ক্যারিয়ারে ব্যাট হাতে সেরা ফর্মে রয়েছেন সাকিব আল হাসান। দুটি করে সেঞ্চুরি আর ফিফটি করে এরই মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রানসংগ্রাহক বাংলাদেশের এ অলরাউন্ডার। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ম্যাচে জয়ের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে শুরু করে প্রায় সর্বত্রই চলছে সাকিবের প্রশংসা। প্রভাবশালী ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য টেলিগ্রাফ সাকিবের প্রশংসা করে বলছে, বিশ্বকাপের ১৫০ ক্রিকেটারের মধ্যে বাংলাদেশের সাকিব আল হাসান সেরা।
ক্রিকেটারদের পারফরম্যান্স বিশ্লেষণ করে দ্য টেলিগ্রাফ বলছে, এ বছর বিশ্বকাপে অংশ নেওয়া ১৫০ জন খেলোয়াড়ের মধ্যে শুধু একজনই যুক্তিসংগতভাবে তাঁর দেশের সেরা ব্যাটসম্যান ও বোলার। তিনি সাকিব আল হাসান, ২০১৯ বিশ্বকাপে এ পর্যন্ত অবিসংবাদিত সেরা খেলোয়াড়।
টেলিগ্রাফের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।, সাকিবকে প্রাপ্য মূল্য না দেয়ার একটা প্রবণতা আছে। এটা অদ্ভুত ও রহস্যময়। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট, আইপিএলসহ বিভিন্ন লিগে তার খেলা উপভোগ করেন ভক্ত-সমর্থকেরা। ২০১৫ সালে তিন ফরম্যাটে আইসিসি র্যাংকিংয়ে শীর্ষে ছিলেন তিনি। সাকিব ক্রিকেটে কোনো ঐতিহ্যবাহী অঞ্চলের প্রতিনিধিত্ব করেন না। তাই তার বহুবিধ প্রতিভাকে অনেকে সহজে উপেক্ষা করেন। অন্যতম উদাহরণ, ২০১১ সালের পর টাইগারদের সঙ্গে কেবল একটি ওয়ানডে খেলেছে অস্ট্রেলিয়া।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে ২০০০ সালে দুটি ঘটনা বাংলাদেশের ক্রিকেটকে বর্তমান জায়গায় নিয়ে এসেছে। ওই বছর টেস্ট মর্যাদা পায় দলটি। মাত্র ১৩ বছর বয়সে বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে (বিকেএসপি) ভর্তি হন সাকিব। ৬ বছর পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট আঙিনায় অভিষেক হয় তার। স্বভাবজাত ব্যাটিং ও বাঁহাতি বিচক্ষণ স্পিনে শিগগির দলের অপরিহার্য সদস্যে পরিণত হন তিনি।
সাকিবের পারফরর্মেন্স বিশ্লেষণ করে টেলিগ্রাফের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাকিব সবসময় আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে খেলেন। ধারাবাহিকভাবে জ্বলে ওঠেন। তবুও ২০১৪ সালে কোচের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করে ছয় মাস নিষিদ্ধ হন তিনি। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডই (বিসিবি) তার ওপর এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। তবে সাকিব এখন পরিণত। টেস্ট ও টি-টোয়েন্টিতে দলকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন তিনি। অধিনায়ক হিসেবেও সফল বাংলাদেশের নয়নমণি। দলের সবচেয়ে কঠিন পরিস্থিতি সামাল দেন সাকিব। পাওয়ার প্লেতে নিয়মিত বল করেন। শেষদিকেও তার বোলিংয়ের নজির আছে। ওয়ানডেতে এখন তিন নম্বরে ব্যাটিং করছেন। আগে করতেন মিডলঅর্ডারে। দুই জায়গাতেই সফল। বিশ্বকাপে ইংল্যান্ড ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টানা সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন তিনি।
টেলিগ্রাফ সবশেষে উল্লেখ করেছে, সাকিবের উদযাপন সাদামাটা। উইন্ডিজের বিপক্ষে ৩২২ রানের পাহাড়সম লক্ষ্য তাড়া করেও তার উদযাপন ছিল খুবই সরল-সহজ। লাল-সবুজ জার্সিধারীদের ঐতিহাসিক জয় এনে দেয়ার পর নন-স্ট্রাইকে থাকা লিটন দাসের সঙ্গে কেবল হাত মেলান। প্রত্যেক দলের বিপক্ষে নিজের সেরাটা দেয়াই যে তার ধ্যানজ্ঞান।