ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ব্যাট হাতে লড়ছিলেন আসিফ আলি। একই সময়ে যুক্তরাষ্ট্রে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছিল তার ১৯ মাস বয়সী মেয়ে নূর ফাতিমা। রোববার জ্বলে উঠতে পারেননি বাবা। ১৭ বলে মাত্র ২২ রান করে সাজঘরে ফেরেন তিনি। ক্যান্সারের সঙ্গে যুদ্ধে হেরে গিয়ে পৃথিবী থেকে বিদায় নেয় ছোট মেয়েটিও।
ড্রেসিংরুমে ফিরেই আদরের মেয়ের মৃত্যুর খবর পান আসিফ। এতে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন তিনি। শেষ পর্যন্ত ম্যাচটিও ৫৪ রানে হেরে যায় পাকিস্তান। পরের দিনই সুখবর পান ডানহাতি ব্যাটসম্যান। পাকিস্তানের ১৫ সদস্যের চূড়ান্ত বিশ্বকাপ স্কোয়াডে ডাক পান তিনি।
কিন্তু মেয়ের মৃত্যুর ঘটনায় আসিফের বিশ্বকাপে খেলা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়। তবে বুকে পাথর চাপা দিয়ে বেদনা নিয়েই ক্রিকেটের বৈশ্বিক আসরে খেলবেন তিনি। বিশ্বমঞ্চে পারফরম করতে, নিজের সেরাটা উজাড় করে দিতে প্রস্তুত শোকাহত এ হার্ডহিটার!
আসিফকে দলে নিতে বাদ পড়েছেন ওপেনার আবিদ আলি। গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন পাকিস্তান জাতীয় দলের প্রধান নির্বাচন ইনজামাম-উল হক। কিন্তু সদ্য মেয়েকে হারানো ব্যাটসম্যান কি বিশ্বকাপে খেলবেন? শোক কাটিয়ে তার পক্ষে কতটা সম্ভবপর হবে মাঠের ক্রিকেটে মনঃসংযোগ করা? এ ধরনের প্রশ্ন ওঠে।
তবে তাতে জল ঢেলে দেন ইনজামাম। তিনি বলেন, আসিফ বিশ্বকাপের আগেই দলে যোগ দেবেন। ফিনিশিং টাচের জন্য তাকে আমাদের দরকার। প্রয়োজনে তার জন্য শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত অপেক্ষা করা হবে। দলে ফেরার ব্যাপারে সবুজ সংকেতও দিয়েছেন হার্ডহিটার ব্যাটসম্যান।
বিশ্বকাপের জন্য ঘোষিত ১৫ সদস্যের প্রাথমিক দলে ছিলেন না আসিফ। তবে সদ্য সমাপ্ত ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজে দুর্দান্ত করায় পরিবর্তিত স্কোয়াডে সুযোগ পেয়েছেন তিনি। মূল লড়াইয়ের আগে দুটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবেন সরফরাজরা। সেসব ম্যাচে তাকে নিয়েই নামতে চান তারা। প্রস্তুতি ম্যাচে না পেলেও মূল টুর্নামেন্টে এ পাওয়ার হিটারকে তাদের চাই-ই চাই। দরকারে ম্যাচের আগ পর্যন্ত অপেক্ষা করা হবে।
মেয়ে হারানোর খবর পেয়েই ইংল্যান্ড থেকে সরাসরি যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশে যাত্রা করেন আসিফ। এমন দুঃসংবাদে শোক জানিয়েছেন অনেকেই। পিএসএলে তার দল ইসলামাবাদ ইউনাইটেড ছাড়া সতীর্থরা তাকে সান্ত্বনা জানান। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী এবং বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক ইমরান খানও টুইটবার্তায় ২৭ বছর বয়সী ক্রিকেটার ও তার পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন।