আকাশে একঝাঁক পাখির সঙ্গে ধাক্কা লাগার ফলে সৃষ্ট যান্ত্রিক গোলযোগের কারণে ২৩৩ আরোহী নিয়ে ভুট্টা ক্ষেতে জরুরি অবতরণ করেছে একটি রুশ বিমান। বৃহস্পতিবার রাশিয়ার মস্কোয় এ দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে কোনো প্রাণহানি না হলেও অন্তত ২৩ জন আহত হয়েছেন।
ইউরাল এয়ারলাইনসের ৩২১ এয়ারবাসটি ক্রাইমিয়ার সিমফেরোপলে যাচ্ছিল। বিমানটি ওড়ার অল্পক্ষণের মধ্যেই একঝাঁক চিলের সাথে ধাক্কা খায় এবং ফলে বিমানের ইঞ্জিন বিকল হয়ে যায়।
রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম এই অবতরণকে ‘রামেনস্কে অলৌকিক অবতরণ’ বলে বর্ণনা করেছে।
বিমান সংস্থাটি বলেছে, বিমানটির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে এবং বিমানটি আর উড়তে পারার অবস্থায় নেই। সরকারি তদন্ত প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে।
রুশ ঐ বিমানে ২৩৩ জন যাত্রী ও বিমানকর্মী ছিলেন। বিমান পাখিগুলোকে ধাক্কা মারার পর বিমানের ইঞ্জিন সেগুলোকে ভেতরে টেনে নেয়। পাইলট সঙ্গে সঙ্গে বিমানটি জরুরি অবতরণের সিদ্ধান্ত নেন।
অজ্ঞাতপরিচয় একজন যাত্রী রাষ্ট্রীয় টিভি চ্যানেলকে জানান, বিমানটি মাটি থেকে আকাশে ওঠার পর অসম্ভব রকম কাঁপতে শুরু করে। পাঁচ সেকেণ্ড পরেই বিমানের ডানদিকে বাতি ফ্লাশ করতে শুরু করে এবং পোড়া গন্ধ বরুতে থাকে। এরপর বিমানটি অবতরণ করে এবং প্রত্যেকে বিমান থেকে বেরিয়ে ছুটে পালায়।
বিমান পরিবহন সংস্থা রোজাভিয়াৎসিয়া বলছে, বিমানটি ঝুকোভস্কি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের রানওয়ে থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে একটা ভুট্টা ক্ষেতে নেমেছে। বিমানের ইঞ্জিন কাজ করছিল না এবং চাকাও গুটানো ছিল।
বিমানটি অবতরণের পর যাত্রী এবং বিমানকর্মীদের সেখান থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়। কিছু যাত্রীকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নেওয়া হয় এবং বাকিদের আবার বিমানবন্দরে ফেরত নেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়।
দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে বিমানটি জরুরি অবতরণের পর যাদের হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে তাদের মধ্যে পাঁচজন শিশু আছে। আহতদের মধ্যে কয়েকজনের আঘাত গুরুতর বলে মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।
ইউরাল এয়ারলাইন্সের পরিচালক কিরিল স্কুরাতফ্ তাস সংবাদ সংস্থাকে বলেছেন, যেসব যাত্রী তাদের গন্তব্যে যেতে চান, তাদের চিকিৎসকরা পরীক্ষা করার পর তাদের বিকল্প ফ্লাইটে যাত্রার ব্যবস্থা করা হবে।
রুশ সংবাদমাধ্যম এই ঘটনাকে ২০০৯ সালে ইউএস এয়ারওয়েসের একটি বিমান ওড়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই যেভাবে হাডসন নদীর ওপর জরুরি অবতরণ করেছিল তার সাথে তুলনা করেছে।
বিমান চলাচলের ক্ষেত্রে পাখির সঙ্গে বিমানের সংঘর্ষ একটা চলতি সমস্যা। আমেরিকায় বছরে কয়েক হাজার এধরনের ঘটনার খবর পাওয়া যায়। তবে পাখির সঙ্গে ধাক্কা লেগে দুর্ঘটনা বা বিমানের ক্ষতির ঘটনা প্রায় বিরল।