চাঁদের উল্টো পিঠে (যে দিকটি পৃথিবী থেকে দেখা যায় না) রহস্যজনক এক পদার্থের সন্ধান পেল চীনের চন্দ্রযান। জেল জাতীয় এই পদার্থটি ঠিক কী, তাই নিয়ে ইতিমধ্যেই শোরগোল বিশ্ব জুড়ে।
চাঁদের মাটিতে চিনের প্রথম রোবটিক মিশন (চেঞ্জ-৪ মিশন) শুরু হয় চলতি বছরের জানুয়ারি মাসের ৩ তারিখ। এর আগে কোনও দেশের চন্দ্রযানই চাঁদের এই অন্ধকারময় অংশে পা রাখেনি। চাঁদে একটি পূর্ণ দিন পৃথিবীর হিসেবে দুই সপ্তাহের সমান। এই হিসেবে মোট ৯টি চান্দ্র দিন চাঁদের মাটিতেই কাটিয়ে ফেলেছে এই রোবটিক মিশনের জোড়া যান ইউটু-২ রোভার ও চেঞ্জ-৪ ল্যান্ডার।
প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে এই মিশন সাময়িক ভাবে বন্ধ হওয়ার আগে চাঁদের মাটি পর্যবেক্ষণ করে এই চন্দ্রযান দু’টি চাঁদের পৃষ্ঠে ঘুরে টানা ছবি পাঠিয়ে গিয়েছে ৯ জুলাই পর্যন্ত। ১৬ দিন বিশ্রামের পরে ফের তা সক্রিয় হয়েছে ২৫ জুলাই। ৭ আগস্ট পর্যন্ত যা পরীক্ষা জারি রেখেছিল চাঁদের মাটিতে। এই সময়ের মধ্যে ৮৯০ ফুট (২৭১ মিটার) পাড়ি দিয়েছে চীনের এই চন্দ্রযানদ্বয়।
চাঁদের পৃষ্ঠে তীব্র উত্তাপ ও তেজস্ক্রিয় রশ্মি থেকে বাঁচতে দিনের একটি নির্দিষ্ট সময়ে এই চন্দ্রযান দু’টি নেয়। ২৮ জুলাই ইউটু-২’কে নতুন করে সক্রিয় করার সময়ে রোভারের প্রধান ক্যামেরায় ওঠা ছবিগুলোকে যাচাই করার সময়ে একটি গর্তে রঙিন এক ধরনের জেল জাতীয় পদার্থের উপস্থিতি দেখতে পান গবেষকরা।
এই সময়ে অভিযান বন্ধ রেখে শক্তিশালী ক্যামেরাসহ ইউটু-২ ওই গর্তে নেমে ওই চ্যাটচ্যাটে জেলির মতো পদার্থের ছবি তোলে। বিশেষজ্ঞদের প্রাথমিক অনুমান, এই জেলটি উল্কাপাতের ফলে চাঁদের পৃষ্ঠে জমা হওয়া এক ধরনের গলা কাচ।
যদিও ইউটু-২’র এই পর্যবেক্ষণে প্রথম কোনো অদ্ভুত পদার্থ চাঁদে পাওয়া গেল এমন নয়। এর আগেও অ্যাপোলো-১৭’র মহাকাশচারীরা এবং ভূবিজ্ঞানী হ্যারিসন স্মিট ১৯৭২ সালে চাঁদে কমলা রঙের মাটির সন্ধান পেয়েছিলেন। পরে তারা সিদ্ধান্তে আসেন, ৩৬৪ কোটি বছর আগের একটি অগ্ন্যুৎপাতের কারণে চাঁদের একটি অংশে এই ধরনের মাটি তৈরি হয়েছে।