বিশ্বকাপে সেমিফাইনালে টিকে থাকার লড়াইয়ে ভারতকে ৩১৪ রানে থামিয়েছে বাংলাদেশ। জিততে হলে মাশরাফিদের টার্গেট ৩১৫ রান।
বাংলাদেশ যদি এই ম্যাচে জিততে পারে তাহলে সেমির আশা টিকে থাকবে। হারলেই বিদায় নিশ্চিত হয়ে যাবে। অন্যদিকে, ভারত যদি আজ জয় পায় তাহলে তারা সেমিফাইনালে উঠে যাবে। আর হারলে তাদেরও বাদ পড়ার শঙ্কা থাকবে।
দুই দলেরই এটি অষ্টম ম্যাচ। ৭ ম্যাচ খেলে ৭ পয়েন্ট নিয়ে বাংলাদেশ এখন পয়েন্ট নিয়ে সপ্তম অবস্থানে রয়েছে। আর সাত ম্যাচ খেলে ১১ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ভারত।
এজবাস্টনে আজ টস হেরে ফিল্ডিংয়ে নামা বাংলাদেশের হয়ে বোলিং উদ্বোধন করেন অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা এবং মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। দুজনের শুরুটা দারুণ হয়েছিল। মোস্তাফিজুর রহমানের করা ৬ষ্ঠ ওভারে বড় ধাক্কা খায় বাংলাদেশ। দলীয় ১৯ রানে বিধ্বংসী ওপেনার রোহিত শর্মার দেওয়া সহজ একটা ক্যাচ হাতছাড়া করেন তামিম ইকবাল! সেই ৯ রান থেকেই বিশ্বকাপের পঞ্চম সেঞ্চুরি পূরণ করেন তিনি। জীবন পাওয়ার পর রোহিত হয়েছেন আরো আগ্রাসী। টাইগারদের বিপক্ষে ৯০ বলেই শতরানের ম্যাজিক ফিগার স্পর্শ করেন ভারতের এই ওপেনার।
রোহিত-রাহুল মিলে গড়ে তুলেন ১৮০ রানের জুটি। বোলিংয়ে এসে নিজের তৃতীয় ও ইনিংসের ৩০তম ওভারে রোহিত শর্মাকে আউট করেন সৌম্য সরকার। সৌম্যের বলে উড়িয়ে মারতে গিয়ে লিটন দাসের তালুবন্দী হন রোহিত (১০৪)।
রোহিত শর্মার বিদায়ের পর স্কোর বোর্ডে ১৫ রান যোগ হতেই আরেক ভারতীয় ওপেনার লোকেশ রাহুলকে বিদায় করেছেন রুবেল হোসেন। রুবেলের করা ইনিংসের ৩২তম ওভারের চতুর্থ বলটি রাহুলের ব্যাটের কানায় লেগে উইকেটরক্ষক মুশফিকুর রহিমের গ্ল্যাভসে জমা হয়। চলতি বিশ্বকাপে রুবেলের এটি প্রথম উইকেট।
দলীয় ২৩৭ রানের মাথায় বিদায় নেন দলপতি বিরাট কোহলি। ইনিংসের ৩৯তম ওভারে মোস্তাফিজের বলে মিড উইকেটে রুবেলের হাতে ধরা পড়েন আগের পাঁচ ইনিংসে টানা ফিফটি প্লাস ইনিংস খেলা কোহলি। সাজঘরে ফেরার আগে ২৭ বলে তিনটি বাউন্ডারিতে কোহলি করেন ২৬ রান। এক বল পরেই বিদায় নেন হার্দিক পান্ডিয়া। একই ওভারে জোড়া আঘাত হানেন ফিজ।
এরপর ভারতের ইনিংস লম্বা করতে থাকেন রিশব পান্ত এবং মহেন্দ্র সিং ধোনি। দলীয় ৪৫তম ওভারের প্রথম বলে সাকিব ফিরিয়ে দেন রিশবকে। ৪১ বলে ছয়টি চার আর একটি ছক্কায় ৪৮ রান করে মোসাদ্দেকের তালুবন্দি হন রিশব পান্ত। সাকিব নিজের শেষ ওভারে গিয়ে প্রথম উইকেট পান।
