বাসচাপায় দুই শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় বিক্ষোভে সারা দেশ থেকে কার্যত বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে রাজধানী। শিক্ষার্থী আন্দোলনের জের ধরে পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের অঘোষিত ধর্মঘটে আজ রবিবারও রাজধানী রয়েছে বাসশূন্য। সকাল থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন রুট ছিল গণপরিবহন শূন্য। ফলে জরুরি কাজে বাসা থেকে বের হয়ে চরম দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে জনসাধারণকে। যানবাহনের অপেক্ষায় শহরের গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলোতে শত শত অফিসগামী মানুষকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে।
এদিকে বাধ্য হয়েই সবাই পায়ে হেটে, রিকশা, সিএনজি এবং মোটরসাইকেলে চলাচলের চেষ্টা করছেন। অন্যদিকে যানবাহন সংকটের এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে রিকশা, সিএনজি চালকরা ভাড়া দুই থেকে তিনগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। কেউ কেউ আবার ভ্যানে চড়েই গন্তব্যে ছুটছেন। কোথাও কোথাও ভাড়া নিয়ে রিকশা চালকদের সাথে তর্কে জড়াতে দেখা গেছে যাত্রীদের। এদিকে অনেকে অভিযোগ করেছেন, অ্যাপস ভিত্তিক মোটরসাইকেলগুলো অ্যাপস সেবা বন্ধ করে নিজেরাই চুক্তির ভিত্তিতে ভাড়া টানছেন।
বাড্ডা থেকে অফিসগামী রবিউল ইসলাম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ১০ মিনিটের রাস্তায় আজ আমার অফিসে পৌঁছাতে দেড় ঘণ্টা লেগেছে। ৫টাকার বাস ভাড়ার পথ আমাকে রিকশায় ৬০টাকা দিয়ে আসতে হয়েছে। তবু অনেক পথ হাটতে হয়েছে। এ দুর্ভোগ কবে শেষ হবে?
গত রবিবার থেকে কুর্মিটোলায় জাবালে নূর পরিবহনের চাপায় দুই শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনার প্রতিবাদে ও নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলন করছে রাজধানীসহ সারা দেশের বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা। এতে গত কয়েকদিন ধরে কার্যত অচল হয়ে পড়েছে রাজধানী ঢাকাসহ আশপাশের এলাকা। নিরাপত্তা ঝুঁকি ও ভাংচুরের কারণে বাস নামাচ্ছেন না পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা। গত বৃহস্পতিবার থেকে মহাসড়কে দূরপাল্লার বাস চলাচলও বন্ধ রয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ২৯ জুলাই বেলা সাড়ে ১২টার দিকে ঢাকার বিমানবন্দর সড়কের হোটেল র্যাডিসনের সামনে জাবালে নূর পরিবহনের দুটি বাসের প্রতিযোগিতায় নির্মমভাবে প্রাণ হারান শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থী দিয়া খানম মিম ও আব্দুল করিম সজীব। তাদের মৃত্যুর পর সড়কে নেমে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ শুরু হয়। এই আন্দোলনে একাত্মতা প্রকাশ করে সারা দেশের জেলায় জেলায় স্কুল শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ-সমাবেশ শুরু করে।