ব্যাটে-বলে দুরন্ত পারফরম্যান্স করে বিশ্বকাপে নিজেদের পঞ্চম ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে জয় এনে দিয়েছেন সাকিব আল হাসান। এরপর থেকেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। বাংলাদেশের সাকিব আল হাসানই কি সর্বকালের বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার?
হ্যাডলি-বোথাম-কপিল-ইমরান বা গ্যারি সোবার্সকে পিছনে ফেলে সেরার সেরা অলরাউন্ডারের তকমা কেড়ে নিলেন সাকিব? এ বিষয়ে ক্রিকেট রেকর্ড কী বলছে?
স্যর রিচার্ড হ্যাডলি
পিচ যেমনই হোক না কেন, নিউজিল্যান্ডের স্যার রিচার্ড হ্যাডলির ফাস্ট বোলিং খেলা সত্যিই মুশকিল ছিল। বা-হাতি ব্যাটসম্যান হিসাবে খেললেও বল করতেন ডান হাতে। ৮৬টি টেস্টে ৪৩১ উইকেট নিয়েছেন। সঙ্গে যোগ করুন লোয়ার অর্ডারে নেমে ৩১২৪ রান। সেরা স্কোর অপরাজিত ১৫১ রান। ওডিআই-তে ১১৫ ম্যাচে রয়েছে ১৭৫১ রান এবং ১৫৮ উইকেট।
স্যার ইয়ান বথাম
১০২ টেস্টে ইংল্যান্ডের স্যার ইয়ান বথাম করেছেন ৫২০০ রান এবং ৩৮৩ উইকেট। ১১৬টি ওডিআই-তে রয়েছে ২১১৩ রানের সঙ্গে ১৪৫ উইকেট। তার ফাস্ট মিডিয়াম বোলিংয়ে ধরাশায়ী হননি এমন ব্যাটসম্যান কমই আছেন। আর লো়য়ার অর্ডারে বথামের ব্যাটিং দলকে বহু বার স্মরণীয় জয় এনে দিয়েছে।
কপিল দেব
১৯৮৩-তে ইংল্যান্ডের মাটিতে দেশকে প্রথম বার বিশ্বকাপ এনে দিয়েছিলেন ক্যাপ্টেন কপিল দেব। অলরাউন্ডার হিসাবে বথাম-ইমরান-হ্যাডলির সঙ্গে একসারিতে নাম উঠত তার। ১৩১ টেস্টে ৫২৪৮ রান ছাড়াও নিয়েছেন ৪৩৪ উইকেট। ২২৫টি ওডিআই-তে ৩৭৮৩ রান ছাড়াও তুলে নিয়েছেন ২৫৩ উইকেট। ঝোড়ো ব্যাটিংয়ের সঙ্গে আউটসুইংয়ের জন্য নাম কুড়িয়েছিলেন কপিল।
ইমরান খান
ক্যাপ্টেন হিসাবে পাকিস্তান ক্রিকেটকে অন্য মাত্রা দিয়েছিলেন ইমরান আহমেদ খান নিয়াজি। ১৯৯২-তে তার নেতৃত্বেই বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন হয় পাকিস্তান। ফাস্ট বোলার হিসাবে এই অক্সফোর্ড স্নাতকের ঝুলিতে রয়েছে ১৮২ ওডিআই উইকেট (১৭৫ ম্যাচে)। ব্যাটে অবদান ৩৭০৯ রান। আর ৮৮ টেস্টে করেছেন ৩৮০৭ রান। সঙ্গে নিয়েছেন ৩৬২ উইকেট
জ্যাক ক্যালিস
ব্যাটে-বলে সমান বিধ্বংসী ছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার জ্যাক ক্যালিস। ১৬৬ টেস্টে ১৩২৮৯ রানের পাহাড়ের সঙ্গে তার ঝুলিতে রয়েছে ২৯২ উইকেট। ৩২৮ ওডিআই খেলে তার ফাস্ট মিডিয়াম বোলিংয়ে তুলে নিয়েছেন ২৭৩ উইকেট। সঙ্গে করেছেন ১১৫৭৯ রান। ২৫টি টি-২০তে ৬৬৬ রান ছাড়াও রয়েছে ১২ উইকেট।
স্যার গারফিল্ড সেন্ট অব্রান সোবার্স
অনেকের মতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের স্যার গারফিল্ড সেন্ট অব্রান সোবার্সই সর্বকালের সেরা অলরাউন্ডার। ফাস্ট মিডিয়াম-অফস্পিন-লেগব্রেক, বোলিংয়ের সব নমুনাই দেখিয়েছেন এই বাঁ-হাতি। ৯৩ টেস্টে ২৩৫ উইকেট ছাড়া রয়েছে ৮০৩২ রান। ১৯৫৮-এ পাকিস্তানের বিরুদ্ধে টেস্টে করেছিলেন অপরাজিত ৩৬৫ রান। ’৯৪-এ ৩৭৫ রান করে সে রেকর্ড় ভেঙেছিলেন ব্রায়ান লারা।
সাকিব আল হাসান
আইসিসি র্যাঙ্কিংয়ে ওডিআই অলরাউন্ডার হিসাবে সাকিব আল হাসান রয়েছেন শীর্ষে। ২০২ ওডিআইতে করেছেন ৬১০১ রান। বাঁ-হাতি অর্থডক্স বোলিংয়ে তুলে নিয়েছেন ২৫৪ উইকেট। ৫৫ টেস্টে ৩৮০৭ রানের সঙ্গে রয়েছে ২০৫ উইকেট। টি-২০তে করেছেন ১৪৭১ রান (৭২ ম্যাচে)। এবং রয়েছে ৮৮ উইকেট।
যে যাই বলুক, রেকর্ডের দিকে তাকালে বাস্তবতা তো কেবল সাকিবময়। আর কি চায় ক্রিকেট বিশ্ব।