বিশিষ্ট সাংবাদিক মাহফুজ উল্লাহর প্রতি স্মৃতিচারণ করতে গেয়ে আবেগে আপ্লুত হয়ে কেঁদেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, মাহফুজ উল্লাহ এতো তাড়াতাড়ি চলে যাবেন... ‘কাঁদেন’ এটা কখনো ভাবিনি। আপনারা অবাক হবেন যে, আমি কেনো এতোটা আবেগ-আপ্লুত হচ্ছি। আবার কান্না...। তার সঙ্গে আমার ব্যক্তিগত সম্পর্ক এতোটাই গভীর ছিল যে, আমি কখনো ভাবিনি সে আমার পাশে থাকবে না...। এটা আমি ভাবি নাই।
সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবের বরেণ্য সাংবাদিক মাহফুজ উল্লাহর প্রয়াণে এক নাগরিক শোক সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘মাহফুজ উল্লাহ চলে যাওয়ার কিছু দিন আগে, ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে একটি সভায় তিনি এসেছিলেন। সেখানে মাহফুজ উল্লাহ বিএনপির কঠিন সমালোচনা করেছিলেন। আর এটাই ছিল তার সবচেয়ে বড় গুণ। সত্যকে সত্য বলতে কখনো তিনি দ্বিধা করেননি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আজকে কঠিন সময়। বর্তমানে গণতন্ত্রবিহীন ও অধিকারবিহীন রাষ্ট্র এবং রাজনীতির চিহ্ন মাত্র নেই। এই সময় মাহফুজ উল্লাহ তার সত্য বলার মধ্যে দিয়ে আমাদেরকে জাগিয়ে তুলেছেন। সুতরাং আমার ব্যক্তিগতভাবে তার অভাব কোন দিন পূরণ হবে না।’
মাহফুজ উল্লাহর চলে যাওয়া জাতির জন্য বড় একটা ক্ষতি বলেও মন্তব্য করেন মির্জা ফখরুল।
গণফোরাম সভাপতি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘মাহফুজ উল্লাহ প্রেরণার উৎস হয়ে সারাজীবন আমাদের মাঝে থাকবেন। তাই আমি নিরাশ হতে চাই না। কারণ আজকের বক্তব্যে থেকে বুঝা গেছে...। বিভিন্ন দলের লোক এখানে আছেন এবং সবাই মাহফুজ উল্লাহকে শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন।’
কামাল হোসেন বলেন, ‘আমরা গণতন্ত্রের কথা বলি। কিন্তু আজকে চারিদিকে স্বৈরতন্ত্র দেখা যাচ্ছে। তবে নিরাশ হওয়ার কারণ নেই। কারণ আজকের উপস্থিতি বলেছে, সেই ঐক্যের পক্ষে আজকেও সবাই আছে।’
সভায় গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘দেশ এক দলীয় ও এক পেশে হয়ে গেছে। কিন্তু মাহফুজ উল্লাহ তার ব্যতিক্রম ছিলেন। কিন্তু আজকে যে মাহফুজ উল্লাহর ভূমিকা ছিল, তা আমরা পাচ্ছি না।’
নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘মাহফুজ উল্লাহ একজন রাজনীতিবিদ ছিলেন। আর আজ দেশে যে গণতন্ত্রের সংকট, এই সময় তার চলে যাওয়ায় গণতান্ত্রিক সংগ্রামের বাধা হয়ে দাঁড়াবে।’
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপেদষ্টা ড. আকবর আলি খানের সভাপতিত্বে সভায় আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য নূহ-উল-আলম লেনিন, ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি ও সাবেক মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, তত্ত্বাবধারক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি ড. এমাজ উদ্দিন আহমেদ, জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, দৈনিক মানবজমিন সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী, নিউ এজ সম্পাদক নুরুল কবির, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ, বর্তমান সভাপতি সাইফুল আলম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল, সাবেক মন্ত্রী পরিষদ সচিব শাহাদাৎ হোসেন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।