সামান্য প্রতিরোধও গড়তে পারলো না বাংলাদেশ। টেস্টের নবীনতম দলের বিপক্ষে অসহায় আত্মসমর্পণ করতে হল সাকিব-মুশফিকদের। সবে মাত্র তৃতীয় টেস্ট খেলতে নেমেছিল আফগানরা। এর মধ্যেই নিজেদের ঝুলিতে দুই জয়। প্রথমটি আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে হলেও বাংলাদেশের বিপক্ষে এই জয় আফগানদের জন্য অনেক বড় প্রাপ্তি। কারণ আফগানিস্তান টেস্টে নবীন দল হলেও বাংলাদেশ টেস্টে অনেক পুরানো। প্রায় ১৯ বছর ধরে টেস্ট খেলা বাংলাদেশ দাঁড়াতেই পারেনি আফগান স্পিন বিষের সামনে। চট্টগ্রাম টেস্টে বাংলাদেশকে হারতে হয়েছে ২২৪ রানে। বাংলাদেশ গুটিয়ে যায় ১৭৩ রানেই।
প্রথম ইনিংসে আফগানদের ৩৪২ রানের বিপক্ষে ২০৫ করতেই অলআউট হয় বাংলাদেশ। পরে দ্বিতীয় ইনিংসে সবকটি উইকেট হারিয়ে ২৬০ রান তুলে বাংলাদেশকে ৩৯৮ রানের টার্গেট দেয় রশিদের দল। টেস্টের চতুর্থ ইনিংসে যেটি বাংলাদেশের জন্য অসম্ভব। কারণ এত রান তাড়া করে এর আগে জিতেনি বাংলাদেশ। চতুর্থ ইনিংসে কখনোই ২১৫ রানের বেশি তাড়া করে জেতেনি বাংলাদেশ। আর এ মাঠে ৩১৭ রানের বেশি তাড়া করে জেতেনি কোনো দল।
এত বড় টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে চতুর্থ দিনেই ৬ উইকেটে ১৩৬ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ দিনের খেলা শেষ করেছিল। গতকাল শেষ বিকেলে বৃষ্টি না হলে হয়তো ওইদিনই শেষ হয়ে যেত এই টেস্ট। বৃষ্টির কল্যাণে ম্যাচ গড়ালো পরের দিনে। হাতে ৪ উইকেট, লক্ষ্য বিশাল। এই অবস্থায় পঞ্চম দিনে বাংলাদেশের জন্য আর্শীবাদ হয়ে এসেছে বৃষ্টি। বৃষ্টির কারণে দিনের প্রথম সেশনে একটি বলও মাঠে গড়ায়নি। পরে বৃষ্টি থামলে দুপুর একটায় শুরু হয় খেলা। কিন্তু বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। ২ ওভার ১ বল খেলা হওয়ার পর আবার বৃষ্টি নামে। যার কারণে দ্বিতীয় সেশনও ভেসে যায়।
শেষ বিকালে মাত্র ১৮.৩ ওভারের জন্য খেলা শুরু হয়। এই অবস্থায় টেস্ট বাঁচাতে বাংলাদেশের হাতে ছিল ৪ উইকেট, করণীয় ছিল শুধু টিকে থাকা। কিন্তু বৃষ্টি শেষে প্রথম বলেই ব্যাখ্যাতীত এক শট খেলে সাজঘরে ফিরেছেন সাকিব। চায়নাম্যান বোলার জহির খানের বলটি ছিল শর্ট, অফ স্টাম্পের বেশ বাইরে। ছেড়ে দেওয়া যায় অনায়াসেই। সাকিব চাইলেন কাট করতে। ব্যাটের কানায় লেগে বল কিপারের গ্লাভসে। উল্লাসে মাতল আফগানরা। ৫৪ বলে ৪৪ করে দলকে মহাবিপদে ঠেলে দিলেন সাকিব। মেহেদি হাসান মিরাজকে বিদায় করেন রশিদ খান। নিজের চতুর্থ উইকেট তুলে নেন রশিদ, মিরাজ ফেরেন ২৮ বলে ১২ রান করে। শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হন সৌম্য সরকার (১৫)। এক রশিদ খানের ঘূর্ণিতে দুই ইনিংসে কাবু হয়েছে স্বাগতিকরা। দুই ইনিংস মিলিয়ে রশিদ খান একাই নিয়েছেন ১০টি উইকেট।