ছাত্রলীগের ২৯তম জাতীয় সম্মেলনের পর প্রতিশ্রুতির ফুলঝুরি নিয়ে ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতৃত্বে আসে রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও গোলাম রাব্বানী। তবে দায়িত্ব গ্রহণের ১৩ মাস অতিবাহিত হলেও দুটি বিশ্ববিদ্যালয় কমিটি ছাড়া অন্য কোন কমিটি গঠন করতে পারেন নি তারা। ফলে সংগঠনটির সাংগঠনিক শক্তি নিয়েও দলের অভ্যন্তরে প্রশ্ন উঠছে।
মে মাসের ১১ ও ১২ তারিখে ছাত্রলীগের ২৯তম জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। দ্বিতীয় অধিবেশনের পর কমিটি ঘোষণার নিয়ম থাকলেও শীর্ষ পদের নেতৃত্ব বাছাইয়ে সময় নেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সম্মেলনের প্রায় আড়াই মাস পর আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওপর অর্পিত ক্ষমতাবলে দুই বছরের জন্য মো. রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভনকে সভাপতি এবং গোলাম রাব্বানীকে সাধারণ সম্পাদক মনোনীত করে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা করা হয়।
শোভন-রাব্বানী দায়িত্ব গ্রহণের পর চলতি বছরের ১৪ জুলাই ছাত্রলীগের চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এবং কুষ্টিয়া বিশ্ববিদ্যালয় শাখার কমিটি ঘোষণা করেন। এছাড়া গত ১৩ জুলাই রাজধানীর সোহরাওয়াদী কলেজ, ২০ জুলাই জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ২৪ জুলাই ইডেন মহিলা কলেজ এবং ২৭ জুলাই কবি নজরুল কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। যদিও সম্মেলনের পর এখনো ইউনিটগুলোতে কমিটি গঠন করতে পারেনি তারা। এছাড়া তারা কয়েকটি উপজেলা কমিটির অনুমোদন দিয়েছে, এর আগে যেটার অনুমোদ দিত জেলা ছাত্রলীগ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ছাত্রলীগের এক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক বলেন, সম্প্রতি সম্মেলন হয়েছে এমন কয়েকটি ইউনিটের কমিটি নিয়ে আলোচনা চলছে। এ নিয়ে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক কয়েক দফা বৈঠকও করেছেন। খুব শিগগির কমিটি প্রেসে দেয়া হবে।
এদিকে দায়িত্ব গ্রহণের পরপরই ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতৃত্ব নেতা-কর্মীদের মাঝে নানা ধরণের প্রতিশ্রুতি দিতে থাকেন। তবে প্রতিশ্রুতির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন ঘটতে দেখা যায়নি। ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন প্রক্রিয়ায় দেখা দেয় নানা জটিলতা। কয়েকবার তারিখ পরিবর্তানের পর চলতি বছরের ১৩ মে ৩০১ সদস্যের কমিটির অনুমোদন দেয়া হয়। অনুমোদনের পরপরই কমিটি নিয়ে দেখা দেয় নানা বিতর্ক।
আওয়ামী ধারার রাজনীতির সাথে সাংঘর্ষিক আদর্শ ধারণকারী ছাত্রসংগঠন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র শিবির এবং জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল থেকে আসা অনুপ্রবেশকারীদের কমিটিতে পদায়ন করা হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। এছাড়া বয়স উত্তীর্ণ, মাদকসেবী, চাঁদাবাজ এবং মামলার আসামীদের কমিটিতে স্থান দেয়ার অভিযোগ রয়েছে। তবে অভিযোগের পর বিতর্কিতদের বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। তবে সেই সিদ্ধান্তের বাস্তবায়ন ঘটতে এখনো দেখা যায়নি। বরং পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে পদ পাওয়া যে ১৭ জনের বিরুদ্ধে প্রাথমিকভাবে বিভিন্ন অভিযোগের সত্যতা পেয়েছিল, সেই বিতর্কিত ব্যক্তিদের ছাত্রলীগ সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের গাড়িতে দেখা যায়।
ছাত্রলীগের অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন বিষয় প্রসঙ্গে সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীকে ফোন দেয়া হলেও তারা কেউ ফোন ধরেননি।