১৯৮৬ সালে আইসিসির পূর্ণ সদস্য পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম আন্তর্জাতিক একদিনের ম্যাচ খেলে বাংলাদেশ। এরপর ৩৩ বছরে খেলেছে আরও ৩৭২টি ম্যাচ। মোট ৩৭৩টি ম্যাচে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দিয়েছেন ১৪ জন অধিনায়ক। এ ১৪ জনের নেতৃত্বে ৩৭৩টি ম্যাচ খেলে বাংলাদেশ জয়ের স্বাদ পেয়েছে ১২৫টি ম্যাচে।
গাজী আশরাফ-: গাজী আশরাফের নেতৃত্বে বাংলাদেশ প্রথম ওয়ানডে ম্যাচ খেলে। এ অধিনায়ক ১৯৮৬ সাল থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত দলটির দায়িত্ব ছিলেন। এ চার বছরে তার নেতৃত্বে ৭টি ওয়ানডে খেলে ক্রিকেটের তৎকালীন নবাগত দল বাংলাদেশ। এ ৭ ম্যাচে বাংলাদেশ পাকিস্তানের বিপক্ষে ২টি, শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ২টি এবং ভারত, নিউজিল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে একটি করে ম্যাচ খেলেন। ৭টিতেই হারে বাংলাদেশ।
মিনহাজুল আবেদীন-: আশরাফের পর দলের নেতৃত্ব পান মিনহাজুল আবেদীন। কিন্তু তিনি মাত্র দুইটি ম্যাচেই দলকে নেতৃত্ব দিয়েছে। ভারত ও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দুইটি ম্যাচেই হারে বাংলাদেশ।
আকরাম খান-: ১৯৯৫ সালে বাংলাদেশের দায়িত্ব নেন আকরাম খান। তিনি ১৫টি ম্যাচে দলকে নেতৃত্ব দেয়। তার নেতৃত্বেই প্রথম জয়ে স্বাদ পায় বাংলাদেশ। ১৯৯৮ সালে কেনিয়াকে সে ম্যাচে ৬ উইকেটে হারায় বাংলাদেশ। এছাড়া বাকি ১৪টি ম্যাচে হারে আকরাম খানের দল।
আমিনুল ইসলাম-: আকরামের পর দলের দায়িত্ব নেন আমিনুল ইসলাম। তিনি দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন ১৬ ম্যাচে। এরমধ্যে জিতিয়েছেন ২ ম্যাচ আর বাকি ১৪ ম্যাচ হেরেছে বাংলাদেশ। বুলবুলের নেতৃত্বে প্রথমবার বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ করে বাংলাদেশ। আর প্রথমবারেই বাজিমাত করে টাইগাররা। স্কটল্যান্ড ও পাকিস্তানকে হারিয়ে প্রথম বিশ্বকাপকে স্মরণীয় করে রাখে আমিনুলের বাংলাদেশ।
নাঈমুর রহমান-: ২০০০ সালে দলের দায়িত্ব দেয়া হয় নাঈমুর রহমানকে। তিনি মাত্র ৪ ম্যাচে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। ৪টিতেই হেরেছে বাংলাদেশ।
খালেদ মাসুদ-: ২০০১ থেকে ২০০৬ সালের মধ্যে দুই মেয়াদে টাইগারদের নেতৃত্ব দিয়েছেন খালেদ মাসুদ। তার নেতৃত্বে ৩০টি ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ। জয় ৪টিতে, হেরেছে ২৪টিতে আর বাকি দুইটি ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়েছে। ২০০৩ সালের বিশ্বকাপেও বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক ছিলেন খালেদ মাসুদ।
খালেদ মাহমুদ-: খালেদ মাসুদের নেতৃত্বে বিশ্বকাপে বাংলাদেশ ব্যর্থ হলে তার পরিবর্তে অধিনায়কের দায়িত্ব দেয়া হয় খালেদ মাহমুদকে। তবে ১৫ ম্যাচে নেতৃত্ব দিয়ে তিনি বাংলাদেশকে একটি ম্যাচও জেতাতে পারেননি।
