বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাঁর সন্তান সজীব ওয়াজেদ জয় আর মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ হোসেন পুতুল। জাতির পিতার নাতি-নাতনি দুজনই স্ব স্ব ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত। তথ্য প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ জয় কয়েক বছর আগে আওয়ামী লীগের সদস্যপদ নিলেও রাজনীতিতে ততটা সক্রিয় নন। তবে প্রধানমন্ত্রীর তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। এই কাজে তাঁর সক্রিয়তা রাজনীতির চেয়ে অনেক বেশি দৃশ্যমান। মেয়ে সায়মা হোসেন পুতুল অটিজম নিয়ে কাজ করে ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নজর কেড়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী ছাড়া দেশের অন্য রাজনীতিবিদদের সন্তানরা কে কি করছেন? দেখা যায় বেশিরভাগ রাজনীতিবিদদের সন্তানরাই পরিনত বয়সে রাজনীতি থেকে দূরেই আছেন। তেমন কয়েকজনের খোঁজ দেওয়া হল:
ড. কামাল হোসেন: দুই মেয়ের জনক ড. কামাল হোসেন। বড় মেয়ে সারা হোসেন একজন ব্যারিস্টার। ছোট মেয়ে দিনা হোসেন চলচ্চিত্র নিয়ে কাজ করেন। দুই মেয়ের স্বামীই ব্রিটিশ নাগরিক।
তোফায়েল আহমেদ: তোফায়েল আহমেদের একমাত্র মেয়ে মুন্নী একজন চিকিৎসক। আর মন্ত্রীর জামাতা হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. তৌহিদুজ্জামান তুহিন।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর: মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দুই মেয়ের জনক। তার বড় মেয়ে মির্জা শামারুহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করে এই প্রতিষ্ঠানেই শিক্ষকতা করেছেন। বর্তমানে তিনি অস্ট্রেলিয়ায় পোস্ট ডক্টরাল ফেলো হিসেবে কর্মরত আছেন। ছোট মেয়ে মির্জা সাফারুহও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করেছেন। তিনি বর্তমানে ঢাকার একটি স্কুলে শিক্ষকতা করছেন।
আবুল মাল আবদুল মুহিত: তিন সন্তানের জনক তিনি। মেয়ে বেগম সামিনা মুহিত একজন ব্যাংকার এবং মুদ্রানীতি ও আর্থিক খাতের বিশেষজ্ঞ হিসেবে নিউইয়র্কে কর্মরত। বড় ছেলে সাহেদ মুহিত স্থপতি ও তথ্যপ্রযুক্তিবিদ হিসেবে ঢাকায় কর্মরত। আর ছোট ছেলে সামির মুহিত যুক্তরাষ্ট্রের হিউস্টনে শিক্ষকতা করছেন।
নুরুল ইসলাম নাহিদ: দুই মেয়ে, নাদিয়া নন্দিতা ইসলাম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক এবং নাজিয়া সামান্থা ইসলাম বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা। তাঁরা নিজ নিজ কর্মক্ষেত্রে সফলতা অর্জন করেছেন।
প্রয়াত সৈয়দ আশরাফ: এক মেয়ে রীমা ইসলাম। পড়াশুনা ও কাজে দক্ষতার পরিচয় দিয়ে যুক্তরাজ্যের অন্যতম রিটেইল চেইন টেসকোর বড় পদে কর্মরত তিনি। সৈয়দ আশরাফের মৃত্যুর পর গুঞ্জন উঠেছিল তিনি রাজনীতিতে সক্রিয় হবেন। কিন্তু সে পথে হাটবেন বলে আপাতত মনে হচ্ছে না।
খন্দকার মোশাররফ হোসেন: ছেলে খন্দকার মাশরুর হোসেন মিতু। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মেয়ে পুতুলের জামাতা। তিনি ফরিদপুর জেলা থেকে কাউন্সিলর পদে নির্বাচিত হন।
আসাদুজ্জামান নূর: সফল অভিনেতা থেকে হয়ে উঠেছেন একজন সার্থক মন্ত্রী। তাঁর ছেলে সুদীপ্ত আর মেয়ে সুপ্রভা। ছেলে লন্ডনের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিবিএ করছেন। আর মেয়ে এ লেভেল শেষে করেছেন। ডেইলি স্টারে লেখালেখি করেন মেয়ে সুপ্রভাত।
রাশেদ খান মেনন: এক মেয়ে ও ছেলের জনক তিনি। মেয়ে ড. সুবর্ণা খান ক্যান্সার সেলের ওপর পিএইচডি করে বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে কর্মরত। পুত্র আনিক রাশেদ খান আইনের ছাত্র।
ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন: চার ছেলেমেয়ের মধ্যে একজন রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। অন্য তিন ছেলেমেয়ে রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত নন। তাঁর মেজ ছেলে আইটি ইঞ্জিনিয়ার মাহবুবুর রহমান রুহেল পারিবারিক ব্যবসা দেখাশোনা করেন। পাশাপাশি জড়িত রয়েছেন রাজনীতিতে। বর্তমানে তিনি উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক। বড় ছেলে সাবেদুর রহমান ও ছোট ছেলে আমিনুর রহমান পারিবারিক ব্যবসায় জড়িত। একমাত্র মেয়ে রিপা পেশায় একজন চিকিৎসক।
নুরুল ইসলাম বিএসসি: সাত সন্তানের কেউই রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত নন। তাঁর পাঁচ ছেলে সবাই বিদেশের উচ্চতর ডিগ্রিধারী। এরা হলেন, মুজিবর রহমান, সাইফুল ইসলাম, জাহেদুল ইসলাম, কামরুল ইসলাম ও ওয়াহিদুল ইসলাম। তাঁরা সবাই পারিবারিক ব্যবসা দেখাশোনা করেন। দুই মেয়ে শাকিলা জাহান ও ডা. মনোয়ারা জাহান মুন্নী।
হাসানুল হক ইনু: ছেলে প্রকৌশলী শমিত আশফাকুল হক। কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং এ স্নাতক পাশ করেছেন তিনি।
আ হ ম মুস্তফা কামাল: কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের মাধ্যমে ক্রিকেটের মাঠে অতি পরিচিত মুখ নাফিসা কামাল। দেশব্যাপী নাফিসার পরিচিতি কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের কর্ণধার হিসেবে।
মাহমুদুর রহমান মান্না: দুই ছেলে, নিলয় মান্না ও নীলম মান্না। লেখাপড়া করছেন কানাডায়। পাশাপাশি সেখানে কাজ করছেন তারা।
মির্জা আব্বাস: আফরোজা আব্বাস ও মির্জা আব্বাসের একমাত্র মেয়ে নাবিলা মির্জার (বর্ষা) পড়ালেখা করেছেন বোস্টন ইউনিভার্সিটি থেকে। সেখানেই স্বামীসহ সেটেল্ড।
গয়েশ্বর চন্দ্র রায়: একমাত্র পুত্র অমিতাভ রায় চৌধুরী আইন পেশায় জড়িত। তবে তার স্ত্রী নিপুন রায় বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।
সূত্র: বাংলা ইনসাইডার