গণআদালতের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের বিচার করার ঘোষণা দিয়েছে ‘মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ’ নামের একটি সংগঠন। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী বক্তব্য দেওয়ার অভিযোগ তুলে এই বিচারের ঘোষণা দিয়েছে সংগঠনটি। আগামী ৮ সেপ্টেম্বর রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের শিখা চিরন্তন চত্বরে গণআদালত স্থাপন করা হবে।
শনিবার বিকেলে শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে এক মানববন্ধনে মঞ্চের পক্ষ থেকে এই কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হয়।
এর আগে, গত ৩০ জুন এক সংবাদ সম্মেলনে ওবায়দুল কাদের বলেন, ওই পরিবারের কেউ হয়তো সাম্প্রদায়িক শক্তির সাথে ছিল বা জামায়াত ইসলাম করেছে। যুদ্ধাপরাধীদের সাথে তার যোগসূত্র ছিল, ৪৭ বছর পরে এই ধরনের বিষয় দেখার কোনো যৌক্তিকতা নেই। আমরা যাদের সদস্য করব, তাদের ব্যাকগ্রাউন্ডটাই মূলত...সে আসলে কী।
এরপর গত বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলন করে বক্তব্য প্রত্যাহারে ওবায়দুল কাদেরকে ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেয় মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ নামের সংগঠনটি। এই সময়ের মধ্যে বক্তব্য প্রত্যাহার করে নিঃশর্ত ক্ষমা না চাইলে তার কুশপুত্তলিকা দাহ করার ঘোষণাও দেয় সংগঠনটি।
এরপর সে দিনই দুপুরে ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের কাছে তার বক্তব্য ‘স্পষ্ট’করে বলেন, সাম্প্রদায়িক শক্তি ও যুদ্ধাপরাধী পরিবারের কেউ আওয়ামী লীগের সদস্য হতে পারবে না৷
কিন্তু ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়ার যে দাবি মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল, তা পূরণ না হওয়ায় আজ বিকেলে শাহবাগে মানববন্ধনের আয়োজন করে সংগঠনটি।
মানববন্ধনে গণআদালত করে কাদেরের বিচারসহ ৭টি ধারাবাহিক কর্মসূচি ঘোষণা করেন মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের আহ্বায়ক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক আ ক ম জামাল উদ্দীন।
কর্মসূচিগুলো হলো- আগামী ৮ জুলাই রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি পেশ, ১০-১২ জুলাই আওয়ামী লীগকে ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ফিরিয়ে আনা’ ও ওবায়দুল কাদেরের পদত্যাগের দাবিতে ধানমণ্ডির ৩২ নম্বর থেকে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধি পর্যন্ত পদযাত্রা, ২০ জুলাই রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয় থেকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের শিখা চিরন্তন হয়ে ধানমণ্ডিতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয় পর্যন্ত পদযাত্রা, ১৫ আগস্ট সারা দেশের ইউনিয়ন-থানা-জেলা ও কেন্দ্রীয় কমিটিতে অনুপ্রবেশকারী বিএনপি-জামায়াত ও মৌলবাদীদের তালিকা প্রকাশ, ৮ সেপ্টেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে গণআদালত স্থাপন করে ওবায়দুল কাদেরের বিচার, ৩০ সেপ্টেম্বর সারাদেশে জেলা-উপজেলাওয়ারী রাজাকারদের তালিকা প্রকাশ এবং ৩০ জুন রাজাকারদের বংশধরদের তালিকা প্রকাশ।