২০০৭ সালের বিশ্বকাপে প্রথমবারের মতো ভারতের মুখোমুখি হয়েছিল বাংলাদেশ। আর বিশ্বকাপে প্রথম দেখাতেই তাদের হারিয়ে চমক সৃষ্টি করেছিল হাবিবুল বাশারের দল। একই সঙ্গে তারা টুর্নামেন্ট থেকেই বিদায় করে দিয়েছিল পরাশক্তি ভারতকে। এরপর অবশ্য আরও দুইবার বিশ্বকাপের মঞ্চে খেলেছে ভারত-বাংলাদেশ।
যেখানে আর সুবিধা করতে পারেনি বাংলাদেশ। ২০১১ সালের বিশ্বকাপে ঢাকায় উদ্বোধনী ম্যাচে ভারতের কাছে ৮৭ রানে পরাজিত হয়েছিল সাকিব আল হাসানের নেতৃত্বাধীন দল। পরবর্তীতে ২০১৫ সালের বিশ্বকাপে মেলবোর্নে ১০৯ রানে বাংলাদেশকে হারায় ভারত।
আজ মঙ্গলবার (২ জুলাই) আবারও সেই ভারতকে প্রতিপক্ষ হিসেবে পাচ্ছে বাংলাদেশ। বার্মিংহামের এজবাস্টনে বাংলাদেশ সময় বিকেল সাড়ে তিনটায় মুখোমুখি হবে দুইদল।
দ্বাদশ বিশ্বকাপে এমন এক সমীকরণের সামনে দাঁড়িয়ে আছে বাংলাদেশ, আসরে টিকে থাকতে হলে হারা যাবে না একটি ম্যাচও। রাউন্ড রবিন লিগের বাকি ম্যাচ দুটি জিতলেও যে সেমিফাইনাল নিশ্চিত হবে এমনটিও নয়। তবে সেমিফাইনালের যে স্বপ্নজাল বুনে টাইগাররা পা রেখেছিল ইংল্যান্ডে, তা অক্ষত রাখতে ভারতকে হারানোর কোনো বিকল্প নেই। তাই বাংলাদেশের কাছে প্রতিটি ম্যাচই এখন নকআউট পর্বের মত। ভারতের কাছে হেরে গেলেও পাকিস্তানকে হারানোর সুযোগ অবশ্য থাকবে। তবে সেমির দৌড় থেকে ছিটকে সেটি হয়ে উঠবে কেবলই নিয়মরক্ষার ম্যাচ।
বাংলাদেশকে শেষ চারের স্বপ্ন জিইয়ে রাখতে হলে হারাতে হবে বিশ্বের অন্যতম ভয়ঙ্কর দলটিকে। বিরাট কোহলির দলটি সর্বশেষ ম্যাচে ইংল্যান্ডের কাছে দৃষ্টিকটুভাবে হারার কারণে কিছুটা অস্বস্তিতে থাকবে। তবে সেই অস্বস্তি মোটেও আফগানিস্তানকে হারিয়ে দীর্ঘ বিরতির পর মাঠে ফেরা বাংলাদেশের সেমির আগে ছিটকে পড়ার সংশয়ের থেকে বেশি মাত্রার নয়!
ইংল্যান্ড-ভারত ম্যাচের উইকেট এই ম্যাচের আগেও দিচ্ছে রান-বন্যার ইঙ্গিত। রৌদ্রজ্জ্বল আবহাওয়ায় ব্যাটসম্যানরা ছড়ি ঘোরাতে পারেন বাউন্ডারির ফুলঝুরি ছুটিয়ে। প্রতিপক্ষ ব্যাটসম্যানদের কোণঠাসা করতে বাংলাদেশ বোলিং আক্রমণে আনতে পারে পরিবর্তন। সেক্ষেত্রে রুবেল হোসেনকে সুসংবাদ এনে দিতে মেহেদী হাসান মিরাজের একাদশের বাইরে থাকার সম্ভাবনা বেশি, যদি বার্মিংহামের সকাল মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে কোনো দুঃসংবাদ না দেয়।
একটি হারের পর একাদশ নিয়ে ব্যবচ্ছেদে নামা দুইবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ভারতও নিতে পারে পরিবর্তনের আশ্রয়। রবীন্দ্র জাদেজা ও ভুবনেশ্বর কুমারকে একাদশে জায়গা দিতে হলে কূলদ্বীপ যাদব ও যুযবেন্দ্র চাহালদের কাউকে বিসর্জন দিতে হতে পারে মাঠে নামার মোহ। অবশ্য ভুবনেশ্বরের ফেরা নিশ্চিত হলেও বাংলাদেশের বিপক্ষে ভালো রেকর্ডধারী জাদেজার কপাল নাও খুলতে পারে এই ম্যাচে। তবে ‘বিগ ম্যাচ’ জিতে নিজেদের শেষ চারে অবস্থান নিশ্চিত করতে মরিয়া থাকবে ভারত; আসরে প্রতিপক্ষের কাছে খুনে হিসেবে আবির্ভূত হওয়া বাংলাদেশকে যেকোনো মূল্যে হারাতেই চাইবেন মহেন্দ্র সিং ধোনিরা- এতে নেই কোনো সন্দেহ। সাকিব আল হাসানের কাঁধে ভর করে চলা বাংলাদেশের উদ্যমী ক্রিকেটের গর্জন তাই দিচ্ছে জমজমাট এক ম্যাচের ইঙ্গিত।
বাংলাদেশের সম্ভাব্য একাদশ
তামিম ইকবাল, সৌম্য সরকার, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম, লিটন দাস, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ/মেহেদী হাসান মিরাজ, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন, মাশরাফি বিন মুর্তজা (অধিনায়ক), মুস্তাফিজুর রহমান, রুবেল হোসেন।
ভারতের সম্ভাব্য একাদশ
লোকেশ রাহুল, রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলি (অধিনায়ক), রিশাভ পান্ট, মহেন্দ্র সিং ধোনি, কেদার যাদব, হার্দিক পান্ডিয়া, ভুবনেশ্বর কুমার, কূলদ্বীপ যাদব/যুযবেন্দ্র চাহাল, মোহাম্মদ শামি, জাসপ্রিত বুমরাহ।