গড়ে মানুষ জীবনের ৩৩ শতাংশ সময় ঘুমিয়ে কাটায়। আর এ ঘুমের মধ্যে স্বপ্ন দেখাটাও স্বাভাবিক। একজন মানুষ অসংখ্য স্বপ্ন দেখার ক্ষমতা রাখে। কিন্তু মানুষ স্বপ্ন কেনো দেখে তা নিয়ে অনেকেরই প্রশ্ন জাগে। আর এ নিয়ে বিজ্ঞান কি বলে তাও জানতে চান অনেকে। তাদের জন্যই বাংলাদেশ জার্নালের আজকের এই প্রতিবেদন।
নিদ্রিত অবস্থায় জাগ্রত অবস্থার ধারাবাহিকতাকেও স্বপ্ন বলা যেতে পারে। বিজ্ঞানের মতে একজন মানুষ তার সারা জীবনে গড়ে প্রায় ১০০০০০ বারের মতো স্বপ্ন দেখতে পারেন। এক রাতে ২৪টিরও বেশি হতে পারে। স্বপ্নে ব্যক্তির কাছে নিজের নানারকম আবেগ, তথ্য ও তত্ত্বের প্রকাশ ঘটে। স্বপ্ন মূলত দর্শন-ইন্দ্রিয়ের কাজ। স্বপ্ন দেখা অনেকটা সিনেমা দেখার মতো। তবে স্বপ্নে অন্যান্য ইন্দ্রিয়েরও গৌণ ভূমিকা থাকে। জাগ্রত অবস্থায় প্রত্যক্ষের মাধ্যমে যেমন শরীরে প্রতিক্রিয়া দেখা দেয় তেমনি স্বপ্ন দেখাতেও কিছু না কিছু শারীরিক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়।
স্বপ্ন বা ড্রিম নিয়ে বৈজ্ঞানিক গবেষণার নাম হচ্ছে, ওনায়োরলোজি যেটাকে বাংলায় স্বপ্নবিদ্যা বলতে পারেন। কিন্তু বেশিরভাগ ইতিহাসে এরকম কোন বিদ্যা মজুদই নেই, কেননা স্বপ্ন এমন একটি জিনিষ যেটা মাপা যায় না, ধরে রাখা যায় না, আবার আপনি চাইলেও অন্য কারো স্বপ্ন দেখতে পারবেন না। এটা এমন এক ইউনিক ফিল, যেটা কেবল আপনি নিজে নিজের মাধ্যমে অনুভব করতে পারবেন, তবে একে ব্যাখ্যা করাও অনেক মুশকিল কাজ।
১৯ শতকের শেষের দিকে, মনোচিকিৎসক সিগমুন্ড ফ্রয়েড একটি তত্ত্ব তৈরি করেন যে, অচেতন ইচ্ছা পূরণের দ্বারা আমাদের স্বপ্নের বিষয়বস্তু তাড়িত হয়।
বিভিন্ন গবেষণায় এটা নিশ্চিত করা হয়েছে, যারা জন্মান্ধ তারা কোনো দৃশ্যমান স্বপ্ন দেখেন না। এমনকি যারা শৈশবেই অন্ধ হয়ে গেছেন, তারাও দৃশ্যমান তেমন কিছু স্বপ্নে দেখতে পান না। তবে যারা শৈশব-কৈশোর পেরিয়ে চোখে দেখার ক্ষমতা হারিয়েছেন, তারা দৃশ্যমান স্বপ্ন দেখেন।
তাছাড়া কথিত আছে, যে যেমন মানুষ সে তেমন স্বপ্ন দেখে। স্বপ্নের তাৎপর্য নির্ভর করে স্বপ্নদ্রষ্টার চিন্তা ও দৃষ্টিভঙ্গির ওপর।