একাত্তরের পরে কোন বাংলাদেশি মানুষ ভারতে যায়নি বলে আবারও দাবি করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে যুবদল আয়োজিত এক মানববন্ধন কর্মসূচিতে তিনি এ দাবি করেন।
'বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ও প্রতিহিংসামূলক মামলা প্রত্যাহারের দাবি উপলক্ষে' এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
আসামে নাগরিকপঞ্জি পাস করার প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আসামে যা হোক তাতে আমাদের কোন বাধা ও মাথা ব্যথা নেই। কিন্তু যখন তাদের মন্ত্রীরা বলেন, এরা বাংলাদেশি। এদেরকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হবে। তখন নিশ্চয়ই এটা আমাদের সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়। আমরা পরিষ্কার করে বলেছি, ১৯৭১ সালের পরে আমাদের কোন মানুষ ভারতে যায়নি। কেনো যাবে? আমরা অর্থনৈতিক দিক থেকে ওদের চেয়ে অনেক ভালো আছি। আমাদের লোক ভারতে যাওয়ায় প্রশ্নই উঠতে পারে না। কিন্তু কথাগুলো যখন বলে তখন তো আমাদের চিন্তিত হতে হয়।’
তিনি বলেন, ‘আমরা কারো অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলাতে চাই না। কিন্তু আমরা উদ্বিগ্ন। কারণ এ বিষয়ে বাংলাদেশের সরকার এখন পর্যন্ত কোন কথা বলছে না। তবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, এটা ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়। কিন্তু ভারতের নেতারা যে বলছেন, বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হবে। সে সম্পর্কে একটা ব্যাখা তো দিতে হবে। কিন্তু এখন পর্যন্ত তারা দিচ্ছে না।’
সরকারকে উদ্দেশ্য করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে আমরা আমাদের দাবিগুলো বলছি। অবিলম্বে এই সংসদ বাতিল করুন, নিরপেক্ষ সরকারের অধিনে নির্বাচনের আয়োজন করুন এবং নির্বাচন কমিশনকে সরিয়ে নিরপেক্ষ ব্যক্তিকে নির্বাচন পরিচালনায় দায়িত্ব দিন। অন্যথায় এদেশের মানুষদের কাছে জবাবদিহি করতে হবে।’
দেশের মানুষ সংগঠিত হয়ে বেগম জিয়াকে কারাগার থেকে বের করে নিয়ে আসবে বলে ক্ষমতাসীনদের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন তিনি।
দেশের আজ চতুরদিকে অশান্তি, অনিশ্চিয়তা, অস্থিরতা, ভয় ও ত্রাস কাজ করছে বলেও মন্তব্য করেন ফখরুল।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘পত্রিকায় এসেছে, ঢাকায় ৬০টি ক্যাসিনো। আর এগুলো চালাচ্ছে, আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের নেতারা। আজকে নিজেরা ধরা খেয়ে অন্যদের দোষ ধরতে চায়। কারণ আজকে ভয় খেয়ে গেছে। আর এসবে সরকার ও আওয়ামী লীগ মদদ দিচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘একটা কথা আছে, ধর্মের কল বাতাসে নড়ে। আজকে আওয়ামী লীগের যে দুঃশাসন, দুর্নীতি ও নির্যাতন করছে- এটা এখন আর অন্য কাউকে বলতে হচ্ছে না। নিজেরাই নিজেরাই বাতাসে কল নড়তে শুরু করে দিয়েছে। আর গত কয়েক দিনে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের লোকেই প্রমাণ করছেন যে, বাংলাদেশের সম্পদ তারা লুট করে নিয়ে যাচ্ছে।’
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি সাইফুল ইসলাম নীরবের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাহউদ্দিন টুকুর সঞ্চালনায় বিএনপির সহযোগি বিষয়ক সম্পাদক মীর নেওয়াজ আলী নেওয়াজ, যুবদলের সিনিয়র সহসভাপতি মোস্তাজুল করিম বাদরু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নূরুল ইসলাম নয়ন, সাংগঠনিক সম্পাদক মামুন হাসান, যুবদল ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি এসএম জাহাঙ্গীর হোসেন, সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম মিল্টন, যুবদল দক্ষিণের সভাপতি রফিকুল আলম মঞ্জু, সাধারণ সস্পাদক গোলাম মাওলা শাহীন প্রমুখ বক্তব্যে রাখেন।