সন্তানেরা খোঁজ নেয় না ৭০ বছর বয়সী মোহাম্মাদ জামিলুর রহমানের। ধার দেনা করে দুই মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন। দুই মেয়েকে বিয়ে দিতে গিয়ে দেড় লাখ টাকার ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েন জামিলুর। বৃদ্ধ বয়সে কোনোভাবেই আর সেই ঋণ পরিশোধ করতে পারছিলেন না। অবশেষে ঋণ পরিশোধের জন্য কিশোরগঞ্জের নিজ বাড়ি ছেড়ে চলে আসেন রাজধানীতে।
ঢাকায় এসে ভাড়া নিয়ে এক পায়ে রিকশা চালানো শুরু করেন। তবে রিকশা চালিয়ে যে টাকা রোজাগার করেন তা দিয়ে নিজের থাকা খাওয়ার পর কোনোভাবেই ঋণ পরিশোধ করতে পারছিলেন না।
এমন সময় কেউ একজন তাকে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীর সঙ্গে দেখা করে ঘটনা জানাতে বলেন। এরপর জামিলুর রহমান ১৫ রমজান দেখা করেন গোলাম রাব্বানীর সঙ্গে। বলেন তার অসহায়ত্বের কথা।
সব জানার পর ঘটনা সত্য হলে সমাধানের আশ্বাস দেন গোলাম রাব্বানী। ভাড়ায় চালিত রিকশার বদলে একটি রিকশা কিনে দেয়ারও প্রতিশ্রুতি দেন। এরপরই ঘটনার সত্যতা যাচাইয়ে নেমে পড়েন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
শুক্রবার এসব কথা জানিয়ে গোলাম রাব্বানী বলেন, ঘটনাটি আমাকে জানানোর পর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছোট ভাই ইব্রাহিম হোসেনকে সত্যতা যাচাই করার নির্দেশনা দিই। খোঁজ খবর নিয়ে দেখা যায় ঘটনা সত্য। এরপর ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা মিলে একটি রিকশা কেনা হয় জামিলুর রহমান চাচার জন্য। বৃহস্পতিবার দুপুরে পরীবাগ এলাকায় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে একটি ডিজিটাল রিকশা তুলে দেয়া হয় জামিলুর রহমানের হাতে। এখন থেকে নিজের রিকশা চালিয়ে ঋণ পরিশোধ করার চেষ্টা করবেন তিনি।
এদিন কিছুদূর জামিলুর রহমানকে রিকশায় তুলে নিয়ে রিকশাও চালান ছাত্রলীগ সম্পাদক। এরপর রিকশাটি জামিলুর রহমানের হাতে তুলে দেয়ার সময় ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য দোয়া প্রার্থনা করা হয়।
এ সময় জামিলুর রহমান গোলাম রাব্বানীকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে ফেলেন। বলেন, চিরঋণী থাকব আমি। এবার আমি আমার ঋণ হয়তো পরিশোধ করতে পারব।