সকালে খেয়ে যেতেন স্কুলে। বিকেল পর্যন্ত থাকতেন অভুক্ত। খিদে পেটে শ্রেণিকক্ষে ব্যাহত হতো মনোযোগ। নিজ জীবনের এমন বাস্তব অভিজ্ঞতায় স্কুল পড়ুয়াদের জন্য পাঁচ টাকায় দুপুরের খাবার দিচ্ছেন রাজশাহীর আড়ানি বাজারের বিপ্লব সরকার। তার লক্ষ্য শিশুরা পাঠে হোক মনোযোগী। এ উদ্যোগে দরিদ্র কিংবা স্বচ্ছল সব শিক্ষার্থী দারুণ খুশি।
স্কুলে ব্যবস্থা নেই টিফিনের, পাওয়া যায় না পাউরুটি-কলাও। সকালের খাবারের শক্তিতেই চলে কচি কাঁচাদের দুপুর অবধি ক্লাসে মনযোগী হওয়ার লড়াই।
এমন বাস্তবতায় শিশুর স্বাস্থ্য, শিশুদের স্কুলমুখী ও পাঠে উৎসাহী করতে রাজশাহীর আড়ানীর অন্নপূর্ণা হোটেলে মাত্র পাঁচ টাকায় দেয়া হচ্ছে দুপুরের খাবার। মেনুতে থাকে ভাত, ডাল, সবজি, মাছ-ডিম। মেলে নানা রকম ভর্তাও। এমন সুযোগ পেয়ে হোটেলে দল বেঁধে যায় শিক্ষার্থীরা।
স্কুল শিক্ষার্থীরা বলছে, বাসা এখান থেকে অনেক দূরে। ডাল দেয় ভাত দেয় মাত্র পাঁচ টাকায়।
দুপুর গড়িয়েছে। ক্ষুধার ইঁদুরটা দৌড়াচ্ছে পেটে। মন বসছে না ক্লাসে। টিফিনের ঘণ্টা। তারপরও সুযোগ নেই খেয়ে আসার, কারণ বাড়ি দূরে। স্কুল জীবনের এ স্মৃতি এখনও পীড়া দেয় হোটেল মালিক বিপ্লব সরকারের। তাই সমস্যার সমাধানে তার এ উদ্যোগ।
রাজশাহীর অন্নপূর্ণা হোটেল মালিক বিপ্লব সরকার বলেন, আমি যখন স্কুলে যেতাম তখন অনেকবার দুপুরে পানি খেয়ে এসেছি। সেই জায়গা থেকে আমি এ কাজটি করছি।
এলাকার স্কুল শিক্ষকরা বলছেন, নামমাত্র মূল্যে খাবারের ব্যবস্থার ফলে শূন্যের কোঠায় নেমেছে স্কুল কামাই ও টিফিন পিরিয়ডে শিক্ষার্থী পালানোর হার।
স্কুল শিক্ষকরা বলছেন, এ উদ্যোগ অনেক ভালো। যদি চালু থাকে তাহলে অনেক ভালো। বাচ্চাদের বিরাট উপকার হচ্ছে। পূর্বের তুলনায় ছাত্রছাত্রীর স্কুল পালানো হ্রাস হয়েছে।
আড়ানী বাজার এলাকার মাধ্যমিক ও প্রাথমিক পর্যায়ে ৬টি স্কুলের অন্তত শতাধিক শিক্ষার্থী প্রতিদিনই খাচ্ছে হোটেলের এ খাবার।