খালেদা জিয়ার প্যারোলে মুক্তির ব্যাপারে কোন উদ্যোগ গ্রহণ, চিঠি এবং কোথাও কোনো কথাও বলেননি বলে জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
শনিবার বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকের পর সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান। বৈঠকে লন্ডন থেকে স্কাইপে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান যুক্ত ছিলেন।
কয়েকটি গণমাধ্যমে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া প্যারোলে মুক্তি নিয়ে সোদি আরব যাচ্ছে- এই রকম সংবাদের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে মির্জা ফখরুল বলেন, আমি এ সম্পর্কে কিছুই বলতে পারবো না, এই সম্পর্কে আমি কিছুই জানি না। আসলে প্যারোলের ব্যাপারে আমরা এখন পর্যন্ত কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করিনি, কোথাও কোনো চিঠিও দেয়নি, আমরা কোথাও কোনো কথাও বলিওনি। সুতরাং এটার প্রশ্নই উঠতে পারে না আমাদের দিক থেকে, আওয়ার পার্টি পয়েন্ট অব ভিউ। এটা সম্ভবত ওই যে সৃজনশীলতা আপনাদের সাংবাদিকদের সেখান থেকে বোধ হয় এসেছে আর কী।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানান, ঈদের পর খালেদা জিয়ার মুক্তি আন্দোলন আরো বেগবান করার জন্য বিভাগীয় সমাবেশগুলো দ্রুত শুরু করা হবে।
তিনি বলেন, আমরা প্রস্তাব রাখছি যে, সেটা হচ্ছে- সরকার ডেঙ্গু চিকিৎসায় জন্য প্রয়োজনীয় ভর্তুকি দেবে এবং জনগণের জন্য ডেঙ্গু জ্বর বিনামূল্যে এই পরীক্ষার ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। সরকার এতো টাকা খরচ করতে পারে বিভিন্ন সেক্টরে, প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল কোটি কোটি টাকা জমা হয়, সেটা দেখা যায় যে বিভিন্ন ব্যক্তির জন্য চলে যায়, তাদের পছন্দের ব্যক্তিদের জন্য। কিন্তু সমাজ ও রাষ্ট্রের মানুষ যখন বিপদে পড়েছে তখন তাদের জন্য এই অর্থ (ত্রাণ তহবিলের) ব্যবহার করাটা অত্যন্ত জরুরি বলে আমরা মনে করি এবং সরকারের উচিত হবে এ বিষয়ে আরো ফান্ড যোগাড় করে সেখানে বিনামূল্যে ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করার জন্য।
ডেঙ্গু রোগীর ব্যাপকতার কারণে হাসপাতালগুলোতে স্থান সংকুলান না হওয়ায় মহানগরীর কমিউনিটি সেন্টারগুলোকে চিকিৎসার কাজে ব্যবহারের দাবিও ফখরুল।
মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে, বিএনপির কেন্দ্রীয় অফিসে ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ড্যাব) সহযোগিতায় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা কেন্দ্র স্থাপন করা হবে। সেখানে থেকে অনলাইনে ডেঙ্গু রোগীদেরকে ডাক্তাররা পরামর্শ দেবেন।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, গতকাল আমার একটা বক্তব্যে কনফিউশন তৈরি হয়েছে। জরুরি অবস্থার বিষয়টি। আসলে এটি ওইভাবে আমি ঠিক বলতে চাইনি। আমি যেটা বলতে চেয়েছি তাহলো আপদকালীন জরুরি ব্যবস্থা। অর্থাৎ ডেঙ্গু একটা বড় রকমের সমস্যা তৈরি হয়েছে যেটা মোকাবিলায় আমি আপদকালীন জরুরি ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলে জরুরি অবস্থার কথাটা বলেছিলাম। আসলে এটার মিনিংটা হচ্ছে, বড় আপদ বলে আপদকালীন জরুরি ব্যবস্থা নেয়ার জন্য আমি কথাটা বলেছিলাম।
তিনি বলেন, ডেঙ্গু সম্পর্কে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর বিদেশ যাওয়া এবং সিটি করপোরেশনের মেয়রদের বক্তব্যসমূহ মিলিয়ে এটা একটা লেজে গোবরে তৈরি করে ফেলেছে সরকার। তারা এই সমস্যা সমাধান করতে পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে। এটা এখন এতো বড় আকার ধারণ করেছে যে, এটা এখন ৬৪ জেলায় চলে গেছে। এটা নিয়ন্ত্রণ করার জন্য যে ব্যবস্থা দরকার ছিলো সে ব্যবস্থা সরকার নিতে পারেনি। অর্থা মশা মারার জন্য যে ঔষধ যেটা তারা আনতে পারেনি এবং এতো অল্প সময়ের মধ্যে আমদানি করার সম্ভব হবে বলে মনে হয় না।
বন্যা পরবর্তী দুর্গতদের মধ্যে কেন্দ্রীয় ত্রাণ কমিটির নেতৃত্বে ড্যাব দুর্গত এলাকায় ঔষধ-পত্র বিতরণ ও চিকিৎসা সেবা দেবে বলে জানান তিনি।
ফখরুল জানান, একই সাথে কৃষকদের কৃষি পুনর্বাসনের জন্য দলের ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টুর নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটিতে কৃষক দল ও এগ্রিকালচারিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের নেতৃবৃন্দ থাকবেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা দেখেছি যে, নির্বাচন কমিশনের স্মার্ট কার্ডের নির্মাতা প্রতিষ্ঠান টাইগার আইটি। এটাকে বিশ্বব্যাংক কালো তালিকাভুক্ত করেছে দুর্নীতির কারণে। এই বিষয়টা জাতির কাছে একেবারে অস্পষ্ট। এখন পর্যন্ত স্পষ্ট কোনো কিছু জাতি জানে না। আমরা নির্বাচন কমিশন ও সরকারের কাছ থেকে একটা পরিপূর্ণ ব্যাখ্যা দাবি করছি।
বৈঠকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু উপস্থিত ছিলেন।