দেড়শ মডেল নিয়ে ব্যক্তিগত দ্বীপে সৌদি যুবরাজের বিলাসবহুল পার্টি
নিউইয়র্ক পোস্ট জানায়, ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের দুই সাংবাদিক ব্র্যাডলি হোপ ও জাস্টিন শেকের প্রকাশিত একটি বইতে যুবরাজের এ বিলাসী জীবনের কথা উঠে আসে।এ দুই সাংবাদিক দীর্ঘদিন ধরে সৌদি রাজপরিবারের তথ্য অনুসন্ধান করে আসছেন। মঙ্গলবার তাদের লেখা ‘ব্লাড অ্যান্ড অয়েল: মোহাম্মদ বিন সালমান’স রুথলেস কোয়েস্ট ফর গ্লোবাল পাওয়ার’ নামে বইটি প্রকাশিত হয়।
এতে বলা হয়, ২০১৫ সালের জুলাইয়ে ওই পার্টির জন্য ব্রাজিল, রাশিয়াসহ অন্যান্য দেশ থেকে আনা হয় প্রায় ১৫০ জন নারী মডেল। মধ্যপ্রাচ্যের ‘কয়েক ডজন’ পুরুষের সঙ্গে পার্টিতে যোগ দেন তারা। পার্টিতে বিনোদনের জন্য নিয়ে আসা হয় নামকরা সব তারকা শিল্পীকে। যাদের মধ্যে ছিলেন পিটবুল, গ্যাংনাম খ্যাত কোরীয় র্যাপার সাই ও ডিজে আফ্রোজ্যাক। এমনকি জেনিফার লোপেজ ও শাকিরার মতো বিশ্বতারকারাও সেখানে পারফর্ম করেন।
বলা হচ্ছে, ১৫০ মডেলদের নিয়ে নৌকাগুলো দ্বীপে পৌঁছানোর আগে আলাদা একটি মেডিকেল হাউসে তাদের যৌনরোগের পরীক্ষা করা হয়। এরপর তাদের বাগানবাড়িতে ঢুকতে দেয়া হয়। তখন এমবিএস ও তাদের বন্ধুদের বহনকারী সমুদ্র বিমানগুলো দ্বীপটিতে আসে। পার্টিতে ডিজে ও ড্যান্স আয়োজনেও অংশ নেন সৌদি যুবরাজ। মূলত সন্ধ্যার পর থেকে শুরু হতো অতিথিদের বিলাসী এ উৎসব, চলতো ভোর পর্যন্ত।
সেই পার্টির আয়োজক ছিলেন সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। তখন ২৯ বছর বয়সী সৌদি যুবরাজ দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন। বর্তমানে তিনি সৌদি আরবের উপ-প্রধানমন্ত্রী, একইসঙ্গে সিংহাসনের উত্তরাধিকারী। মধ্যপ্রাচ্যের সবচেয়ে শক্তিশালী ব্যক্তিদের একজন সৌদি যুবরাজ বিশ্বের শীর্ষ ধনীর তালিকাতেও রয়েছেন। তিনি এমবিএস নামে পরিচিত, যা তার পুরো নামের সংক্ষিপ্ত রূপ।
মালদ্বীপের ‘ভেলা’ নামের ওই ব্যক্তিগত দ্বীপে প্রায় এক মাস ধরে পার্টি চলে। বিশ্বের অন্যতম বিলাসবহুল ও ব্যয়বহুল এই দ্বীপটি এক মাসের জন্য ৫০ মিলিয়ন ডলার দিয়ে দ্বীপটি ভাড়া নিয়েছিলেন এমবিএস। পার্টিতে খরচ হয় প্রায় পাঁচ কোটি ডলার, বাংলাদেশি মুদ্রা যা প্রায় ৪২৪ কোটি টাকা। রিসোর্টের ৩০০ জনেরও বেশি কর্মী নগদ টিপসের বাইরে পাঁচ হাজার ডলার করেও বোনাস পেয়েছেন। সাধারণত মাসে এক হাজার ডলার থেকে ১ হাজার ২০০ ডলার আয় করে থাকেন তারা।
নিউইয়র্ক পোস্ট আরও জানায়, এ পার্টির বিষয়টিকে গোপন রাখতে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছিলেন এমবিএস ও তার কর্মীরা। এ জন্য এত বেশি অর্থ খরচ করেছেন তিনি। গোপনীয়তা নিশ্চিত করতে, দ্বীপে কাউকে স্মার্টফোন আনতেও দেওয়া হয়নি। যোগাযোগের জন্য কেবল নকিয়া ৩৩১০ মডেলের মোবাইল ব্যবহারের অনুমতি ছিল। এই নিয়ম ভঙ্গ করায় দুই কর্মচারীকে বরখাস্তও করা হয়।
II বিডি-প্রতিদিন/শফিক II