যাত্রা পথে হঠাৎ করে ঘুমিয়ে যাওয়া ঘুমকাতুরেদের একটা অভ্যাস। তবে বাসে, ট্রেনে বা বিমানে আরাম করে ঘুমে যাওয়ার অভ্যাসটা কিন্তু মোটেও ভালো নয়। ঘটে যেতে পারে যেকোনো দুর্ঘটনা। যেমনটি ঘটেছে টিফানি অ্যাডামস নামে এক নারী যাত্রীর জীবনে।
তাকে বহনকারী বিমানটি অবতরণের পর তাকে ঘুমন্ত অবস্থায় রেখেই দরজা-জানালা বন্ধ করে চলে যায় বিমানের কর্মীরা। পরে ঘুম থেকে জেগে তিনি যা দেখেন তা সেই দুঃসহ স্মৃতি আজও তাড়া করে তাকে। এই ঘটনার পর থেকে প্রায় রাতে ভয়াবহ দুঃস্বপ্ন দেখেন তিনি।
ওইদিনের ঘটনা প্রসঙ্গে ওই নারী বলেন, ‘এয়ার কানাডার একটি বিমানে চড়ে কিউবেক থেকে টরোন্টো যাচ্ছিলেন তিনি। যাত্রা পথে ঘুমিয়ে পড়েন। হঠাৎ ঘুম ভাঙে প্রচণ্ড ঠান্ডায়। ঘুম থেকে উঠে দেখেন চারদিকে ঘুটঘুটে অন্ধকার। আশপাশে কেউ নেই। শুরুতে খুব ঘাবড়ে যান। কী ঘটেছে সেটি বুঝতে কিছুক্ষণ সময় লেগে যায়। পরে যা বোঝেন তা হলো বিমান অবতরণের পর বিমানের ক্রু ও বিমানবন্দরের কর্মীরা সকল ধরনের কার্যক্রম শেষ করে ভুল করে ঘুমন্ত অবস্থায় তাকে বিমানের ভেতরে আটকে রেখেই সবকিছু বন্ধ করে চলে গেছেন।’
ঘুম থেকে উঠে দেখেন তখনো তার সিটবেল্ট বাঁধা রয়েছে। বিমানের যাত্রা শেষ হওয়ার পর বিমান ত্যাগ করার আগে পুরো বিমানের সকল অংশ ভালো করে দেখে তবেই বিমানের কর্মীদের বের হওয়ার কথা। তবে ওই দিন ভুল করে বিমানকর্মীরা তাকে বিমানে রেখেই চলে যান।
টিফানি অ্যাডামস বলেন, ‘বিমানটি টরোন্টো পেয়ারসন বিমানবন্দরে অবতরণের পর কয়েক ঘণ্টা ঘুমন্ত অবস্থায় বিমানে ছিলেন তিনি। সেটি রানওয়েতে পার্ক করা ছিল। পুরো বিষয়টি বুঝতে পেরে প্রথমে মোবাইল ফোন হাতড়ে বের করে সেটি দিয়ে এক বান্ধবীকে জানান তার অবস্থার কথা। কিন্তু কোনো রকমে কথা শেষ করতেই ফোনের চার্জ শেষ হয়ে যায়।’
ঘুটঘুটে অন্ধকারে হাতড়াতে হাতড়াতে ককপিটে যান তিনি। সেখানে একটি টর্চ-লাইট খুঁজে পান। সেটি জ্বালিয়ে বাইরের লোকদের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করতে থাকেন। যাত্রীদের সুটকেস আনা নেয়া করা হয় এ রকম একটি ছোট গাড়ির একজন চালক হঠাৎ সেই আলো দেখতে পান। তবে বিমানের মধ্যে এ রকম আলো দেখে ভড়কে যান ওই ব্যক্তি। ততক্ষণে টিফানি অ্যাডামসের বান্ধবী ডেনা ডেল বিমানবন্দরের কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানাতে সক্ষম হন।
গত ৯ জুনের এই ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছে এয়ার কানাডা কর্তৃপক্ষ। তারা বিষয়টি তদন্ত করছে বলে জানিয়েছে।
সূত্র: বিবিসি বাংলা