বাংলাদেশের একমাত্র স্যাটেলাইট বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ এর ব্যান্ডউইথ বিনামূল্যে ব্যবহার করার জন্যে স্যাটেলাইটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিসিএসসিএল এবং বাংলাদেশের বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলগুলো একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে।
স্যাটেলাইটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ কমিউনিকেশন স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেডের চেয়ারম্যান শাহজাহান মাহমুদ জানান, চুক্তি অনুযায়ী রোববার থেকে পরের তিন মাস বিনামূল্যে টেলিভিশন চ্যানেলগুলো বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের ব্যান্ডউইথ ব্যবহার করতে পারবে।
শাহজাহান মাহমুদ বলেন, মে থেকে আগস্ট পর্যন্ত তিনমাস বিনামূল্যে ব্যান্ডউইথ ব্যবহারের সুবিধা পাবে টেলিভিশন চ্যানেলগুলো। সেপ্টেম্বর থেকে তাদেরকে এর জন্য ফি দিতে হবে।
তিনি জানান, বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলগুলো বিসিএসসিএলের সাথে সমঝোতার ভিত্তিতেই বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের ব্যান্ডউইথ ব্যবহার করার বিষয়ে একমত হয়।
বাংলাদেশের বেসরকারি টেলিভিশনের মালিকদের সংস্থা অ্যাটকোর ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং একাত্তর টিভির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোজাম্মেল হক বলেন, চুক্তিটি বড় বিষয় নয়, আমরা বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের ব্যান্ডউইথ ব্যবহার করার বিষয়ে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
এদিকে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের পর বলা হয়েছিল এটির অবস্থান এবং দূরত্বের কারণে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলগুলো এর থেকে পাওয়া সেবা ব্যবহারের ক্ষেত্রে কিছুটা সমস্যার মুখে পড়বে।
বাংলাদেশের টিভি চ্যানেলগুলো বর্তমানে অ্যাপস্টার নামে যে স্যাটেলাইট ব্যবহার করছে সেটি বাংলাদেশের উপরে ৯০ ডিগ্রিতে অবস্থান করছে। অ্যাপস্টার সেভেনের মাধ্যমে একদিকে দুবাই এবং অন্যদিকে মালয়েশিয়া পর্যন্ত সম্প্রচারের সুবিধা পাওয়া যাচ্ছে।
মোজাম্মেল হক বলেন, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের অবস্থানের কারণে এই স্যাটেলাইটের মাধ্যমে মধ্যপ্রাচ্য পর্যন্ত সরাসরি পৌঁছানো সম্ভব হবে না। আরেকটি স্যাটেলাইটের মাধ্যমে মধ্যপ্রাচ্যে পৌঁছাতে হবে।
কিন্তু তারপরেও এ বিষয়টিকে খুব বড় কোন সমস্যা হিসেবে দেখছেন না টকোর ভাইস প্রেসিডেন্ট।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট অবস্থানের দিক দিয়ে কিছুটা অসুবিধাজনক অবস্থানে থাকলেও এটি যেই ব্যান্ডে অপারেট করছে সেটির ক্ষেত্রে আমরা অ্যাপস্টারের চেয়েও বেশি শক্তিশালী সিগন্যাল পাবো। বঙ্গবন্ধু অন্য স্যাটেলাইটের সাথে হপ অ্যারেঞ্জ করে দিলে এর সিগন্যালের মান আরো স্ট্যান্ডার্ড হবে।
কাজেই বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের ব্যান্ডউইথ ব্যবহারে কিছু ক্ষেত্রে অসুবিধা থাকলেও অন্যান্য ক্ষেত্রে সেটি সুবিধা দেবে বলে আশা প্রকাশ করেন মোজাম্মেল হক।
বিসিএসিএলের চেয়ারম্যান শাহজাহান মাহমুদ গত সপ্তাহে বলেন, দেশি চ্যানেলগুলো বিদেশি স্যাটেলাইটের ভাড়া বাবদ যে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা খরচ করে তা সাশ্রয়ের সুযোগ থাকায় বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট ব্যবহার করে নিজেদের ব্যান্ডউইথে নির্ভরশীল হতে আগ্রহী হবে।
বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট ব্যবহার করা হলে বিদেশি স্যাটেলাইট ভাড়া বাবদ বাংলাদেশের টিভি চ্যানেলগুলো যে অর্থ খরচ করে তা সাশ্রয় করা সম্ভব হবে বলে ধারণা করছেন মোজাম্মেল হক।
তিনি বলেন, ধরুন আমরা এখন বিদেশি কোম্পানিকে যে টাকা ভাড়া দেই, সেই টাকাও যদি বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট কর্তৃপক্ষকে দিতে হয় তবুও তো টাকাটা দেশেই থাকলো।