দেশের দুই বৃহৎ মোবাইল অপারেটর গ্রামীণফোন ও রবিকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিতে যাচ্ছে টেলিকম নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি। নিরীক্ষা দাবি পরিশোধ না করে লাইসেন্সের শর্ত ভাঙায় কেন তাদের লাইসেন্স বাতিল করা হবে না, ৩০ দিনের মধ্যে সেই জবাব দিতে হবে।
চলতি বছর গ্রামীণফোনের কাছ থেকে নিরীক্ষা দাবি হিসেবে ১২ হাজার ৫৭৯ কোটি ৯৫ লাখ এবং রবির কাছ থেকে ৮৬৭ কোটি টাকা দাবি করছে বিটিআরসি।
রোববার ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ে এ সংক্রান্ত সুপারিশ পাঠিয়েছে বিটিআরসি এবং কারণ দর্শানোর নোটিশ দিতে সরকারের অনুমোদন চাওয়া হয়েছে।
টেলিকম আইন অনুসারে, কোনো লাইসেন্স বাতিল কিংবা বাতিলের প্রক্রিয়া শুরু করতে আগে সরকারের কাছে থেকে সায় পেতে হবে বিটিআরসি'র।
ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, তারা বিটিআরসি'র সুপারিশ পেয়েছেন এবং এ বিষয়ে কাজ শুরু করে দিয়েছেন।
তিনি বলেন, এ সংক্রান্ত আইন ও বিধান পর্যালোচনা করে দেখব আমরা। এরপর আমাদের সিদ্ধান্ত নিয়ে এগোব। এটা খুবই কঠিন একটা সিদ্ধান্ত হবে। কাজেই তাড়াহুড়া করে কিছু করা হবে না।
‘নিয়ন্ত্রক সংস্থা হিসেবে এই সুপারিশ পাঠানোর অধিকার বিটিআরসির রয়েছে। তারা সেটা করেছে। এখন আমরা এ সম্পর্কিত সব ইস্যু বিবেচনা করে দেখব। পরে আমরা সিদ্ধান্ত নেব।’
গত ২৫ জুলাইয়ে কমিশনের বৈঠকে টেলিকম নিয়ন্ত্রক সংস্থা সরকারের কাছে অনুমোদন চাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। এতে টেলিকম আইনের ৪৬ অনুচ্ছেদের কথা উল্লেখ করা হয়।
আইনটির এ অনুচ্ছেদ অনুসারে, সন্তোষজনক জবাব না পেলে টেলিকম নিয়ন্ত্রক সংস্থা লাইসেন্স বাতিল কিংবা একজন প্রশাসক নিয়োগ দিতে পারবে।
বিটিআরসির এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, সরকারের কাছ থেকে অনুমোদন পেলে দুটি অপারেটরকেই তারা চিঠি ইস্যু করবে।
এই দুই মোবাইল অপারেটরের ১২ কোটির বেশি সক্রিয় মোবাইল সংযোগ রয়েছে।
মোবাইল টেলিকম অপারেটরস অব বাংলাদেশের (অ্যামটব) সাবেক সেক্রেটারি জেনারেল টিআইএম নুরুল কবির বলেন, আমরা একটি শান্তিপূর্ণ সমাধান দেখতে চাই। আর এতে সরকার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবে। নিয়ন্ত্রক সংস্থা ও অপারেটরের মধ্যে একটা মতানৈতিক দেখা যাচ্ছে।
অপারেটররা বলছে, পক্রিয়া অনুসরণ করে নিষ্পত্তির দিকে যেতে তারা সরকারকে বোঝাতে চেষ্টা করবে।
মোবাইল অপারেটরের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, এ বিষয়ে সমাধান পেতে তারা আন্তর্জাতিক আদালতে যাওয়ার কথাও ভাবতে পারে। তবে তা দেশে ও এই শিল্পের জন্য বিপর্যয়কর হবে।
তিনি বলেন, টেলিকম নিয়ন্ত্রক সংস্থা যথাযথ আইন মেনে চলছে না। এমনকি আন্তর্জাতিক পর্যায়ে দেশের অবস্থানের কথাও ভাবছে না তারা।