হাবিবুল বাশার-: বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের অন্যতম সেরা অধিনায়ক হাবিবুল বাশার। দীর্ঘ সময় তিনি দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। তার নেতৃত্বে ৬৯টি ম্যাচ খেলে বাংলাদেশ। এরমধ্যে জয় পায় ২৯টি ম্যাচে আর হেরে যায় ৪০টিতে। হাবিবুল বাশারের নেতৃত্বে ২০০৭ সালে বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ করে টাইগাররা। বিশ্বকাপের সে আসরে ভারত ও বারমুডাকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের দ্বিতীয় রাউন্ডে উঠার যোগ্যতা অর্জন করে বাংলাদেশ।
রাজিন সালেহ-: ২০০৪ সালে বাশারের অনুপস্থিতিতে বাংলাদেশকে ২ ম্যাচের জন্য নেতৃত্ব দিয়েছেন রাজিন সালেহ। ২ ম্যাচেই হেরেছে বাংলাদেশ
মোহাম্মদ আশরাফুল-: ২০০৭ সালের বিশ্বকাপের পর দলের দায়িত্ব পান আশরাফুল। তিনি ২০০৯ সাল পর্যন্ত অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেন। এ সময়ে ৩৮টি ম্যাচে তিনি বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। জয় পেয়েছেন ৮টি ম্যাচে, হেরেছেন বাকি ৩০টিতে।
সাকিব আল হাসান-: ২০০৯ সালের ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে মাশরাফিকে অধিনায়কের দায়িত্ব দেয়া হলেও ইনজুরির কারণে ওয়ানডে সিরিজ শুরু হওয়ার আগেই দল থেকে ছিটকে যান তিনি। তার পরিবর্তে দলের দায়িত্ব পান বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। তিনি বাংলাদেশকে ৫০য়ি ম্যাচে নেতৃত্ব দিয়েছেন। তার নেতৃত্বে ২৩টি ম্যাচ জিতেছে বাংলাদেশ, হেরেছে ২৬টি ম্যাচ ও বাকি একটি ম্যাচে বৃষ্টির কোনো ফল আসেনি। সাকিবের নেতৃত্বে ঘরের মাঠে ২০১১ সালে বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ করে বাংলাদেশ। সে আসরে ইংল্যান্ড, আয়ারল্যান্ড ও নেদারল্যান্ডকে হারালেও প্রথম রাউন্ড থেকেই বাদ পড়ে টাইগাররা।
মাশরাফি বিন মর্তুজা-: সাফল্যের বিচারে বাংলাদেশের ইতিহাসের সেরা অধিনায়ক মাশরাফি। তিনি বাংলাদেশকে সবচেয়ে বেশি ম্যাচে নেতৃত্ব দিয়েছেন। ৮৫টি ম্যাচে নেতৃত্ব দিয়ে ৪৭টিতেই দলকে জিতিয়েছেন এ অধিনায়ক। তার নেতৃত্বে বাংলাদেশ হেরেছে ৩৬টি ম্যাচে, আর ফল হয়নি ২টি ম্যাচের। চলতি বছরে মাশরাফির নেতৃত্বে প্রথমবার বহুজাতিক টুর্নামেন্ট জয়ের কৃতিত্ব অর্জন করে বাংলাদেশ। এছাড়া তিনি ২টি বিশ্বকাপে দলকে নেতৃত্ব দেয়ার কৃতিত্ব অর্জন করেন। ২০১৫ বিশ্বকাপে তার নেতৃত্বেই প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে উঠার যোগ্যতা অর্জন করে বাংলাদেশ।
মুশফিকুর রহীম-: মুশফিক বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দিয়েছেন ৩৭টি ম্যাচে। এরমধ্যে মাত্র ১১টিতে জয় পায় বাংলাদেশ, হারে ২৪টিতে এবং ফল আসেনি একটি ম্যাচে।
তামিম ইকবাল-: নিয়মিত অধিনায়ক মাশরাফির ইনজুরিতে বাংলাদেশের সর্বশেষ শ্রীলঙ্কা সফরে দলের নেতৃত্ব দেন ওপেনার তামিম ইকবাল। এ সফরে ৩টি ম্যাচ খেলে বাংলাদেশ। তিনটিতেই হরে হোয়াইটওয়াশ হয় তামিমের দল।