নৌ-পরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান বলেছেন, শিক্ষার্থীদের নয় দফা দাবিতে কোথাও আমার পদত্যাগের কথা নেই। এটা বিএনপির দাবি। তারা তো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনারও পদত্যাগ চায়, সরকারেরও পদত্যাগ চায় চায়। সুতরাং পদত্যাগের কোনো সম্ভাবনা নেই, এমনকি প্রশ্নই আসে না।
বৃহস্পতিবার (২ আগস্ট) বিকেল ৪টায় সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান।
তিনি বলেন, তারা আমায় ক্ষমা চাইতে বলেছিল। আমি তাদের কাছে ক্ষমা চেয়েছি। ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে তা দেখতে বলেছি।
মন্ত্রী বলেন, আজও আমি সারাদেশের শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে ফোনে কথা বলছি। তাদের ধৈর্য সহকারে শৃঙ্খলাবদ্ধ থাকার নির্দেশ দিয়েছি। যেহেতু কোমলমতি শিক্ষার্থীরা রাস্তায় রয়েছে, তাই নিরাপত্তাবোধ করলে সাবধানে গাড়ি চালাতে বলেছি।
এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, আমি কিন্তু কাউকে গাড়ি বন্ধ করতে বলিনি। আবার বের করতেও বলিনি। এটা মালিকদের ব্যাপার।
কাগজ পরীক্ষার কারণে রাস্তায় গাড়ি চলাচল কম কি-না, এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, এটা আপনারা ভালো বোঝেন, বাস্তবতা কী। আমি এখন এ নিয়ে কথা বলবো না।
গত রোববার (২৯ জুলাই) রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কে বেপরোয়া দুই বাসের পাল্লাপাল্লিতে চাপায় পড়ে শহীদ রমিজউদ্দীন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থী নিহত হন। আহত হন আরও কয়েকজন শিক্ষার্থী। পরে এ ঘটনার প্রতিক্রিয়া দেওয়ার সময় নৌ-পরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খানকে হাসতে দেখা যায় বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের।
দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যুর প্রতিবাদে এবং নিরাপদ সড়কের দাবিতে তখন থেকেই আন্দোলনে নামেন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা। তারা সরকারের কাছে ৯ দফা দাবি তুলে ধরেন। দাবিগুলো হলো- দুই শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় দায়ী বেপরোয়া চালককে ফাঁসি দিতে হবে; নৌ-পরিবহনমন্ত্রীকে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে হবে; শিক্ষার্থীদের চলাচলে এমইএস ফুটওভার ব্রিজ বা বিকল্প নিরাপদ ব্যবস্থা নিতে হবে; প্রত্যেক সড়কের দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকায় স্পিড ব্রেকার দিতে হবে; সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত শিক্ষার্থীদের দায়ভার সরকারকে নিতে হবে; শিক্ষার্থীরা বাস থামানোর সিগন্যাল দিলে- থামিয়ে তাদের নিতে হবে; শুধু ঢাকা নয়, সারাদেশের শিক্ষার্থীদের জন্য অর্ধেক ভাড়ার ব্যবস্থা করতে হবে; ফিটনেসবিহীন গাড়ি রাস্তায় চলাচল বন্ধ ও লাইসেন্স ছাড়া চালকরা গাড়ি চালাতে পারবেন না এবং বাসে অতিরিক্ত যাত্রী নেওয়া যাবে না।
আন্দোলনের প্রেক্ষিতে সরকারের তরফ থেকে সড়ক পরিবহন আইন পাসের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।