি চ্যানেলেরই নেই। সেই কারণে এই ফ্রিকোয়েন্সিতে ম্যাচ করতে গেলে টিভি চ্যানেলগুলোকে আপলিংক ইকুইপমেন্ট চেঞ্জ করতে নতুন করে টাকা খরচ করতে হবে। ফাইভার অপটিকের মাধ্যমে প্রত্যেকটা টিভি চ্যানেল থেকে ফিডটা নিয়ে যাওয়া হচ্ছে গাজীপুর গ্রাউন্ড স্টেশনে। ফাইবার অপটিকসের রিডানডেন্সি কি, এটা তো হরহামেশাই কাটা পড়ে।
তবে এই মুহূর্তে শুধুমাত্র বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ এর মাধ্যমে টেলিভিশন সম্প্রচার হলে অধিকাংশ চ্যানেল অপারেটরের মাধ্যমে টেলিভিশন দেখা সম্ভব হবে না বলে মনে করেন ক্যাবল টিভি অপারটের অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আনোয়ার পারভেজ।
তিনি বলেন, বর্তমানে যে স্যাটেলাইটে বাংলাদেশের চ্যানেলগুলি চলছে, এখন যদি সবাই বলে যে তারা আর ওই স্যাটেলাইট ব্যবহার করবে না। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট ব্যবহার করবে। এখন যাদের (বর্তমান ব্যবহৃত স্যাটেলাইট) কাছে এলএনবিটা আছে শুধু তারাই দেখাতে পারবে। বেশিরভাগ অপারেটর এখন আপলিংক করতে পারবে না।
সব ধরনের প্রতিবন্ধকতা দূর করে খুব দ্রুতই বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটকে শতভাগ ব্যবহার উপযোগী করা হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ কমিউনিকেশন স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেডের চেয়ারম্যান ড. শাহজাহান মাহমুদ।
তিনি বলেন, আজকে সমস্ত টেলিভিশন আনুষ্ঠানিকভাবে আমাদের বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কিছু টেকনিক্যাল কারণে আমরা এই কার্যক্রম সাতদিন পিছিয়েছি। ১৯ মে দেশের সব টেলিভিশন আনুষ্ঠানিকভাবে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের সাথে যুক্ত হবে।
সম্প্রচার বাবদ প্রতিটি চ্যানেলকে বিদেশি স্যাটেলাইট ভাড়া বাবদ ১৮ থেকে ২০ লাখ টাকা প্রতিমাসে বিদেশে পাঠাতে হয়। যা বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট ব্যবহারের ফলে সাশ্রয়ী হবে।