ভারত কখনো প্রথমে পরমাণু হামলা করবে না-এটাই নয়া দিল্লির নীতি। কিন্তু দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং জানালেন এমন নীতি থেকে সরে দাঁড়াবে তার দেশ। পাক-ভারত উত্তেজনার মধ্যেই এমন মন্তব্য করলেন তিনি। এর আগে বৃহস্পতিবার সীমান্তে পাক ভারত সংঘর্ষে ৫ ভারতীয় ও ৪ পাকিস্তানি সেনা নিহত হয়। এরপরই এই মন্তব্য করলেন রাজনাথ সিং। ফলে পরমাণু শক্তিধর দেশদুটির মধ্যে উত্তেজনার পারদ আরো বাড়বে বলে মন্তব্য বিশ্লেষকদের।
রাজনাথ বলেন, আজ পর্যন্ত আমাদের পরমাণু নীতি হচ্ছে প্রথমে হামলা নয়। তবে ভবিষ্যতে কি হবে বলা যাচ্ছে না। যার অর্থ ভারত কখনও আগে পারমাণবিক অস্ত্রের ব্যবহার করবে না। তবে পরিস্থিতি বুঝে আগে হামলা চালাতেও পারে।
শুক্রবার রাজস্থানের পোখরানে সেনা মহড়া অনুষ্ঠানের শেষ দিনে অংশ নেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী। তিনি আরও বলেন, ‘কাকতালীয়ভাবে আজ প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ীর প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী। আর পোখরানের সঙ্গে অটল বিহারী বাজপেয়ীর স্মৃতি জড়িয়ে আছে। ভারতকে পরমাণু শক্তিধর রাষ্ট্র হিসেবে তুলে ধরতে অটল বিহারী বাজপেয়ীর যে অবদান রয়েছে তার সাক্ষী এই পোখরান।’
গত ৫ আগস্ট মোদি সরকার অধিকৃত কাশ্মীরের ওপর থেকে বিশেষ মর্যাদা তুলে নেয়ার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে তুমুল উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। সেই উত্তেজনা সীমান্তেও ছড়েয় পড়ে। যার প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবারের বিকেলে প্রতিবেশী দেশ দুটির মধ্যে গুলি বিনিময়ের ঘটনা ঘটে। যদিও এ ঘটনায় বরাবরের মতোই পরস্পরকে দুষছে ভারত ও পাকিস্তান।
এদিকে কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদাসম্পন্ন ৩৭০ ধারাটি বাতিল করায় ক্ষোভে ফুঁসছে পাকিস্তান। ইসলামাবাদ সরকার ইতিমধ্যে নয়াদিল্লির বিরুদ্ধে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। সেগুলো হলো- ভারতের সঙ্গে সব দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য স্থগিত করা, দেশটির সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক সীমিত করা; পাকিস্তান-ভারতের দ্বিপক্ষীয় কর্মসূচিগুলো পর্যালোচনা করা; বিষয়টি জাতিসংঘে নিয়ে যাওয়া এবং আগামী ১৪ আগস্ট পাকিস্তানের স্বাধীনতা দিবসে কাশ্মীরিদের প্রতি সংহতি জানানো এবং ১৫ আগস্ট ভারতের স্বাধীনতা দিবসকে কালো দিবস হিসেবে পালন করা।
পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কুরেশির অনুরোধে একটি রুদ্ধদ্বার বৈঠকের ঘোষণা দিয়েছে জাতিসংঘ। কাশ্মীর ইস্যুতে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের বিশেষ বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে আজ শুক্রবার।