ইনিংসের ৪৮তম ওভারে মোস্তাফিজ ফিরিয়ে দেন দীনেশ কার্তিককে। ব্যক্তিগত ৮ রানে ফিজের অফকাটারে কাটা পড়েন কার্তিক, ক্যাচ তুলে দেন মোসাদ্দেকের হাতে। দলীয় ২৯৮ রানের মাথায় ষষ্ঠ উইকেট হারায় ভারত। শেষ ওভারে মোস্তাফিজ তুলে নেন মহেন্দ্র সিং ধোনিকে। সাকিবের হাতে ধরা পড়ার আগে ধোনি ৩৩ বলে চারটি বাউন্ডারিতে করেন ৩৫ রান। শেষ ওভারে রানআউট হন ভুবনেশ্বর কুমার। শেষ বলে মোস্তাফিজ বোল্ড করেন বুমরাহকে।
সাকিব ১০ ওভারে ৪১ রান খরচায় তুলে নেন একটি উইকেট। মোসাদ্দেক হোসেন ৪ ওভারে ৩২ রান দিয়ে কোনো উইকেট পাননি। সৌম্য সরকার ৬ ওভারে ৩৩ রান দিয়ে তুলে নেন একটি উইকেট। রুবেল হোসেন ৮ ওভারে ৪৮ রানে নেন একটি উইকেট। মাশরাফি ৫ ওভারে ৩৬ রান খরচায় কোনো উইকেট পাননি। সাইফউদ্দিন ৭ ওভারে ৫৯ রান দিয়ে কোনো উইকেট পাননি। মোস্তাফিজ ১০ ওভারে ৫৯ রানে তুলে নেন পাঁচটি উইকেট।
ইনজুরির কারণে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ভারতের বিপক্ষে খেলতে পারবে কি না তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ-সংশয় ছিল। শেষ পর্যন্ত আজ রিয়াদকে ছাড়াই মাঠে নেমেছে বাংলাদেশ দল। তার পরিবর্তে একাদশে ফিরেছেন সাব্বির রহমান রুম্মন।
একাদশ থেকে নাম কাটা পড়েছে মিরাজেরও। এজবাস্টনের মাঠ ছোট হওয়ায় এবং স্পিনাররা সুবিধা করতে না পারার কারণে তাকে বসিয়ে রেখে বাড়তি এক পেসার হিসেবে রুবেল হোসেনকে একাদশে অন্তর্ভুক্ত করেছে টাইগার টিম ম্যানেজমেন্ট।
পরিবর্তন এসেছে ভারতের একাদশেও। একজন স্পিনার বাড়তি পেসার খেলাচ্ছেন বিরাট কোহলি। কুলদ্বীপ যাদবের বদলের আজ দলে ফিরেছেন পেসার ভুবনেশ্বর কুমার। অফ-ফর্মে থাকা কেদার যাদবের পরিবর্তে একাদশে জায়গা করে নিয়েছেন দিনেশ কার্তিক।
দুই দলেরই এটি অষ্টম ম্যাচ। ৭ ম্যাচ খেলে ৭ পয়েন্ট নিয়ে বাংলাদেশ এখন পয়েন্ট নিয়ে সপ্তম অবস্থানে রয়েছে। আর সাত ম্যাচ খেলে ১১ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ভারত।
বাংলাদেশ যদি এই ম্যাচে জিততে পারে তাহলে সেমির আশা টিকে থাকবে। হারলেই বিদায় নিশ্চিত হয়ে যাবে। অন্যদিকে, ভারত যদি আজ জয় পায় তাহলে তারা সেমিফাইনালে উঠে যাবে। আর হারলে তাদেরও বাদ পড়ার শঙ্কা থাকবে।
বাংলাদেশ একাদশ
তামিম ইকবাল, সৌম্য সরকার, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহীম, লিটন দাস, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, মোহাম্মদ সাইফউদ্দীন, মেহেদি হাসান মিরাজ, মাশরাফি বিন মর্তুজা, মোস্তাফিজুর রহমান।
ভারতীয় একাদশ
রোহিত শর্মা, লোকেশ রাহুল, বিরাট কোহলি, ঋষভ পান্থ, এমএস ধোনি, কেদার যাদব, হার্দিক পান্ডিয়া, মোহাম্মদ শামি, কুলদিপ যাদব, ইউজবেন্দ্র চাহাল, জসপ্রিত বুমরাহ।