পুরুষের তুলনায় নারীদের শরীর তুলনামূলক ঠান্ডা থাকে। তবে আপনার নারী সঙ্গীর শরীর যদি সব সময় ঠান্ডা অনুভব করেন তা হলে দ্রুত চিকিৎসককের পরামর্শ নিন। পুরুষের তুলনায় নারীদের শরীর ঠান্ডা থাকার বৈজ্ঞানিক কারণগুলো নিচে দেওয়া হলো-
কম মাংসপেশি: আমাদের চারপাশে ছেলেদের চেয়ে বেশি পেশিবহুল নারী রয়েছেন। কিন্তু নারীদের সাধারণত পুরুষদের তুলনায় শরীরের ফ্যাট বেশি থাকে এবং পেশি কম থাকে। যাদের শরীরে মাংসপেশি কম তাদের শরীর অনেকটাই বেশি ঠান্ডা থাকে। তাই নারীরা বেশি ঠান্ডা অনুভব করেন।
পুরুষদের তুলনায় নারীদের রক্ত কম: সাধারণত নারীদের শরীরে পুরুষদের তুলনায় রক্ত কম থাকে। এই সংক্রান্ত একটি গবেষণা দ্য ফ্যাসেব জার্নালে প্রকাশ করা হয়।
চিকিৎসকরা জানান, রক্ত শরীরের সঠিক তাপমাত্রা বজায় রাখার বিষয়টি নিশ্চিত করে। রক্তরস শরীরে তাপ শোষণ বা তাপ দিতে পারে। যেহেতু নারীদের শরীরে কম রক্ত থাকে, তাই তাদের দেহতে কম তাপ থাকে।
ইস্ট্রোজেন হরমোনের উপস্থিতি: ইস্ট্রোজেনের উপস্থিতির কারণে নারীদের শরীরে রক্ত পুরুষদের শরীরে মতো দ্রুত স্থানান্তর হয় না। ইস্ট্রোজেন রক্তকে কিছুটা ঘন করে তুলে। এদিকে স্বাস্থ্য বিশেজ্ঞদের মতে, নারীদের শরীর প্রজনন ব্যবস্থাকে উষ্ণ রাখার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। সে কারণে নারীদের জরায়ু উষ্ণ থাকে। অন্যদিকে হাত পা ঠান্ডা হয়ে যায়।
নারীদের বেস টেম্পারেচার বেশি: জ্যামা নেটওয়ার্কের একটি গবেষণা দেখা যায়, নারীদের বেস টেম্পারেচার বা ব্যালেন্স পয়েন্ট পুরুষদের তুলনায় বেশি থাকে। এর কারণে নারীদের শরীরের তাপমাত্রা বাইরের তাপমাত্রার প্রতি সংবেদনশীল হয়। মনে করেন, আপনি অনেকক্ষণ ধরে গরম তাপমাত্রার কাছে ছিলেন। হঠাৎ করেই ঠান্ডা পানিতে নেমে গেলেন। এ সময় আপনি কী অনুভব করবেন? গবেষণা বলে, আপনি পানির থেকেও বেশি ঠান্ড অনুভব করবেন। কারণ আগে আপনি অনেক বেশি উষ্ণ তাপমাত্রার মধ্যে ছিলেন। তাই নারীরা টেকনিক্যালি পুরুষদের তুলনায় অনেক উষ্ণ কিন্তু অনেক ঠান্ডা অনুভব করেন।
হরমোনাল জন্ম নিয়ন্ত্রণ: হনমোনাল জন্ম নিয়ন্ত্রণের অনেক পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে। এটি আপনার শরীরের তাপমাত্রা কমিয়ে দিতে পারে। এ সংক্রান্ত একটি গবেষণা পাবমেড নামক গবেষণা পত্রে প্রকাশ করা হয়। সেখানে বলা হয়, হরমোনজনিত জন্ম নিয়ন্ত্রণ নারী দেহের অভ্যন্তরের তাপমাত্রা বাড়িয়ে তুলতে পারে। কারণ এটি নারীদের শরীরে ইস্ট্রোজেন এবং প্রোজেস্টেরনের মাত্রা পরিবর্তন করে। এর ফলে বইরের তাপমাত্রার প্রতি নারী দেহকে আরো সংবেদনশীল করে তুলে।
পুরুষদের তুলনায় নারীদের মেটাবলিক হার কম: সাধারণত যে ব্যক্তির মেটাবলিক বা বিপাকীয় হার বেশি তাদের শরীরের তাপমাত্রা বেশি। সে ব্যক্তি পুরুষ হোক বা নারী হোক। এদিকে আবার নারীদের মেটাবলিক হার কম। তাই তাদের শরীরের তাপমাত্রাও কম।
বাসা বা অফিসে পুরুষদের প্রাধান্য: পুরুষ ও নারী দেহের বেস টেম্পারেচার মধ্যে পার্থক্য থাকা সত্ত্বেও সব জায়গায় পুরুষদের থাকার উপযোগী করে একটি পরিবেশ গড়ে তুলা হয়। হতে পারে সেটা বাসা বা অফিস। এদিকে নারীদের বেস টেম্পারেচার বা ব্যালেন্স পয়েন্ট পুরুষদের তুলনায় বেশি হওয়া নারীরা প্রায়ই ঠান্ডা অনুভব করেন।
এ ছাড়াও অনেক কারণে নারীরা পুরুষদের চেয়ে বেশি ঠান্ডা অনুভব করেত পারেন।