শিশুদের যৌন নিপীড়নের ঘটনা গোপন করার অভিযোগে দণ্ডাদেশ নিয়ে পদত্যাগ করলেন অস্ট্রেলিয়ার ক্যাথলিক আর্চবিশপ ফিলিপ উইলসন। ৪৮ বছর আগে এক যাজকের যৌন নিপীড়নের ঘটনা জেনেও প্রতিকারের ব্যবস্থা না নেওয়ায় তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করে মে মাসে এক বছরের দণ্ডাদেশ দেন অস্ট্রেলিয়ার আদালত।
বিবিসি অনলাইনের খবরে জানানো হয়, অ্যাডিলেডের আর্চবিশপ ফিলিপ উইলসন বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক ক্যাথলিক হিসেবে এ অপরাধে অভিযুক্ত ও দোষী সাব্যস্ত হন।
এ মাসের শুরুতে অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী ম্যালকম টার্নবুল পোপকে ডেকে ফিলিপ উইলসনকে বরখাস্ত করতে বলেন।
১৯৭০-এর দশকে নিউ সাউথ ওয়েলসের যাজক জেমস ফ্লেচার গির্জার ছেলেশিশুদের যৌন নির্যাতন করতেন বলে প্রমাণিত হয়েছে। ফিলিপ উইলসন তখন সেই যাজকের সহকারী ছিলেন। ফিলিপের বিরুদ্ধে অভিযোগ, এ ঘটনা তাঁকে জানানো হলেও তিনি তা প্রতিকারের কোনো চেষ্টা করেননি। বরং গির্জার ভাবমূর্তি রক্ষার জন্য ঘটনাটি আড়াল করেন।
নয়টি শিশুকে যৌন নির্যাতনের অপরাধে জেমস ফ্লেচার ২০০৪ সালে দোষী সাব্যস্ত হন। ২০০৬ সালে কারাগারেই তাঁর মৃত্যু হয়।
বিচারের সময় নির্যাতনের শিকার দুই বালকের সঙ্গে সংঘটিত যৌন নির্যাতনের ঘটনার কোনো স্মৃতি তাঁর মনে নেই বলে দাবি করেছিলেন ফিলিপ উইলসন। কিন্তু আদালত তা মানেননি।
অভিযোগ অস্বীকার করে নিউক্যাসলের স্থানীয় আদালতকে উইলসন বলেন, মেইটল্যান্ডের সহকারী যাজক থাকার সময় তিনি যাজক জেমস ফ্লেচারের যৌন নির্যাতনের বিষয়ে অবগত ছিলেন না।
পিটার ক্রেগ নামে নির্যাতনের শিকার একজন আদালতে বলেন, ১০ বছর বয়সে তাঁকে যৌন নিপীড়ন করা হয়। এর পাঁচ বছর পর তিনি উইলসনকে সমস্ত ঘটনা খুলে বলেন।
ম্যাজিস্ট্রেট রবার্ট স্টোন উইলসনের স্মৃতিভ্রষ্ট হওয়ার কথা আমলে নেননি।
আইনজীবীরা উইলসনকে আলঝেইমার রোগে আক্রান্ত দেখিয়ে চারবার মামলা থেকে তাঁকে অব্যাহতি দেওয়ার আবেদন করেন।
এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবেন বলে জানিয়েছিলেন উইলসন। তবে আদালত উইলসনকে ‘গৃহবন্দী’ করে রাখার নির্দেশ দেওয়ায় তাঁকে কারাদণ্ড ভোগ করতে নাও হতে পারে।