রাজধানীর ঢাকার রানওয়ে স্পর্শ করল বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের চতুর্থ বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার ‘রাজহংস’।
শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) নির্ধারিত সময়ের ৪৯ মিনিট পর বিকেল ৪টা ৪৪ মিনিটে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে এটি। দেশে পৌঁছার পর রাজহংসকে ওয়াটার ক্যানন স্যালুটের মাধ্যমে স্বাগত জানানো হয়। এ সময় বিমানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বিমানের উপমহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) তাহেরা খন্দকার বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে বোয়িং কোম্পানি বিমানের কাছে ড্রিমলাইনারটি ডেলিভারি দিতে ৪৮ ঘণ্টা সময় চেয়েছে। এ কারণে উড়োজাহাজটি দুইদিন পর ঢাকায় এসেছে। বিমানের একটি প্রতিনিধি দল সিয়াটলে বোয়িং কোম্পানির এভারটে ডেলিভারি ও অপারেশনস সেন্টার থেকে রাজহংসকে নিয়ে ঢাকায় আসেন।
তাহেরা খন্দকার জানান, আজ বেলা ১১টায় উড়োজাহাজটি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্বোধন করার কথা ছিল। তবে রাজহংস দুইদিন পরে আসায় উদ্বোধনের নতুন সময়সূচি নির্ধারণ করা হবে।
২০০৮ সালে মার্কিন উড়োজাহাজ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বোয়িং কোম্পানির সঙ্গে ১০টি নতুন উড়োজাহাজ কেনার জন্য চুক্তি করে বিমান। এর মধ্যে চারটি বোয়িং ৭৭৭-৩০০ ইআর, দুটি বোয়িং ৭৩৭-৮০০ ও তিনটি বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার উড়োজাহাজ বিমানবহরে যোগ হয়েছে। সবশেষ উড়োজাহাজ ‘রাজহংস’ আসার মধ্য দিয়ে সম্পাদিত চুক্তির ১০টি উড়োজাহাজের সবই বুঝে পাবে বিমান।
বিমানের ১০টি বোয়িংয়ের মধ্যে আকাশবীণা, হংসবলাকা, গাঙচিল ও রাজহংস নামে চারটি ড্রিমলাইনারের নাম পছন্দ ও বাছাই করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর আগে পালকি, অরুণ আলো, আকাশ প্রদীপ, রাঙা প্রভাত নামে চারটি বোয়িং ৭৭৭-৩০০ ইআর এবং মেঘদূত ও ময়ূরপঙ্খী নামে দুটি বোয়িং ৭৩৭-৮০০ নামও দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
একটানা ১৬ ঘণ্টা উড়তে পারে ড্রিমলাইনার। এটি চালাতে অন্যান্য বিমানের তুলনায় ২০ শতাংশ জ্বালানি কম লাগে। অন্য তিনটি ড্রিমলাইনারের মতো ‘রাজহংস’এর আসনসংখ্যা ২৭১টি। বিজনেস ক্লাস ২৪টি আর ২৪৭টি ইকোনমি ক্লাস। বিজনেস ক্লাসে ২৪টি আসন ১৮০ ডিগ্রি পর্যন্ত রিক্লাইন্ড সুবিধা এবং সম্পূর্ণ ফ্ল্যাটবেড হওয়ায় যাত্রীরা আরামদায়কভাবে স্বাচ্ছন্দ্যর সঙ্গে ভ্রমণ করতে পারবেন। বিমানটিতে যাত্রীরা অন্যান্য আধুনিক সুবিধা, ইন্টারনেট ও ফোন কল করার সুবিধাও পাবেন।
রাজহংস যুক্ত হওয়ার মধ্য দিয়ে বিমান বহরে উড়োজাহাজের সংখ্যা দাঁড়াবে ১৬টি। সম্প্রসারিত বহর দিয়ে বিমান তার চলমান রুটসমূহে ফ্লাইটের সংখ্যা বৃদ্ধি করছে। সেই সঙ্গে নতুন গন্তব্য সংযোজন প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে। চলতি বছরের ১৩ মে ঢাকা-দিল্লি রুট চালু হয়েছে। ২৮ অক্টোবর মদিনা এবং নভেম্বর মাসে গুয়াংজু নতুন রুট চালু হবে। এ ছাড়া ভবিষ্যতে ম্যানচেস্টার, কলম্বো, মালে, টোকিও এবং নিউইয়র্ক ফ্লাইট চালু করবে বিমান।