প্রতিটি বিশ্বকাপ শেষেই বেশ কিছু খেলোয়াড় দলের ভেতর নিজের শূন্যতা রেখে যান। অনেকেই অবসরে যান। প্রতি বিশ্বকাপের পরই বিভিন্ন খেলোয়াড়ের পেশাগত জীবনের ইতি ঘটিয়ে দেন।
এ নিয়ে বিশেষ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ভারতের ক্রীড়াভিত্তিক জনপ্রিয় সংবাদমাধ্যম ক্রিকট্রেকার।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, কেউ কেউ দলের প্রত্যাশিত পারফরমেন্স রাখতে না পারায় হতাশা থেকে খেলা ছাড়ার ঘোষণা দেন। সেদিক থেকে চলতি বিশ্বকাপও ভিন্ন কিছু হবে না।
আগামী দুয়েক মাসের মধ্যে ক্রিকেটের বড় বড় কয়েকটি নাম খেলা থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেবেন।
চলতি আসরের ১০টি দলের মধ্যে কেবল বাংলাদেশ ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলে তাদের ২০১৫ সালের ক্যাপ্টেন রয়েছেন। খেলাধুলায় ক্রান্তিকাল খুবই স্বাভাবিক একটি বিষয়।
কিন্তু আধুনিক যুগের সংস্করণে স্বল্প-সময়ের ব্যবধানে এমনটা প্রায়ই ঘটছে। কারণ বহু দলের জন্য দীর্ঘ সময়ের পরিকল্পনাকে একটি বিকল্প হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে না।
বিশ্বকাপের পর দলগুলোর অধিনায়কদের তালিকায় একটা বড় পরিবর্তনের সাক্ষ্য হতে যাচ্ছি আমরা। এখানের পাঁচটি দল যারা এই বিশ্বকাপের পর তাদের অধিনায়কে পরিবর্তনের আনার কথা ভাবছে।
আফগানিস্তান
টুর্নামেন্টের অল্প কয়েকদিন আগে অধিনায়ক হিসেবে আসগার আফগানকে সরানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন নির্বাচকরা।
যদিও গুলবাদিন নায়েব বহুদিন ধরে আফগান ক্রিকেটকে সেবা দিয়ে আসছেন, কিন্তু দলীয় নেতৃত্বের জন্য তিনি উপযুক্ত নন। তার নেতৃত্বে এখন পর্যন্ত বিশ্বকাপে ৫ ম্যাচ খেলে কোনো জয় পায়নি।
এশিয়ার উদীয়মান এ দলটি প্রথম তিন ম্যাচে প্রত্যাশার চেয়েও বাজে খেলেছে। কাজেই গুলবাদিন নায়েবের নেতৃত্বের ক্যারিয়ার নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। যদি তিনি সরে যাওয়ার ইচ্ছা পোষণ করেন, তবে এ ক্ষেত্রে বেশ কয়েকজন এগিয়ে রয়েছেন।
আফগান ক্রিকেটের অন্যতম একজন সেরা ব্যাটসম্যান হচ্ছে রহমত শাহ। নেতৃত্ব নির্বাচনে অভিজ্ঞ রশিদ খানও সামনের সারিতে রয়েছেন। এছাড়া হাশমাতুল্লাহ শাহিদি ও জাদরানও রয়েছেন।
দক্ষিণ আফ্রিকা
যদি দক্ষিণ আফ্রিকা সেমিফাইনালের আগেই যে বিদায় নেবে সেটা বিগত ম্যাচগুলোর ফলই আভাস দিচ্ছে। কাজেই ফাপ ডু প্লেসিসের মাঝে খুব বেশি ডুবে যাওয়ার কিছু নেই। তাদের পারফরমেন্সে উন্নতি না হলে ৩৪ বছর বয়সী এ খেলোয়াড় পদত্যাগ করতে পারেন।
এতে দলের নির্বাচকদের জন্য আর কোনো বিকল্প না রাখলেও তাদের যোগ্য উত্তরসূরি খুঁজে বের করতে হবে। সেক্ষেত্রে আইডেন মারকারেম ভালো বিকল্প হতে পারেন। কিন্তু এই মেধাবী তরুণের ওপর অতিরিক্ত চাপ খারাপ ফলও বয়ে আনতে পারে।
শ্রীলংকা
শ্রীলংকার ক্রিকেট এখন কোন দিকে যাচ্ছে, তা আন্দাজ করা খুবই কঠিন। তাদের ব্যাটিং, বোলিং ও ফিল্ডিংয়ে দলটির কোনো ঝলক নেই বললেই চলে। তাদের মর্যাদার সঙ্গে এই পারফরমেন্স যায় না। যদিও অধিনায়কত্বের ক্ষেত্রে তাদের অনেক সম্ভাব্য প্রার্থী রয়েছেন।
টুর্নামেন্ট শেষ হয়ে যাওয়ার পর দলটির বর্তমান অধিনায়ক দিমুথ করুণারত্নে সম্ভবত আর নেতৃত্বে থাকছেন না। যদি এমনটাই ঘটে তবে তারা কি ডিনেশ চন্ডিমালের দিকে ফিরে যাবে, নাকি কুশাল মেন্ডিসের মতো তারুণ্য বেছে নেবে।
পাকিস্তান
সবুজ জার্সির দলটির অনেক খেলোয়াড়কেই চলতি বিশ্বকাপের পর তাদের ক্যারিয়ারের ইতি টানতে হবে। মোহাম্মদ হাফিজ, শোয়েব মালিক ও অধিনায়ক সরফরাজ আহমেদকেও সরে যেতে হবে।
দলটির সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে, সরফরাজ নিয়মিতভাবে ব্যাট হাতে অবদান রাখতে পারছেন না। অধিকাংশ সময় মিডল অর্ডারের দায়িত্ব নিতে হয় তাকে।
সরফরাজ পদত্যাগ করলে বাবর আজম তার স্থলাভিষিক্ত হতে পারেন। এছাড়া ফখর জামানও রয়েছেন। পাকিস্তান সুপার লীগে তিনি লাহোর কালান্দার্সের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। এছাড়া ইমাদ ওয়াসিমও ভালো বিকল্প হতে পারেন।
বাংলাদেশ
সম্ভবত সবার কাছে বিষয়টা পরিষ্কার যে মাশরাফি বিন মুর্তজা তার শেষ বিশ্বকাপ খেলছেন।
তার মতো একজন প্রেরণাদায়ক খেলোয়াড়ের বিকল্প খুঁজে পাওয়া খুবই কঠিন কাজ হবে। নতুন কাউকে তার স্থলাভিষিক্ত করতে নির্বাচকদের হিমশিম খেতে হবে, এটাই স্বাভাবিক।
এ দায়িত্ব পাওয়ার ক্ষেত্রে এগিয়ে রয়েছেন সাকিব আল হাসান ও মুশফিকুর রহিম। কিন্তু তারা এ ব্যাপারে যে খুব আগ্রহী তা বলা যাচ্ছে না।