শিশু মাত্রই তার যত্নের প্রয়োজন তা হোক শীত, গ্রীষ্ম কিংবা বর্ষাকাল। তবে অন্যান্য সময়ের তুলনায় গরমকাল সত্যিকার অর্থেই শিশুদের জন্য কষ্টকর হয়ে উঠতে পারে। এ সময়ে শিশুদের নানাবিধ অসুখ দেখা দিতে পারে। একটু বেশি যত্নই পারে তাকে সুস্থ রাখতে। জেনে নেয়া যাক গরমে শিশুর সুস্থতায় করণীয় সম্পর্কে—
শিশুর খাদ্য
গরমে শিশুর খাদ্য তালিকায় হাল্কা, পুষ্টিকর, টাটকা এবং সহজপাচ্য খাবার রাখুন। সেটা হতে পারে নরম খিচুড়ি বা সবজির স্যুপ। মাছ-মাংস দিন পরিমিত। শিশুর খাবার ঘরেই তৈরি করুন। বাইরের কেনা খাবার দেবেন না। এই সময়ে ডায়রিয়ার প্রকোপ বেশ দেখা যায়। ঘরে তৈরি টাটকা খাবার শিশুকে এই ধরনের ঝুঁকির হাত থেকে রক্ষা করবে। শিশুকে যথেষ্ট পরিমাণে পানি পান করান এবং পানি যেন অবশ্যই যথাযথভাবে বিশুদ্ধ হয়। খুব ঠাণ্ডা পানি বা গরম পানি দুটোই শিশুর জন্য ক্ষতিকর। সেক্ষেত্রে পরিমিত ঠাণ্ডা পানি পান করান। শিশুকে মৌসুমি ফল খাওয়ানো যাবে। বিভিন্ন ধরনের ফলের রসও দিতে পারেন।
শিশুর পোশাক এবং আবাসস্থল
আপনার শিশুর পোশাকের দিকে লক্ষ্য রাখুন। শিশুকে গ্রীষ্মের এই দিনগুলোতে অবশ্যই সুতির নরম এবং পাতলা পোশাক পরান। ডিসপোজেবল ন্যাপির পরিবর্তে সুতির পাতলা কাপড়ের ন্যাপি পরানো ভালো কেননা ডিসপোজেবল ন্যাপিগুলো ঘাম এবং তাপ শোষণ করতে পারে না যার ফলে ঘামাচি, র্যাশ প্রভৃতি সমস্যা দেখা দিতে পারে। তীব্র রোদের সময়টাতে শিশুকে বাইরে বের না করাটাই উত্তম তারপরও যদি বাইরে বের হতেই হয় তবে পাতলা কিন্তু ফুল হাতার কাপড় পরান যাতে রোদের ক্ষতিকর অতিবেগুনী রশ্মি আপনার শিশুর ত্বকের ক্ষতি করতে না পারে।
শিশুর প্রসাধনী
শিশুর প্রসাধনী ব্যবহারে সচেতন থাকুন। গোসলের পর পর ভেজা শরীরে পাউডার দেবেন না, শরীর শুকিয়ে আসলে পরিমিত পরিমাণে পাউডার দিতে পারেন। অতিরিক্ত পাউডার ব্যবহার করবেন না। ঘামাচির জন্য কখনই ঘামাচি নিরোধক পাউডার ব্যবহার করবেন না কারণ এই ধরনের প্রসাধনী শিশুর কোমল ত্বকের জন্য ভালো নয়। তেল, লোশন ইত্যাদির ব্যবহার বন্ধ রাখুন গরমের দিনগুলোতে। মনে রাখবেন শিশুদের প্রসাধনীর ক্ষেত্রে অবশ্যই ভালো মানের বেবি প্রোডাক্ট ব্যবহার করা উচিত। এছাড়া বাহিরে যাওয়ার আগে সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন তবে তা অবশ্যই চিকিত্সকের পরামর্শ ছাড়া নয়।
শিশুর স্বাস্থ্য
গরমের সময়টাতে মশা, মাছি, পিঁপড়া ইত্যাদি পোকামাকড়ের প্রকোপ দেখা যায়। এগুলো আপনার শিশুর অসুস্থতার কারণ হতে পারে। আপনার ঘরকে এসব পোকামাকড় মুক্ত রাখতে এরোসল বা অন্য কীটনাশক ব্যবহার করতে পারেন তবে অবশ্যই খেয়াল রাখবেন আপনার শিশু যেন কোনভাবেই এগুলোর নাগাল না পায়। এছাড়া ঘরকে পোকামাকড় মুক্ত রাখতে আপনার ঘর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখুন। ফুলের টবে বা অন্য কোথাও এমন কি বালতিতেও পানি জমতে দেবেন না। কারণ এগুলো ডেঙ্গু রোগবাহী মশার বংশবৃদ্ধিতে সহায়ক। ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি ব্যবহার করুন। শিশুর বিছানা পরিচ্ছন্ন রাখুন।