খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে বিএনপি আন্দোলন করতে পারছে না বলে মন্তব্য করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
শুক্রবার (১৬ আগস্ট) রাজধানীর নয়াপল্টন দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচে বিএনপি আয়োজিত এক মিলাদ ও দোয়া মাহফিলে তিনি এ মন্তব্য করেন।
‘বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ৭৫তম জন্মদিন উপলক্ষে তার আশু সুস্থতা ও দীর্ঘায়ু কামনায়’ এ মিলাদ ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আমাদের দুর্ভাগ্য আমরা এমন কিছু করতে পারছি না যে, আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে খালেদা জিয়াকে বের করে নিয়ে আসতে পারবো। আর আমরা জেনে গেছি, আইন-আদালতের ভূমিকা কি এবং তারা কি করছে, তারা কি করছে না। তাই আজকে আমাদের সুসংগঠিত হতে হবে এবং আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে বেগম জিয়াকে মুক্তি করতে হবে। এর কোন বিকল্প নেই। তাই আসুন, আজকের এই দিনে আমরা বেগম জিয়ার দীর্ঘায়ু কামনা করবো এবং তার মুক্তির জন্য নিজেদের সংগঠিত করে মুক্তির আন্দোলন করবো। এই শপথ আজকে আমাদের হোক।’
তিনি বলেন, ‘সরকার বেগম জিয়াকে ইচ্ছাকৃতভাবে কারাগারে আটক করে রেখেছে। কারণ আজকে যে অর্থনীতিকে পরনির্ভরশীল ও ফোকলা করে ফেলা হচ্ছে, সেটা তখন আর সম্ভব হতো না। আর এক সময় পাট শিল্পকে ধ্বংস করা হয়েছে, আজকে চামড়া শিল্পকে ধ্বংস করা হচ্ছে। সুতরাং বাংলাদেশকে যে পরনির্ভরশীল করার কাজগুলো সরকার এগিয়ে নিয়ে গেছে। এজন্য সরকার সবচেয়ে বড় চক্রান্ত করছে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘প্রায় ১৮ মাস আমাদের নেত্রী কারাগারে রয়েছেন। কারাগারে যাওয়ার আগে তিনি বিদেশে ছিলেন। তিনি নাও আসতে পারতেন। কারণ উনি জানতেন, তিনি ফিরে আসলেই এই মামলা চলবে এবং সরকার তাকে কারারুদ্ধ করবে। কিন্তু তিনি দেশে ফিরে এসেছেন, আদালতের সম্মুখে দাঁড়িয়েছেন।’
তিনি বলেন, ‘বেগম জিয়া পরিষ্কার ভাষায় বলেছেন, আমি গণতন্ত্রের জন্য কাজ করছি এবং গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানের প্রতি সম্মান দেখিয়ে আমি এখানে উপস্থিত হয়েছি। কিন্তু সেই গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে একে একে ধ্বংস করে ফেলা হয়েছে। আর বিচার বিভাগকে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ করা হয়েছে। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা একেবারেই নেই। আর এই অস্ত্র দিয়েই সরকার বেগম জিয়াকে কারাগারে আটক করে রেখেছে।’
বেগম জিয়ার রাজনৈতিক জীবনের উপর স্মৃতিচারণ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমার কাছে মনে হয় যে, বেগম জিয়া এশিয়া মহাদেশে সবচেয়ে ত্যাগ স্বীকারকারী একজন নেতা। তিনি দীর্ঘকাল গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম করেছেন। তার রাজনীতির জীবন শুরুটাই রাজপথে। তিনি স্বৈরাচার এরশাদ সরকারের বিরুদ্ধে গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠার জন্য বাংলাদেশে পথে-প্রান্তরে জনগণকে সংগঠিত করেছেন।’
পরে খালেদা জিয়ার দীর্ঘায়ু ও রোগ মুক্তি কামনায় দোয়া পরিচালনা করেন ওলামা দলের নেতা মাওলানা রফিকুল ইসলাম।
এসময় বিএনপি নেতা ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, বেগম সেলিমা রহমান, এজেডএম জাহিদ হোসেন, শামসুজ্জামান দুদু, শওকত মাহমুদ, নিতাই রায় চৌধুরী, জয়নুল আবেদিন ফারুক, রুহুল কবির রিজভী, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, খায়রুল কবির খোকন, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, হাবিব-উন-নবী-খান সোহেল, ফজলুল হক মিলন, এমরান সালেহ প্রিন্স, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানীসহ দলের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।