দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের কয়লা উধাও হয়ে যাওয়ায় তা তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি জানতে চান সোয়া লাখ টন কয়লা কোথায় গেল। একই সঙ্গে এই ঘটনা যে ২০০৫ সাল থেকে হয়ে আসছে, সেটা সকলকে জানাতে বলা হয়।
সোমবার বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার এসব কথা সাংবাদিকদের জানান।
এর আগে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে জাতীয় পাবলিক সার্ভিস দিবস উদযাপন ও জনপ্রশাসন পদক বিতরণ অনুষ্ঠান শেষে প্রধানমন্ত্রী সচিবালয়ে তার কার্যালয়ে যান। সেখানে জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী, সংশ্লিষ্ট সচিব, পিডিবি ও পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যানদের নিয়ে বৈঠকে করেন।
বৈঠকের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নে নসরুল হামিদ বলেন, উনি (প্রধানমন্ত্রী) পূর্ণ তদন্ত করতে বলেছেন।
প্রধানমন্ত্রী কি এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, অবশ্যই, উনি তো আমার মন্ত্রী, এই বিভাগের মন্ত্রী।
প্রতিমন্ত্রী জানান, ঘটনাটা হয়ে আসছে প্রায় ২০০৫ সাল থেকে। আমরা পুরোটা কাজে নেমেছি। কয়লা উধাওয়ের ঘটনায় মামলা করার জন্যও ইতোমধ্যে পেট্রোবাংলাকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
নসরুল হামিদ বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়টাই বলেছেন যে, সকলকে জানান দেয়া। সকলকে আগে থেকে প্রস্তুতি নেয়া, সকলে যেন ধৈর্য ধরে।
তিনি আরো বলেন, দুমাস আগে থেকেই বিদ্যুৎ বিভাগ থেকে বলা হচ্ছিল, তাদের কয়লার সঙ্কট চলছে। কিন্তু ওখানকার যে প্রধান প্রকৌশলী তিনি বলছিলেন, কোনো সঙ্কট নেই। তখন বিদ্যুৎ বিভাগ থেকে তদন্ত করা হলে তথ্যটা উদঘাটন হয়।
অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে ১ লাখ ১৬ হাজার টন কয়লা খোলা বাজারে বিক্রি করে আনুমানিক ২০০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠে বড় পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক হাবীব উদ্দিন আহমদ ও অন্যদের বিরুদ্ধে। সবশেষ কয়লা সরবরাহ না পাওয়ায় বড়পুকুরিয়া কয়লাভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন রোববার রাতে বন্ধ হয়ে যায়।
কয়লার এই অবস্থা জানাজানির পর খনির মহাব্যবস্থাপক (মাইন অপারেশন) নুরুজ্জামান চৌধুরী ও উপ-মহাব্যবস্থাপক (স্টোর) খালেদুল ইসলামকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
এরপর খনির শীর্ষ কর্মকর্তা ব্যবস্থাপনা পরিচালক হাবিব উদ্দিন আহমদকে অপসারণ করা হয়। আর দায়িত্ব পান পেট্রোবাংলার পরিচালক আইয়ুব খান।
এদিকে কয়লা নিয়ে দুর্নীতির খবর অনুসন্ধানের জন্য তিন সদস্যের একটি কমিটি করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।