ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) টিএসসিতে মারধরের অভিযোগ তুলে এবার অনশনে বসেছেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে পদবঞ্চিত ও প্রত্যাশিত পদ না পাওয়া বিক্ষুব্ধ অংশের সদস্যরা।
শনিবার (১৮ মে) দিবাগত রাত ৩টা থেকে বৃষ্টিতে ভিজেই ঢাবির রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে অনশন করছেন তারা। তাদের বোঝাতে এসে ব্যর্থ হয়ে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী একপর্যায়ে বলেন, তিনি পদত্যাগ করবেন।
টিএসসিতে ছাত্রলীগের পদবঞ্চিতদের সাথে বৈঠককালে উত্তেজনার একপর্যায়ে ছাত্রলীগ নেত্রী বিএম লিপি আক্তারকে মারধরের অভিযোগ ওঠে সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীর বিরুদ্ধে। তবে মারধরের বিষয়টি অস্বীকার করে উচ্চবাচ্যের (হট টক) কথা বলেন গোলাম রাব্বানী। এরপর আবারও একই ঘটনার জেরে রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এসে আন্দোলনকারীদের কাছে সরি বলেন ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক।
এ সময় তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রীর কাছে গিয়ে পদত্যাগের ঘোষণা দিবেন বলেও জানায়। শনিবার দিবাগত রাত দেড়টা থেকে সাড়ে ৩টার দিকে এসব ঘটনা ঘটেছে।
জানা গেছে, ছাত্রলীগ সভাপিত শোভন ও সাধারণ সম্পাদক রাব্বানী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে আন্দোলনকারীদের সাথে আলোচনায় বসেন। এ সময় উচ্চবাচ্যের (হট টক) একপর্যায়ে লিপির ওপর চড়াও হন সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী। পরে লিপিকে মারধরের অভিযোগ ওঠে রাব্বানীর বিরুদ্ধে। এ সময় তার সাথে থাকা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আন্দোলনকারী পদবঞ্চিত নেতাকর্মীদের ওপর হামলে পরে বলেও জানা যায়।
এ ঘটনার সময় উপস্থিত প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হামলায় অন্তত ৬ জন আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক নেতার ঘাড়ের হাড় ভেঙে যায়। হামলার সময় ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী ও তার অনুসারীদের নিবৃত্ত করার চেষ্টা করেন সভাপিত রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন।
পরে রাজু ভাস্কর্যে অনশনে বসেন আন্দোলনকারী পদবঞ্চিতরা। এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত (রবিবার সকাল ৯টা) পর্যন্ত তারা সেখানে অবস্থান করছিল।
হামলার শিকার অনেকেই জানিয়েছেন, যারা সেদিন মধুর ক্যান্টিনে হামলা করেছে টিএসসিতেও ফের হামলা করেছে তারা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মেয়েদের একটি হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক গণমাধ্যমকে জানান, যেখানে সাধারণ সম্পাদক আঙুল তোলেন সেখানে তার অনুসারী তো আরও উস্কানি পান। আর এখানে খোদ সাধারণ সম্পাদক মারধর করেছেন তাহলে তার অনুসারীরা কি করতে পারে বুঝে দেখেন।
এদিন, হামলার ঘটনার পরে রাত ৩ টার দিকে রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এসে পদবঞ্চিতদের বুঝিয়ে অনশন থেকে নিবৃত্ত করার চেষ্টা করেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী। তবে পদবঞ্চিতরা তাদের কথা গ্রাহ্য করেন নি। সংগঠনের সর্বোচ্চ অভিভাবক শেখ হাসিনার সাথে কথা বলবেন বলেও জানান তারা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে সরাসরি অভিযোগ দিতে চান তারা। এ সময় তারা শোভন রাব্বানীকে সেখান থেকে চলে যেতে বলেন।
এ সময় গোলাম রাব্বানী তাদের উদ্দেশে বলেন, আমি সরি। তোমরা চলে যাও। আমি কাল নেত্রীর কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়ে আসব।
এ বিষয়ে রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন বলেন, একটু ঝামেলা হয়েছে, তবে এখন কিছু বলতে চাচ্ছি না।
পরে গণমাধ্যমকে দেয়া বক্তব্যে মারধরের বিষয়টি অস্বীকার করেন গোলাম রাব্বানী। তিনি বলেন, কাউকে মারধর করা হয়নি। কথা বলতে গিয়ে ‘হট টক’ হয়েছিল।
এ সময় আন্দোলনকারীদের এজেন্ডাধারী আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, বিশেষ সিন্ডিকেটের নির্দেশনা অনুযায়ী পদবঞ্চিতরা এসব করছেন।
সূত্র: বিডি২৪লাইভ