রাজশাহী জেলা বিএনপির ইউনিটগুলো কমিটি বিলুপ্ত করে নতুন আহবায়ক কমিটি গঠনের কাজ শুরু করেছে বিএনপি। এ উপলক্ষে মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) ১১টি ইউনিটের কমিটি বিলুপ্ত করে নতুন আহবায়ক কমিটির গঠনের দিন ও সময় ধার্য করে একটি কর্মসূচি ঘোষণা করে জেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দ। এ কর্মসূচি অনুযায়ী বুধবার (২৮ আগস্ট) চারঘাট উপজেলা ও পৌরসভার কমিটি ভেঙে গিয়ে নতুন আহবায়ক কমিটি গঠন করা হয়।
এছাড়াও ২৯ আগস্ট আড়ানী, ৩ সেপ্টেম্বর বাঘা উপজেলা ও পৌরসভা, ৪ আগস্ট তাহেরপুর পৌরসভা, ৫ আগস্ট কাটাখালী পৌরসভা, ৬ আগস্ট মোহনপুর উপজেলা ও কেশরহাট পৌরসভা এবং ৭ আগস্ট দুর্গাপুর উপজেলা ও পৌরসভার কমিটি বিলুপ্তি করে নতুন আহবায়ক কমিটি গঠনের দিন ও সময় ধার্য রয়েছে। তবে সুবিধাজনক স্থানে সভা আহবানের নির্দেশনা দিয়েছে জেলা কমিটি।
এদিকে, বুধবার চারঘাট উপজেলা ও চারঘাট পৌরসভা বিএনপির কমিটি বিলুপ্তি করে নতুন আহ্বায়ক কমিটি গঠনের জন্য সভা করা হয়েছে উপজেলার শলুয়া গ্রামে। যা উপজেলা সদর বা পৌরসভা থেকে আট কিলোমিটার দূরে। জেলা বিএনপির আহবায়ক আবু সাঈদ চাঁদের বাড়ির পাশের ঈগাহ মাঠে এ সভাপতিত্ব করেন প্রধান অতিথি ছিলেন অধ্যাপক ইউনুস আলী তালুকদার। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সাইদ চাঁদ। সভা পরিচালনা করেন চারঘাট পৌরসভার মেয়র জাকিরুল ইসলাম বিকুল।
সভায় অধ্যক্ষ আব্দুল কুদ্দুসকে আহ্বায়ক, অধ্যাপক হাফিজুর রহমানকে যুগ্ম আহ্বায়ক ও মোহাম্মদ মোজাম্মেল হককে সদস্যসচিব করে ২১ সদস্যের চারঘাট উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে। অন্যদিকে আব্দুল হককে আহ্বায়ক, আব্দুল বারী সেন্টুকে যুগ্ম আহ্বায়ক ও জাহাঙ্গীর আলম হাবলুকে সদস্যসচিব করে গঠন করা হয়েছে চারঘাট পৌর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি।
অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- রাজশাহী জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম মার্শাল, সদস্যসচিব বিশ্বনাথ সরকার, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য অধ্যাপক নজরুল ইসলাম মন্ডল, জাহান পান্না, আব্দুস সামাদ, অধ্যাপক জাহাঙ্গীর হোসেন, রোকনুজ্জামান আলম, সৈয়দ মোহাম্মদ মহসিন, ডিএম জিয়াউর রহমান জিয়া, রায়হানুল আলম রায়হান, তাজমুলতান টুটুল, অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম, গোলাম মোস্তাফা মামুন প্রমূখ।
এদিকে, জেলা বিএনপির আহবায়ক আবু সাঈদ চাঁনের নিজ এলাকায় কমিটি গঠনের স্থান নিয়ে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে চারঘাটের নেতাকর্মীদের মধ্যে। এ নিয়ে সমালচনা হয়েছে জেলা বিএনপির নেতাদের মধ্যেও।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে চারঘাট বিএনপির এক নেতা জানান, চারঘাট সদরে বিএনপির সভা করার মত অনেক স্থান রয়েছে। পুলিশের অনুমতি নিয়ে সভা করা যেত। কিন্তু কেন তিনি সদর ছেড়ে আট কিলোমিটার দূরে এ সভার আয়োজন করলেন তা বোধগোম্য নয়। জেলার আহবায়কের বাড়িতে সভার আয়োজন করায় অনেকেই যাননি বলেও জানান চারঘাট বিএনপির ওই নেতা।
এদিকে, জেলা বিএনপির এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, জেলার আহবায়ক আবু সাঈদ চাঁদ চারঘাট উপজেলার চেয়ারম্যান ও সভাপতি ছিলেন। কিন্তু তিনি চারঘাট সদরে কোনোদিন বিএনপির কর্মসূচি পালন করেননি। এছাড়াও জেলা বিএনপির কর্মসূচিতেও তিনি কোনোদিন উপস্থিত হননি। জেলার সহসভাপতি হয়ে মাঝে মধ্যে নগর বিএনপির কমিটিতে হাজিরা দিতে তাকে দেখা গেছে। যে তার নিজ এলাকার সদরে দলীয় কর্মসূচি পালন করে না তাকে দিয়ে জেলার বিএনপি কতটুকু সংগঠিত হবে তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।
এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে জেলা বিএনপির আহবায়ক আবু সাঈদ চাঁদ বলেন, চারঘাট বিএনপির সভা সদরে করার জন্য পুলিশের অনুমতি চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু অনুমতি পাইনি। তাই তার বাড়ির পাশে করা হয়েছে। উপজেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দ এ স্থান ঠিক করেছে বলে জানান তিনি।
এ নিয়ে জেলা পুলিশের মুখপাত্র ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) ইফতে খায়ের আলম বলেন, চারঘাটে বিএনপির সভা করার জন্য পুলিশের কাছে কোনও অনুমতি চাওয়া হয়নি। যেখানে সভা করেছে তাও পুলিশকে জানানো হয়নি। সদরে সভা করার অনুমতি চাইলে সেটি বিবেচনায় নেয়া হতো।