রোহিঙ্গাদের সমাবেশের পেছনে সরকারের ইন্ধন থাকতে পারে- এমন মন্তব্য করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর রায় বলেছেন, ‘এই সমস্যাকে স্থায়ী করে সরকার অন্য কিছু হাসিল করার চক্রান্ত করতে পারে।’
শনিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে জাতীয়তাবাদী প্রজন্ম ৭১ আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
‘বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ সকল রাজবন্দির মুক্তির দাবি’ শীর্ষক এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যের সমালোচনা করে গয়েশ্বর বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের ইন্ধন দিচ্ছে সরকার। যদি ইন্ধন না দেয় তাহলে লাখ লাখ রোহিঙ্গা সমবেত হয়ে সমাবেশ করে কীভাবে? বাংলাদেশে রাজনৈতিক দলগুলোকে যেখানে সভা-সমাবেশ করতে দেন না। সেখানে উন্মুক্ত ময়দানে রোহিঙ্গারা সমাবেশ করছে। সেখানে আমি তো মনে করি, সরকারের ইন্ধন রয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি করে রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধান করতে হবে। আর এই উদ্যোগটা সরকারকে নিতে হবে। বলা হচ্ছে- রোহিঙ্গারা যেতে চায় না। কেন যেতে চায় না। ওই যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলছেন, ইন্ধন। যদি তারা চলে যায়, তাহলে আপনি তাদের রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করতে পারবেন না। আর তাদের রেখে যদি জাতীয় সংকট সৃষ্টি করতে চান তাহলে সেটা অন্য কথা।’
কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর ঐক্যফ্রন্ট ত্যাগ প্রসঙ্গে গয়েশ্বর বলেন, ‘তার প্রতি সম্মান রেখেই আমি বলতে চাই- আপনি তারেক রহমানকে নেতা বানানোর জন্য ফ্রন্টে আসেন নাই। আর এটা আমরা জানি যে, আপনি আপনার রাজনৈতিক স্বার্থ বিবেচনায় ফ্রন্টে এসেছিলেন। আর নিজের স্বার্থ বিবেচিত হয়নি বলেই সেখান থেকে আপনি ফেরত যাবেন, এটা অস্বাভাবিক কিছু না। আর এটা বোঝার মতো সক্ষমতা আপাময় জনগোষ্ঠীর আছে।’
কাদের সিদ্দিকীকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ‘আপনাকে একটা কথা বলতে চাই- আপনি তারেক রহমানকে নেতা বানাবেন কেন। কারণ ফ্রন্ট প্রতিষ্ঠিত হওয়ার আগেই তারেক রহমান নেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন। আর তারেক রহমান নেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত বলেই তো, পত্র-পত্রিকায় তাকে নিয়ে আলোচনা হয়। তাকে নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে কথা হয়। সুতরাং নেতা বলেই বিদেশে বসে তিনি দলকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। কিন্তু আকার-ইঙ্গিতে কেউ তার নেতৃত্বের প্রতি অনিশ্চয়তা প্রকাশ করেননি। আর তারেক রহমানকে নেতা আপনাকে বানাতে হবে। কারণ নেতা তৈরি হয় জনগণের ইচ্ছার ওপর।
দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে গয়েশ্বর বলেন, ‘খালেদা জিয়ার মুক্তি আদালতে হবে। এই শব্দটা বিশ্বাস করতে আমার কষ্ট হয়। কারণ রাজনৈতিক নেতানেত্রীর বিচার কখনও আদালত করে না। রাজনৈতিক নেতানেত্রীর বিচার হয় জনগণের আদালতে। আর আমরা দৃঢ়তা ও বিশ্বাসের সঙ্গে এবং জনগণের চোখের দিকে তাকিয়ে বলতে পারি, জনগণের আদালতে খালেদা জিয়া এখনও দোষী সাব্যস্ত হয় নাই।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের মনোবল ও শক্তির ওপর কোনো আস্থার অভাব আছে। সেই কারণে বলছি, আমাদের আরও ভাবতে হবে। আর ঘরে-বাইরে এই চক্রান্ত কে করছে? এটা আজকে আমাদের বুঝতে হবে এবং ভবিষ্যতের জন্য সতর্ক থাকতে হবে। এ জন্য বিভ্রান্ত না হয়ে ঐক্যবদ্ধ থেকে আমাদের সুযোগ গ্রহণ করতে হবে।’
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি ঢালী আমিনুল ইসলাম রিপনের সভাপতিত্বে সভায় জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) প্রেসিডিয়াম সদস্য আহসান হাবিব লিংকন, বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ প্রমুখ বক্তব্যে রাখেন।