দলের সিদ্ধান্তে ‘কোরবানি’ হওয়া বিএনপি নেতা মধ্যে তৈমুর আলম খন্দকার আর দল থেকে কোনো কিছু পাওয়ার আশা করছেন না। তবে জাতীয়তাবাদী আদর্শের রাজনীতি পছন্দ করেন বলে শেষ অবধি দলের জন্য কাজ করে যাবেন বলে জানিয়েছেন।
বিএনপির রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিয়ে খুব বেশি কথা না বললেও এই রাজনৈতিক কর্মী মনে করেন, এই মুহুর্তে সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি। সেজন্য কার্যকর আন্দোলন হতে হবে। ঈদ, পূজা আর হজের পরে আন্দোলন করার পুরনো ঘোষণা বাদ দিয়ে অবিলম্বে রাজপথে নামার পরামর্শ তৈমুর আলমের।
গত ৩০ ডিসেম্বরের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ-১ আসন থেকে প্রাথমিক মনোনয়ন পেয়েছিলেন তৈমুর। তবে চূড়ান্ত মনোনয়ন থেকে বঞ্চিত হন তৈমুর। শুরুতে এ নিয়ে তার কর্মী সমর্থকরা গুলশান কার্যালয়ে বিক্ষোভ করে। তখন ভাঙচুরের ঘটনাও ঘটে। তবে এখন আর এ নিয়ে খুব ভাবছেন না তিনি।
এর আগে ২০১১ সালে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রার্থী হলেও ভোটের আগের দিন রাতে তাকে বসিয়ে দেওয়া হয়ছিল। তৈমুর আলম একে রাগে-দুঃখে তুলনা করেছিলেন কোরবানির সঙ্গে। যা নিয়ে দলের ভেতরে বাইরে নানা সমালোচনা হয়েছিল। সেই ক্ষোভের কথা এখনো ভোলেননি তিনি।
তৈমুর আলম বললেন, ‘দেশের রাজনীতির সার্বিক পরিস্থিতি কুলষিত হয়ে গেছে। রাষ্ট্রীয়ভাবেই পুরো রাজনীতি টাকা ও তেলের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে। তাই এই অবস্থায় আমার কোনো চাওয়া নেই। দল থেকে কোনো কিছু পাওয়ার আশা নেই। আমি আমার মত করে কাজ করে যাব।’
মনোনয়ন না পাওয়ার বিষয় নিয়ে খুব বেশি কথা চাননি এই নেতা। বললেন, ‘মনোনয়ন পাইনি, তাতে আল্লাহ আমায় বাঁচাইছেন। এটা লিখে দিয়েন। মনোনয়নের জন্য আমি লালায়িত নই। বরাবরই আমি দলের কথা চিন্তা করেছি। সব ধরনের ত্যাগ স্বীকার করে আসছি।’
দলের তেমন কর্মসূচি না থাকলেও প্রতিনিয়ত গণমাধ্যমে টকশো,কলাম লিখে, সভা-সেমিনারে বক্তব্য রাখার পাশাপাশি নিজের আইনি পেশায় সময় দিচ্ছেন তৈমুর আলম। গত ফেব্রুয়ারিতে খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য আইনজীবীদের সক্রিয় করতে গড়ে তুলেছেন একটি সংগঠন।
‘গণতন্ত্র ও খালেদা জিয়া মুক্তি আইনজীবী আন্দোলন’ নামের সংগঠনের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যে বেশ কিছু কর্মসূচি পালিত হয়েছে। সামনেও সব আদালতে অনশন করাসহ খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যাালয় ঘেরাওয়ের মত কর্মসূচি পালনেরও পরিকল্পনা আছে বলে জানালেন তিনি। তবে তা ঈদের পরে আলোর মুখ দেখতে পারে।
তৈমুর আলম বলেন, ‘আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি। বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি দরকার। সেজন্য বিভিন্ন প্লাটফর্মে কথা বলছি। আইনজীবীদের সংগঠিত করার চেষ্টা করছি। রাজনীতি দূষিত হয়ে গেছে। টাকাওয়ালাদের পকেটে চলে গেছে। তাই আমি আর দল থেকে বেশি কিছু আশা করি না। তেল মাখামাখি আর তেলের বাটি দিয়ে রাজনীতি করতে হয়।’
দলের নেতাদের প্রতি কোনো অভিমান নেই জানিয়ে তৈমুর আলম বলেন, ‘মনে করি দীনক্ষণ ঠিক না করে ঈদের পর, পূজার পরে আর হজের পর আন্দোলনের কথা না বলে এখনই মাঠে নেমে যাওয়া উচিত।’