‘পৃথিবীর সকল মুসলমানরা সন্ত্রাসবাদে বিশ্বাস করে, যা হযরত মুহাম্মদ (স) শিখিয়েছেন’- ফেসবুকে এমন মন্তব্য করে তীব্র সমালোচনা ও ক্ষোভের মুখে পড়েছেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) জয় দেব নামের এক শিক্ষার্থী। এ ঘটনায় রোববার সকালে অভিযুক্ত শিক্ষার্থীকে আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছে কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশ।
পুলিশ জানায়, গত শনিবার রাত ১১টার দিকে 'ভারতের সপ্তদশ লোকসভা নির্বাচনের শেষ দফা নির্বাচনের আগে ধ্যানে বসেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি'- ভিডিওবার্তা নিজেদের ভেরিফাইড পেইজ থেকে শেয়ার করে ভয়েস অব আমেরিকা নামক সংবাদ মাধ্যমটি। বার্তাটি শেয়ারের কিছুক্ষণ পর ওই পোস্টে ধর্মীয় বিদ্বেষপূর্ণ মন্তব্যটি করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ওই শিক্ষার্থী। তার বাড়ি বরিশাল বিভাগের পটুয়াখালীতে।
পরে মন্তব্যটি স্ক্রিনশটের মাধ্যমে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে শিক্ষার্থীরা ক্ষোভে ফেটে পড়েন। এই অপরাধের জন্যে একের পর এক পোস্টের মাধ্যমে অভিযুক্ত শিক্ষার্থীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন তারা। এমতাবস্থায় তোপের মুখে পড়ে অভিযুক্ত শিক্ষার্থী তার মন্তব্যটি মুছে ফেলেন এবং এ রকম মন্তব্যের পুনরাবৃত্তি হবে না বলে ক্ষমা চায়। কিন্তু এতেও পরিস্থিতি শান্ত হয়নি।
অভিজিৎ বণিক নামে এক শিক্ষার্থী জানিয়েছে, যে অন্যের ধর্মকে শ্রদ্ধা করতে পারে না, সে কখনো নিজের ধর্মকেও শ্রদ্ধা করতে পারে না।… তীব্র নিন্দা জানাই এবং শাস্তির দাবি জানাই।
রহমত উল্লাহ নীরব নামে এক শিক্ষার্থী লিখেছেন, ‘বিষয়টি মোটেও হালকা নয়। সে কার সাথে চলে, কোথায় যায়, কি বই পড়ছে… সবকিছুই খতিয়ে দেখা জরুরি।’
শিক্ষার্থী শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ধর্মীয় ব্যাপারে এমন নিচু মানসিকতার ছেলেদের ভার্সিটিতে না পড়াই বেটার। প্রশাসনকে বলব যথাযথ ব্যবস্থা নিতে।’
কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানার উপপরিদর্শক মো. ইমাম বলেন, 'অভিযুক্ত জয় দেব কুমিল্লার ঠাকুরপাড়াস্থ একটি মেসে থাকতো। সে ফেসবুকে ইসলাম ও মহানবীকে নিয়ে কটুক্তি করায় স্থানীয়রা তাকে আটক করে আমাদের খবর দেয়। আমরা রবিবার সকালে তাকে গ্রেপ্তার করি। এ ব্যাপারে মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর ড. কাজী মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন বলেন, 'আমি বিষয়টি শুনেছি। এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান আইনে ব্যবস্থা নিবো। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে আপাতত মামলা করার কোনো পদক্ষেপ নেই। এরপরও উপাচার্যের পরামর্শে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।'
প্রসঙ্গত, গত ২৫ মে ২০১৭ তারিখে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসে এক ছাত্রীকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ পাওয়া যায় জয় দেবের বিরুদ্ধে। এছাড়াও সে বিভিন্ন সময়ে অনলাইন ও অফলাইনে ধর্মীয় বিদ্বেষপূর্ণ মন্তব্য করে থাকে বলে অভিযোগ করে শিক্ষার্থীরা।